নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে ভোট দিচ্ছে ইরানের নাগরিকেরা। চার প্রার্থীর মধ্যে একজন কট্টরপন্থী প্রার্থী এগিয়ে রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। মতামত জরিপে দেখা যাচ্ছে বিচার বিভাগের প্রধান রক্ষণশীল শিয়া নেতা ইব্রাহিম রাইসি পরিষ্কারভাবে এগিয়ে রয়েছেন। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির মিত্র রাইসিকে অনেকেই তার উত্তরসূরি হিসেবে দেখে থাকেন। ভিন্নমতালম্বী এবং কয়েকজন সংস্কারবাদী নির্বাচন বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের দাবি, নির্বাচনে রাইসির কোনও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বীকে রাখা হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গতকাল শুক্রবার সকালে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি তেহরানে ভোট দিয়েছেন। সবাইকে ভোটদানে উৎসাহিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ভোট গণনা হয়…আসুন ভোট দিন এবং আপনার প্রেসিডেন্ট বেছে নিন। আপনার দেশের ভবিষ্যতের জন্য এটা জরুরি।’ ইরানের নাগরিকদের মধ্যে অর্থনৈতিক বিরুপ পরিস্থিতি নিয়ে বিরুপ মনোভাব রয়েছে। তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পর থেকেই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে শুরু করে। চুক্তি টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনের মধ্যেই ভিয়েনায় ইরান ও বিশ্বশক্তিগুলোর মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই আলোচনায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত রাখতে সম্মত হয়েছে ইরান। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনায় ইচ্ছুক মডারেট রুহানি এই নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেননি। কারণ তিনি টানা দুইবার চার বছর মেয়াদে প্রেসিডেন্টের পদ সামলেছেন।
এই বছরের নির্বাচনে ৪০ নারীসহ প্রায় ছয়শ’ প্রার্থী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিবন্ধন করেন। প্রার্থী যাচাইয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা গার্ডিয়ান কাউন্সিল গত মাসে কেবল সাত প্রার্থীকে অনুমোদন করেন। বাদ পড়া প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন রুহানির ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসহাক জাহাঙ্গিরি এবং পার্লামেন্টের সাবেক স্পিকার রক্ষণশীল আলি লারিজানি। গত বৃহস্পতিবার নাগাদ অনুমোদিত প্রার্থীদের মধ্যে তিন জন বাদ পড়েন। তারা হলেন সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সেক্রেটারি সায়িদ জলিলি, এমপি আলিরেজা জাকানি এবং সংস্কারপন্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহসিদ মেহরালিজাদেহ। কট্টরপন্থী জলিলি এবং জাকানি উভয়েই ইব্রাহিম রাইসিকে সমর্থন জানিয়েছেন। আর মেহরালিজাদেহ বলেছেন তিনি সংস্কারপন্থীদের ভোট ঐক্যবদ্ধ করতে চান। ইরানের আইন অনুযায়ী প্রথম রাউন্ডে কোনও প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে পুনর্র্নিবাচন অনুষ্ঠিত হবে।