নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। শীতের সবজি সীমিত আকারে বাজারে আসলেও দাম চড়া। এতে হাঁপিয়ে উঠছেন খেটে-খাওয়া মানুষ। মধ্যবিত্তরাও কুলিয়ে উঠতে পারছেন না। একে একে ৫টি দোকানে বাজারের থলে নিয়ে ঘুরছিলেন লতিফ প্রামানিক (৩৯)। তিনি স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। বেতন পান ১১ হাজার টাকার মতো। জানালেন, ৩০০ টাকা নিয়ে বাজারে এসেছেন কিন্তু কোনটা কিনবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না। সবকিছুর দাম বেশি। তিনি বলেন, বেতন অল্প। ঘরভাড়া, দুই সন্তানের লেখাপড়াসহ ৫ জনের খাবারের জোগান। ২-৩ কেজি সবজি কিনলেই টাকা শেষ, অথচ আমার সপ্তাহে ৩০০ টাকা বাজেট।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় সবকিছুরই বাজার চড়া। চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, ফলমূল, চিনিসহ প্রতিটি দ্রব্যের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সব মিলিয়ে কাঁচাবাজারের লাগামহীন দামে নি¤œ আর মধ্যম আয়ের মানুষ কষ্টে আছে। সবজি কেনা এখন দুরূহ ব্যাপার। আলু আর ডিমের ওপরই ভরসা খেটে-খাওয়া পরিবারগুলোর। বাজারে শীতকালীন সবধরনের সবজি পাওয়া গেলেও কিনবার সাধ্য নেই অনেকের। জয়দেবপুর শহরেই রিকশা চালান গফুর হক। সকাল সকাল এসেছেন বাজার করতে। তিনি বলেন, সারাদিন ৩ থেকে ৪ শত টাকা কামাই কিন্তু জিনিসপত্রের যে দাম তাতে আর চলে না। আলু ছাড়া ৫০ টাকার নিচে ১ কেজি সবজিও কেনা যায় না। তাহলে আমরা খাবো কি। সয়াবিন তেল ১ কেজি ১৭০ টাকা, চিনি কিনলাম আধা কেজি ৪৩ টাকা দিয়ে। আমাদের তো আয় বাড়েনি, সেই ৩ থেকে ৪শ টাকাই। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ক্রান্তিকালে মানুষ যখন চাকরি-বাকরি হারিয়ে কোনোরকমে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে, ঠিক তখন চাল তেল সবজি পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, একাধিক সবজি ১০০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। শিম বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৭০-৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৬০-৭০ টাকা, লাউ বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ৫০-৬০ টাকা। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, চিনি ৯০ টাকা। বয়লার মুরগী প্রতি কেজি ১৮০ টাকা। একাধিক সবজি বিক্রেতা জানান, সবজির দাম বাড়লে বেচাকেনা অনেক কম হয়। দাম বাড়ার সঙ্গে আমাদের কোন সম্পর্ক নেই। আমাদের কেনা বেশি তাই বিক্রিও বেশি। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতার সংখ্যা অনেক কম। তবে যেহেতু শীত সিজন এসে যাচ্ছে, আশা করছি দ্রুতই দাম কমে আসবে।