মশাল মেন্টাল হেলথের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মারিয়া মুমু তরুণদের সামাজিক ও মানবিক কর্ম প্রচেষ্ঠার জন্য প্রশংসনীয় সম্মাননা-ডায়েনা অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন। এক বন্ধুর আত্মহত্যার ঘটনায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। নিজেও ভুগছিলেন অবসাদ ও হতাশায়। পরে গড়ে তোলেন ‘মশাল মেন্টাল হেলথ’ নামে একটি মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। যা তরুণ-তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করে। মারিয়া শুধুমাত্র ডায়েনা অ্যাওয়ার্ড গ্রহণকারী বাংলাদেশের প্রথম মানসিক স্বাস্থ্য কর্মী নন, বরং তার সংগঠন মশাল মেন্টাল হেলথ বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ মানসিক স্বাস্থ্য সংগঠন। যা এর প্রতিষ্ঠার মাত্র এক বছরের মাথায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। মশাল আজ দেশের দ্রুততম ক্রমবর্ধনশীল একটি মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থা। মশালের অনুকরণীয় ক্লায়েন্ট রিলেশনস টিম এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শকদের একনিষ্ঠ প্রচেষ্টারই ফসল এটি। গেল বছর চলমান করোনা মহামারীর কারণে মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবার চাহিদা অন্যান্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি বেড়ে যাওয়ায়, প্রথম সংস্থা হিসেবে হটলাইনের মাধ্যমে প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্য পরিসেবা প্রদান শুরু করে মশাল। সম্প্রতি তারা সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করছে। পাশাপাশি অনাথ শিশুদের বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। ‘ইয়ুথ ফর দা ওয়ার্ল্ড’ (যেখানে অংশ নেয় সাতটি দেশ) কিংবা ‘লেটস টক মেন্টাল হেলথ’-এর মতো কর্মসূচী প্রথমবারের মতো আয়োজন করে মানসিক স্বাস্থ্য খাতে দেশের ইতিহাসে নজির স্থাপন করেছে সংস্থাটি। মুমুর প্রতিষ্ঠানটির অগ্রযাত্রা শুরু হয় ‘মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ’-এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তিনি মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন অসংখ্য মানুষের কাছে। মুমু মারিয়া ছাড়াও সম্মানজনক এই পদক পান বাংলাদেশের আরও ১৮ তরুণ-তরুণী এবং কিশোর-কিশোরীরা। সোমবার (২৮ জুন) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড কর্তৃপক্ষ বিশ্বজুড়ে ২০২১ সালের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় শতাধিক কিশোর ও তরুণদের পুরস্কৃত করা হয়। ১৯৯৯ সাল থেকে প্রতিবছর প্রিন্সেস ডায়ানার স্মরণে বিশ্বজুড়ে নয় থেকে ২৫ বছর বয়সী কিশোর-তরুণদের এই পুরস্কারে অনুপ্রাণিত করা হয়। সামাজিক ইতিবাচক পরিবর্তন এবং মানব সেবামূলক কাজে অবদান রাখছেন এমন উদ্যোগগুলোকে সহায়তা দিতেই সেগুলোর উদ্যোক্তাদের ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়। ডায়ানা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত রয়েছেন মারিয়া মুমু। বললেন, ‘আমি চাই যে বাংলাদেশে এমন একটা সমাজ হবে যেখানে বাবা-মায়ের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকবে, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকবে, আর এমন একটি সমাজে আমরা বাস করব যেই সমাজে অকৃতকার্য হওয়াকে জীবনের শেষ ভাবা হবে না; যেখানে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সংগ্রাম করে যাওয়া একজন মানুষ সবার ভালোবাসা এবং সহোযোগিতা পাবে। ’