বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:১০ অপরাহ্ন

মিশ্র পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষে বগুড়ার মৎস্য চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে

বাসস:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১

গলদা চিংড়ি সাধারণত দক্ষিণাঞ্চল কিংবা সমুদ্র উপকূলে লোনা পানিতে চাষ হয়ে থাকে। এ ধারণা পাল্টে দিয়েছে বগুড়ার মৎস্য চাষীরা। এখন আর সমুদ্র উপকুলে নয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় একই পুকুরে অন্যান্য মাছের সাথে চাষ হচ্ছে গলদা চিংড়ি। বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলাসহ সদর, শিবগঞ্জ, শেরপুর, কাহালু, গাবতলীতে গলদা চিংড়ি চাষে সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার মৎস্য চাষীরা ও মৎস্য দপ্তর। মিশ্র পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ মৎস্য চাষীদের আশার আলো দেখাচ্ছে। শাজাহানপুর উপজেলা মৎস্য দপ্তরের মাধ্যমে মৎস্য চাষ স¤প্রসারণ প্রকল্পের ৩ টি গলদা কার্প প্রদর্শনী পুকুরে গলদা চিংড়ি সঙ্গে মিশ্র পদ্ধতিতে কার্প জাতীয় মাছ চাষে এ সাফল্য দেখা দিচ্ছে। এতে অনেক মৎস্য চাষীদের গলদা চিংড়ি চাষে আগ্রহী বাড়ছে।
মিশ্র পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ আশার আলো দেখাচ্ছে। মিশ্রচাষে গলদা চিংড়ি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরকার আনোয়ারুল কবির আহম্মেদ। তিনি জানান, সরকারি খামার থেকে জুভেনাইল (চিংড়ির পোনা) এনে জেলার সদর, শাজাহানপর, শিবগঞ্জ, গাবতলী, শেরপুরসহ আরো বেশ ক’টি উপজেলায় একই পুকুরে গলদা চিংড়ির সাথে অন্য মাছে চাষ হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এক শতক পুকুরে গলদা চিংড়ি চাষ করে ১ কেজি চিংড়ি পাওয়া যাবে। এর সাথে রুই, গ্রাসকাপ, কাতলা, সিলভার কাপ জাতের মাছ ৬ মাসে ২ কেজি ওজনের হবে বলে জানান তিনি। এই পদ্ধতি মাছ চাষের চাষীদের আগ্রহ বাড়াছে।
শাজাহনপুরের খোট্রাপাড়া ইউনিয়ন গলদা চিংড়ি প্রদর্শনী পুকুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খামারের পুকুরগুলোতে জেলেরা মাছ ধরে সেসব মাছ মৎস্যকর্মীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আবার পুকুরে ছেড়ে দিচ্ছেন। এ সময় মাছ ও পুকুরে নমুনায়ন পরীক্ষা করে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোসা. আয়েশা খাতুন।
উপজেলা মৎস্য দপ্তর তথ্য মতে, ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্য চাষ প্রযুক্তি সেবা স¤প্রসারণ প্রকল্পের আয়তায় উপজেলা খোট্রাপাড়া,মাদলা ও আশেকপুর ইউনিয়ন ৩ টি প্রদর্শনী পুকুরে গলদা চিংড়ি জুভেনাইল কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে মিশ্র পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। মৎস্য দপ্তর মাধ্যমে প্রদর্শনী গলদা চিংড়ি চাষীদের প্রশিক্ষণ, জুভেনাইল পোনা, মাছের খাবার ও মাছ চাষে উপকরণ দেয়া হয়।
উপজেলার মোস্তাইল গ্রামের গলদা চিংড়ি চাষী আব্দুল হামিদ বলেন, এক বিঘা জমির পুকুরে অল্প সংখ্যক কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে প্রথমবারের মতো গলদা চিংড়ি চাষ করেছি। মৎস্য দপ্তরের তত্বাবধানে সঠিক নিয়মে পরিচর্যা ফলে জুভেনাইল সাইজের চিংড়ি মাছগুলো সাড়ে তিন মাসেই প্রায় বিক্রির উপযুক্ত হয়েছে। আমার পুকুরের ১০-১২ টি চিংড়ি এক কেজি মতো ওজন হয়েছ। আশাকরি সব খরচ বাদ দিয়ে ৫০/৬০ হাজার টাকা লাভ হবে। আমি আগামী বছরে আরও ২ বিঘা জমির পুকুরে এ মিশ্র পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ করবো।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোসা. আয়েশা খাতুন বলেন, কার্প জাতীয় মাছের সঙ্গে মিশ্র পদ্ধতিতে গলদা চিংড়ি চাষ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ রয়েছে। প্রদশর্নী পুকুরে সঠিক পরিচর্য়া মাধ্যমে সাড়ে তিন মাসেই ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এ অঞ্চলের মাটি ও পানিতে গলদা চিংড়ি চাষের বাণিজ্যিক ভাবে সম্ভাবনা মৎস্য চাষীদের আশার আলো দেখাচ্ছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com