নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের সূনগর ৮নং ওয়ার্ড এর মৃত নজরুল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা বেগম ১৬ শতক জমিতে ড্রাগন ফল চাষ করে এলাকায় চমক সৃষ্টি করেছেন। তিনি উপজেলায় প্রথম নারী কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে এই সাফল্য অর্জন করেন। খাদিজা বেগমের সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন ২০১৪ সালে ২৯ মে আমার স্বামী মারা যান। মারা যাওয়ার পরে খাদিজা একাকীত্ব হয়ে পরে। খাদিজা বেগমের দুই টি পুত্র সন্তান রয়েছে। বর্তমানে তারা উচ্চ শিক্ষার জন্য এলাকার বাহিরে আছেন। ছেলে সন্তানরা সখ করে দুই একটি চারা নিয়ে আসতো। এখান থেকে শুরু হয় খাদিজা বেগমের ড্রগন চাষ। বর্তমানে তার বাগানে ২৬০ টি ড্রাগন ফল গাছ আছে। আগে এই জমি গুলে খালি পরে থাকতো। পরে যখন এই জমি কে বাগানের রুপ দিতে থাকি তখন থেকে শুরু হয় খাদিজার বেগমের এ বাগান করার উদ্যোগ। বর্তমানে খাদিজা বেগমের একাকীত্ব সময় এ বাগানের মধ্যে দিয়েই কাটে। অনেক স্বযত্নে ও নিবিড় পরিচর্যা করে এ বাগান ঘরে তুলছেন তিনি। তবে খাদিজা বেগম ভিয়েতনামের জাতীয় ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেতে শুরু করেছে। টক-মিষ্টি স্বাদের ড্রাগন চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন কৈমারী ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তা খাদিজা বেগম। ১৬ শতক জমির উপর বাণিজ্যিকভাবে গড়ে তুলেছেন ড্রাগন ফলের খামার। করোনার মধ্যে তিনি কয়েকবার ড্রাগন ফল বিক্রির পাশাপাশি দেশের কৃষকদের মাঝে এই ফলের চাষ ছড়িয়ে দিতে চান। নতুন ফল ড্রাগন চাষে সফলতা পাওয়া গ্রামের খাদিজা বেগমা জানান, ২০১৮ সালের জুন মাসে ১৬ শতক জমির উপরে ড্রাগন ফলের বাগানের সূচনা করেন মাত্র ২৬০টি চারা দিয়ে। তার ড্রাগন খামার দূর থেকে দেখলে মনে হয় স্বযত্নে ক্যাকটাস লাগিয়েছে কেউ। একটু কাছে যেতেই চোখ ধাঁধিয়ে যাবে অন্য রকম দেখতে ফুল ও এক লাল ফলে ভরা খামার। প্রতিটি গাছে রয়েছে ফল, ফুল, মুকুল ও পাকা ড্রাগন। তিনি লাল, হলুদ এবং সাদা ড্রাগন ফলের চাষ করেছেন। ইতি মধ্যে তার গাছের বয়স প্রায় ৩ বছর হয়ে গেছে। ফুল আসতে শুরু করেছে ফুল আসার ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়।এক একটি ফলের ওজন ২৫০-৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে। এছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ গাছ থেকে ১০০ থেকে ১৫০টি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারলে একটি গাছ হতে ৩০- ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। এখন প্রতি সপ্তাহে ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে মিনিমাম ১০ কেজি। এখন পর্যন্ত ১২০ কেজি ড্রাগন ফল বিক্রি করতে পেরেছি যার বাজার মূল্য পাইকারি প্রতি কেজি ৪ শত টাকা করে। এখন প্রতিদিন তার খামার থেকে বিক্রি হচ্ছে ড্রাগ গাছের চারা। প্রতিটি ড্রগনের চারা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। এবিষয়ে জলঢাকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ মোঃ শাহাদাৎ হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, খাদিজা বেগম এর বাগানটি আমরা পরিদর্শন করেছি ২০১৮ সালে খাদিজা বেগম স্বল্প পরিসরে প্রাথমিকভাবে শুরু করে এবং বাগান শুরু করার পর তাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়। পরে তারা বাণিজ্যিকভাবে বাগানের কার্যক্রম শুরু করে আর্থিকভাবে সচ্ছল হয়। নিজেদের পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে এ সাফল্য থেকে পুনরায় বাগানকে আরো সম্প্রসারিত করে। সামগ্রিক দিক থেকে খাদিজা বেগমের বাগানটি বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্য এক টুকরো জমি ফাঁকা না রেখে বসতবাড়ির আশেপাশে সবাই যদি স্বল্প পরিসরে এই উদ্যোগ গ্রহণ করে তাহলে দেশে পুষ্টির চাহিদা পূরনের পাশাপাশি আমাদের দেশের কৃষি বানিজ্যিক সফল হবে বলে আমি আশা করছি।