জেলার সাপাহারে শিক্ষিত যুবক সোহেল রানা ১৪০ বিঘা আম বাগান গড়ে তুলে সফলতার শীর্ষে ত্রা অবস্থান নিশ্চিত করেছেন। প্রতি বছর এখন কমপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ আয়ের একটি সুব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছেনতিনি। তাঁর এ উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এখন তিনি অন্যদের নিকট দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
নওগাঁ জেলার সাপাহার উপজেলার সোহেল রানা। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে চাকুরীর পিছনে না ছুটে নিজে একজন উদ্যোক্ত্ াহয়ে ১৪০ বিঘা সম্পত্তির উপর একটি সুবিশাল আমা বাগান গড়ে তুলে অন্যকে কর্মের সংস্থান করে দিয়েছেন। উপজেলা সদরের পাশেই নিজের এবং কিছু লীজ নিয়ে মোট ১৪০ বিঘা জমির উপর গড়ে তুলেছেন একটি সুবিশাল আম বাগান। আম্্রপালি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, হিমসাগর, বারী-৪, গৌরমতি এবং ব্যানানা জাতের মোট আমগাছ রয়েছে ১৫ হাজারের বেশী। ২০১৫ সাল থেকে তিনি পর্যায়ক্রমে এ বাগান গড়ে তুলেছেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় ৬০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাগন সৃজনের পরের বছর থেকেই তাঁর বাগানে আম উত্তোলন শুরু ৃহয়েছে। বিগত তিন বছর উৎপাদন কম হলেও প্রতি বছর কিছু না কিছু আয় হয়েছে। ইতিমধ্যে বাগানের গাছগুলো বড় হয়েছে। এবার ব্যপক আম ধরেছে। চলতি মৌসুমে তিনি ৫০ লাখ টাকার আম বিক্রি করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। যতই দিন যাবে তার এ বাগান থেকে আয় তত বাড়বে। আগামীতে প্রতি বছর সব খরচ বাদ দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা আয় করবেন এ বাগান থেকে। আম ছাড়াও তাঁর এ সমন্বিত বাগানে রয়েছে ড্রাগন, মাল্টা, বড়ই। রয়েছে মাছ চাষের জন্য তিনটি পুকুর। এসব থেকেও হচ্ছে মোটা আয়। আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হচ্ছেনা।
সোহেল রানার এ অভাবনীয় সাফল্য এবং আর্থিক লাভ দেখে এলাকার তাঁর মত অনেক শিক্ষিত বেকার যুবকরা একই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অনেকে ইতিমধ্যে নিজেদের মত করে আমবাগান সৃজন করতে শুরু করেছেন। আর্থিকভাবে লাভবান হতেও শুরু করেছেন তারা।
তাঁর এ বাগানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে কমপক্ষে ১৫ জন শ্রমিকের। তারা নিয়মিত এ বাগান পরিচর্যার কাজ করে। শ্রমিকরা জানিয়েছেন এ বাগানে কাজ করে যে আয় হয় তা দিয়ে তাদের সারা বছরের সংসার খরচ ভালোভাবেই চলে যায়।
তাঁর এ সাফল্যগাঁথা আম বাগানের কাহিনী সম্পর্কে অবগত কৃষিবিভাগ। কৃষি বিভাগের পক্ষ েেথ সোহেল রানাকে সকল পরামর্শ এবং উৎসাহ প্রদান করে থাকেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালখ কৃষিবিদ মোঃ মাসুল ওয়াদুদ জানিয়েছেন, তিনি সোহেল রানার আমবাগান পরিদর্শন করেছেন। সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করে এরকম একটি আম বাগান গড়ে তোলা সত্যি প্রশংসনীয়। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
নওগাঁ’র জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন-অর-রশীদ এবং পুলিশ সুপার প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল মান্নান মিয়া সম্প্রতি সরেজমিনে সোহেল রানার আম বাগান পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা তাঁর এ সাফল্য দেখে বিমোহিত হয়ে পড়েন। তাঁরা সোহেল রানার মত শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকুরীর পেছরে না ছুটে নিজেদের উদ্যোক্তা হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য নওগাঁ’র পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর, পতœীতলা উপজেলায় পর্যায়ক্রমে প্রচুর আমবাগান গড়ে উঠছে। এসব উপজেলায় আমবাগান গড়ে তুলে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার যথেষ্ঠ সুযোগ এবং সম্ভাবনা রয়েছে। এ সুযোগ ও সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে এলাকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়েছে।