রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ অপরাহ্ন

মৃত্যু ও শনাক্ত: করোনা সর্বোচ্চ গতি পেয়েছে গত মাসে

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

দেশে করোনা শনাক্তের পর ১৭ মাসের মধ্যে চলতি বছরের গত জুলাই ছিল সর্বোচ্চ শনাক্ত ও মৃত্যুর মাস। বিশেষ করে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে। মাসটিতে ছয় হাজারের বেশি করোনা রোগী মারা গেছে। আর আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ২৭ হাজার ব্যক্তি। পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছরের ৮ মার্চ দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের পর চলতি বছরের ৩১ জুন পর্যন্ত সোয়া নয় লাখ করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তবে গত জুলাইয়ে এক মাসেই ৩ লাখ ২৭ হাজার ৯২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে, যা মোট শনাক্ত রোগীর ২৬ শতাংশ। একই সঙ্গে মাসটিতে ৬ হাজার ৩৯ জন কভিড পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যা মোট মৃতের ২৯ শতাংশ।
করোনা রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি ও বেসরকারি ১৩১টি হাসপাতালে নির্ধারিত ১৬ হাজার সাধারণ শয্যা রয়েছে। পুরো জুলাইয়ে ৭০ শতাংশের বেশি শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল। একই সঙ্গে সংকটাপন্ন করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত ১ হাজার ৩ শয্যায় রোগী ভর্তির হার বেশি দেখা গেছে। মাসের শুরুর দিককার তুলনায় শেষাংশে হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েছে। এর মধ্যে সরকার শয্যা বাড়ানোর ব্যবস্থা নিলেও সংকট মোকাবেলা কঠিন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে ৬৪৯টি পরীক্ষাগারে প্রায় ৩১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৯ হাজার ৩৬৯ জনের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এতে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪। সর্বশেষ ২১৮ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০ হাজার ৬৮৫। দেশে এ মুহূর্তে সক্রিয় নভেল করোনাভাইরাসের রোগীর সংখ্যা দেড় লাখের বেশি। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩০ দশমিক ২৪ শতাংশ। আর মোট শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনাক্ত রোগীর বিপরীতে সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ২৯ শতাংশ হলেও মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পুরো জুলাইয়ে শনাক্তের হার ত্রিশের আশপাশে রয়েছে।
ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়া ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তারে জুলাইজুড়েই দৈনিক রোগী শনাক্ত ১০ হাজারের আশপাশে ছিল। তবে ঈদুল আজহার সময় নমুনা পরীক্ষা কমে গেলে রোগী শনাক্তও সাময়িকভাবে কমেছিল। এর মধ্যে ২৮ জুলাই সর্বোচ্চ ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। আর ২৭ জুলাই একদিনে সর্বাধিক ২৫৮ জনের মৃত্যু হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে সর্বাধিক ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। বাকিদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৫ ও খুলনা বিভাগে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ২২, বরিশালে ১০, রংপুরে ১৬, সিলেটে নয় এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত একদিনে। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া করোনা রোগীর মধ্যে ৬৮ শতাংশ পুরুষ ও ৩২ শতাংশ নারী। বর্তমানে নভেল করোনাভাইরাসের চারটি মিউটেশন (রূপান্তর) বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। এ ধরনগুলো ব্যাপক উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলেছে, এ পর্যন্ত আলফা ধরন ১৮২টি দেশে, বিটা ১৩১, গামা ৮১ ও ১৩২টি দেশে ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়েছে। গত সপ্তাহে আরো আটটি দেশে ডেল্টা সংক্রমণ শনাক্ত হয়।
সংস্থাটির সর্বশেষ তথ্যানুসারে, করোনার ডেল্টা ধরনের কারণে বিশ্বজুড়ে সংক্রমণ বাড়ার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও ব্যাপক বেড়েছে। আঞ্চলিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সংক্রমণ নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে। মহামারী শুরুর পর থেকে করোনার ধরনগুলোর মধ্যে ডেল্টা সবচেয়ে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে। এটি আগের যেকোনো ধরনের চেয়ে অনেক বেশি সংক্রামক বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com