সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
পুঁইশাক চাষে সফল সুফিয়া, আগ্রহী হচ্ছে অন্য কৃষকরাও অতিরিক্ত টোল আদায় করলেই ইজারা বাতিল-ভোলায় উপদেষ্টা সাখাওয়াত কৃতি ফিরোজীকে বাঁচাতে সাভারে চ্যারিটি কনসার্ট আওয়ামী লীগের সাথে দ্বন্দ্ব নাই, যারা অন্যায় করেছে তাদের বিচার চাই-আব্দুল আউয়াল মিন্টু জলঢাকায় গণঅধিকার পরিষদের গণসমাবেশ সোনারগাঁওয়ে মাসব্যাপি লোককারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব শুরু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানে ৮৯তম জন্মদিন উপলক্ষে আগৈলঝাড়া বিএনপি’র উদ্যোগে আনন্দ র‌্যালি পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষতিগ্রস্তুদের অবস্থান কর্মসূচি জামালপুর পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির আয়োজনে দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ ভুট্টা চাষে দেশের শীর্ষে চুয়াডাঙ্গা: ৫৯,৬৫৬ হেক্টর জমিতে আবাদ

কর দিয়েই ভারতের রাষ্ট্রপতির বেতন ‘শেষ’?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৩০ জুন, ২০২১

দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ব্যক্তি তিনি। কিন্তু কর দিতেই প্রতি মাসে বেতনের ৫৫ শতাংশ বেরিয়ে যায়। উত্তরপ্রদেশ সফরে গিয়ে এমনই দাবি করলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তার দাবি, মাসে ৫ লাখ টাকা বেতন পান তিনি। এর মধ্যে করই দিতে হয় পৌনে ৩ লাখ টাকার। তাতে যা বাঁচে, অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা তো বটেই, শিক্ষকদের রোজগারও তার চেয়ে ঢের বেশি। দু’দিনের উত্তরপ্রদেশ সফর গিয়ে শনিবার কানপুরে ঝিনঝক রেল স্টেশনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন কোবিন্দ। সেখানে নাগরিকদের দায়িত্ববোধ সম্পর্কে বোঝাতে গিয়ে নিজের বেতনের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। কোবিন্দ বলেন, ‘আপনারা জানেন, রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ বেতনপ্রাপ্ত কর্মী। কিন্তু রাষ্ট্রপতি করও তো দেন! মাসে পৌনে তিন লাখ টাকা কর দিই আমি। অনেকে বলতেই পারেন যে, আপনার বেতনও তো পাঁচ লাখ টাকা! কিন্তু তার মধ্যে থেকে তো প্রতি মাসে পৌনে ৩ লাখ টাকা বেরিয়েই যায়! তাতে আর বাঁচে কত? কর দিয়ে যা বাঁচে, বহু কর্মকর্তাই তার চেয়ে অনেক বেশি রোজগার করেন। এই যে শিক্ষকরা বসে রয়েছেন, তারা তো সবচেয়ে বেশি পান।’ বিভিন্ন দাবি নিয়ে যারা আন্দোলন করেন, ট্রেনে-বাসে আগুন ধরান, তাতে তার মতো করদাতাদেরই আসলে লোকসান হয় বলেও মন্তব্য করেন কোবিন্দ। তার বক্তব্য ছিল, ‘অনেক রকম অধিকারের কথা বলি আমরা। কিন্তু নাগরিক হিসেবে কিছু দায়িত্বও বর্তায়, যা পুনর্বিবেচনা করে দেখা দরকার। নিজেদের দাবি-দাওয়া জানাতে গিয়ে আবেগের বশে ট্রেন অবরোধ করা হয়। আবেগ এত প্রবল হয় যে ট্রেনে আগুনও ধরিয়ে দেয়া হয় কখনো। এই ট্রেন কার? আন্দোলন চলাকালীন বাসে আগুন ধরানো হয়। আগুন ধরানো হয় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা স্কুটারে। এটা মোটেই ভালো প্রবৃত্তি নয়। ট্রেন দাঁড়িয়ে গেলে, ট্রেনে আগুন ধরিয়ে দিলে, ট্রেনের ক্ষতি করলে, কার লোকসান হবে? বলা হয়, সরকারের। সরকার কার? সরকার তাদেরই, যারা কর দেন। আমাদের করের টাকায় দেশের উন্নতি হয়। তাই লোকসান হলে আমাদেরই হবে।’
