রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

দক্ষিনাঞ্চলে সবজি চারার চাহিদা কম, লোকসানে চাষিরা

শামীম আহমেদ বরিশাল প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

বছরের পর বছর ধরে ভাসমান ক্ষেতে সবজি চারা উৎপাদন করছেন বরিশাল ও পিরোজপুরের কৃষকরা। তবে এবার মহামারি করোনা ও বন্যার কারণে চারার বাজারে চলছে মন্দা। চাষি পর্যায়ে ভালো দর না পাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। যদিও পাইকাররা বলছেন, ফসলি জমিসহ দেশের নিম্নঞ্চলগুলো থেকে পানি সরে গেলে বাজার ঘুরতে পারে। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারের পাড় গ্রাম থেকে লাউ, মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চারা কিনে থাকেন পাইকার মো. শহিদ। তিনি বলেন, পুরো বিশারকান্দি ও পিরোজপুরের নাজিরপুর এলাকার ফসলি জমি বর্ষায় পানির নিচে ডুবে থাকে। এ সময় জলজ উদ্ভিদ অর্থাৎ শ্যাওলা, কচুরিপানা দিয়ে ভাসমান ক্ষেত তৈরি করেন কৃষকরা। এভাবেই ডুবে থাকা ফসলি জমির ওপর সবজি চারা উৎপাদন করা হয়ে থাকে। তিনি আরও বলেন, এ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণ সবজি চারা উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত চারা বরিশালের বিভিন্ন এলাকাসহ পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, চাঁদপুর, বাগেরহাট ও চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করা হয়। তবে এবার বন্যার কারণে এসব অঞ্চলে সবজি চারার বাজারে মন্দা চলছে। সেইসঙ্গে মহামারি করোনায় ক্রেতাদের সংখ্যাও কমে গেছে। বিগত বছরের তুলনায় চারার দর কম। ফলে লোকসানের আশঙ্কায় গত দুই দিন ধরে তিনিও চাষি থেকে চারা কিনছেন না। মো. শহিদ জানান, গত বছর বিভিন্ন সবজির চারা ৮-১০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা ৩-৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আরেক পাইকার আ. খালেক জানান, খুচরো বাজারে চাহিদা কম থাকায় এবার চারার দর কম। তাই চাষিদের ভালো দর দিতে পারছেন না তিনি। এভাবে উৎপাদিত চারা তিন-চারদিনের বেশি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয় না। ফলে ক্রেতার আগ্রহ বুঝে চাষিদের কাছ থেকে চারা সংগ্রহের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছেন। তার মতে খুচরো বাজারে চারার চাহিদা বাড়লে চাষি পর্যায়ে ভালো দর পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে চাহিদা কম থাকায় যে দর পাচ্ছেন তাতেই বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পশ্চিম উমারের পাড় গ্রামের চাষি সেলিম হাওলাদার। তিনি আরো বলেন, গতবার লাউ, শিম, বেগুন, পেঁপে, কুমড়া, করলা, শসা, বরবটি, টমেটো, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কাঁচা ও বোম্বাই মরিচের চারা শতপ্রতি ৩-৫‘শ টাকায় বিক্রি করেছেন। এবারে তা কমে অর্ধেকের কাছাকাছি গিয়ে ঠেকেছে। তুলাতলা এলাকার কৃষক শামসুল বলেন, করোনার কারণে এবার বিশারকান্দিতে স্থানীয় পাইকার ছাড়া দূরের পাইকারদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। দূরের পাইকার না থাকায় বাজার স্থানীয় পাইকারদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে লোকসান ঠেকাতে তারা যে দর দিচ্ছেন তাতেই চারা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। অন্যদিকে রাসেল নামে এক কৃষক জানান, মৌসুমে একটি ক্ষেত থেকে ৩-৫ বার চারা উৎপাদনের চেষ্টা করেন কৃষকরা। সেক্ষেত্রে ভাসমান ক্ষেতে নির্ধারিত সময়ের পর চারাগাছ রাখা বিপদ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com