কিন্তু কোবিন্দের এই মন্তব্যেই বিতর্ক দানা বেঁধেছে। কারণ আইন অনুযায়ী, দেশের সর্বোচ্চ পদাধিকারী রাষ্ট্রপতির বেতন করের আওতায় পড়ে না। তবে রাষ্ট্রপতি বেতন পান কি না, নাকি ভাতা পান, তা নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ নিয়ে আয়কর আইনেও স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। তাই রাষ্ট্রপতি বেতনের উপর কর দেন কি না তা নিয়েও ধন্দ রয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতির কর বাঁচানোর অনেক রাস্তাও রয়েছে। ১৯৬১ সালের ভলান্টারি সারেন্ডার অব স্যালারিজ আইন অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি যদি তার বেতন কনসলিডেটেড ফান্ড অব ইন্ডিয়ায় জমা করেন, সে ক্ষেত্রে তা করের আওতায় পড়বে না। ভারতের রাষ্ট্রপতি যে যে সুবিধাগুলো পান তা হলো, আজীবন বিনামূল্যে স্বাস্থ্য এবং আবাসন পরিষেবা। পদে আসীন থাকাকালীনও রাইসিনা হিলের কোনো খরচই রাষ্ট্রপতিকে বহন করতে হয় না। কারণ কেন্দ্রীয় বাজেটেই রাষ্ট্রপতি ভবনের জন্য আলাদা করে ২০০ কোটির বেশি বরাদ্দ করা হয়, যার মধ্যে রাষ্ট্রপতি, তার কর্মী এবং রাষ্ট্রপতি ভবনে কর্মরত সকলের ভাতাবাবদ ৮০ কোটিও রাখা হয়। এর মধ্যে করোনা সঙ্কটে সরকারি খরচ বাঁচাতে ২০২০ সালে ১২ মাসের জন্য নিজের বেতনের ৩০ শতাংশ বেতন কম নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
তাই সরকারি কর্মচারী বিশেষ করে শিক্ষকদের রোজগার তার চেয়ে বেশি বলে দাবি করায় রাষ্ট্রপতির মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নেটমাধ্যমে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন বহু মানুষ। রাকেশ গুপ্ত নামের এক নেটাগরিক লেখেন, ‘১৯৫১ সালের রাষ্ট্রপতির বেতন এবং পেনশন আইন অনুযায়ী, ভারতের রাষ্ট্রপতির বেতন করের আওতায় পড়ে না। তাহলে কি রাষ্ট্রপতি ঘুরিয়ে বেতন বাড়ানোর আর্জি জানাচ্ছেন? হচ্ছেটা কী?’ দুশ্যন্ত মহন্ত নামের এক নেটাগরিক লেখেন, ‘নির্মলা সীতারামনের কাছে যদি জানতে চাই যে রাষ্ট্রপতি কোন করের আওতায় পড়েন, তার জন্য কি আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে রাখতে হবে?’ এ নিয়ে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। দলের জাতীয় কার্যনির্বাহক নীরজ ভাটিয়া লেখেন, ‘১৯৫১ সালের রাষ্ট্রপতির বেতন এবং পেনশন ধারায় যে তার বেতন করমুক্ত, তা দেশের প্রথম নাগরিক জানেনই না?’
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেন কোবিন্দ। সেই সময় রাষ্ট্রপতির বেতন মাসিক দেড় লাখ টাকা ছিল, যা তৎকালীন মন্ত্রিসভার কোনো সচিবের বেতনের চেয়ে ১ লাখ টাকা কম ছিল। সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার পর সে বছর অক্টোবরে রাষ্ট্রপতির বেতন বাড়িয়ে মাসিক ৫ লাখ টাকা করা হয়। শুধু তাই নয়, অবসর নেয়ার পর মাসে দেড় লাখ টাকা করে পেনশন বরাদ্দ হয়েছে রাষ্ট্রপতি জন্য। এমনকি আইনত যিনি রাষ্ট্রপতির জীবনসঙ্গী, তার জন্যও প্রতি মাসে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ ছাড়াও, সাজানো বাংলো, বিমানূল্যে দু’টি ল্যান্ডলাইন এবং একটি মোবাইল, একজন সচিবসহ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে পাঁচ কর্মী, কর্মীদের উপর খরচের জন্য বার্ষিক ৬০ হাজার টাকা, একজন সঙ্গীকে নিয়ে বিনামূল্যে বিমান ও ট্রেনে যাত্রার পরিষেবা পাবেন রাষ্ট্রপতি। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com