বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

আমন সংগ্রহ মৌসুম: চালের দাম কেজিতে ৩ টাকা ধানে বাড়ছে মাত্র ১ টাকা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১ নভেম্বর, ২০২১

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের আমন মৌসুমে প্রায় আট লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটি, যা গতবারের তুলনায় প্রায় ৫০ হাজার টন কম। ৭ নভেম্বর শুরু হতে যাওয়া সংগ্রহ মৌসুমে ধান ও চালের সংগ্রহ মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে মিলারদের চালের দাম ৩ টাকা বাড়ানো হলেও কৃষকের ধানের দাম বাড়ছে মাত্র ১ টাকা। গতকাল খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারের সভাপতিত্বে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার আমন ধানের সরকারি ক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ২৭ টাকা, চালের মূল্য প্রতি কেজি ৪০ টাকা ও গমের মূল্য প্রতি কেজি ২৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৭ নভেম্বর আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। এবারে তিন লাখ টন আমন ধান, পাঁচ লাখ টন সেদ্ধ চাল কেনা হবে। এছাড়া আগামী ১ এপ্রিল থেকে দেড় লাখ টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে ৯ লাখ ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হবে।
মূলত প্রান্তিক চাষীদের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতেই প্রতি বছর বোরো মৌসুমে ধান ও চাল সংগ্রহ করে সরকার। অবশ্য আগে আমন মৌসুমে শুধু চাল সংগ্রহ করা হতো। ২০১৯ সাল থেকে আমন মৌসুমে চালের পাশাপাশি ধানও সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে মাঠ পর্যায়ে ধানের দাম ভালো পাচ্ছেন কৃষক। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে দুই লাখ টন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেয়া হয়। চলতি বছর তা এক লাখ টন বাড়িয়ে তিন লাখ টনে উন্নীত করা হয়েছে। ২০২০ সালের আমন মৌসুমে দুই লাখ টন ধান, ছয় লাখ টন সেদ্ধ চাল ও ৫০ হাজার টন আতপ চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। গত বছর প্রতি কেজি ২৬ টাকা দরে ধান ও ৩৭ টাকা কেজি দরে সেদ্ধ চাল কেনা হয়েছিল। গত বছরও সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছিল ৭ নভেম্বর। গত ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্যের সরকারি মোট মজুদ ছিল ১৫ লাখ ২১ হাজার টন। এর মধ্যে চাল ১৩ লাখ ৬৩ হাজার টন ও গম ১ লাখ ৫৩ হাজার টন। এছাড়া ধানের মজুদ আছে প্রায় আট হাজার টন। তবে চলতি আমন মৌসুমে সরকারের সংগ্রহের পরিমাণ আরো বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে সাবেক খাদ্য সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল বলেন, মোট উৎপাদনের মাত্র ৫ শতাংশ সংগ্রহ কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সামনের দিনে আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্যবৃদ্ধি ও মজুদ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে মজুদ আরো বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা যেহেতু স্বল্প পরিমাণে করা হয়েছে, এটি যেন অবশ্যই পূরণ হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে সংগ্রহ কম হলে আন্তর্জাতিক বাজারে থেকে আমদানি করা যেতে পারে এবং সেটিও দ্রুততম সময়ের মধ্যেই করতে হবে। এবার ধান ও চালের মূল্যবৃদ্ধি যৌক্তিকভাবে করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কৃষকের কোনো প্রতিনিধি না থাকায় ধানের দাম মাত্র ১ টাকা বেড়েছে। কিন্তু চালের দাম বেড়েছে ৩ টাকা। এর অর্থ হলো এখানে চালকল মালিকদের প্রচ্ছন্ন প্রভাব রয়েছে। তবে গত রোববারের অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, কৃষকের জন্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে চায় সরকার। পাশাপাশি খাদ্যের নিরাপত্তা মজুদও বাড়াতে চায়। বোরো ধান সংগ্রহে সফল হয়েছে সরকার। সে ধারাবাহিকতায় আমন সংগ্রহেও সফলতা অর্জন সম্ভব হবে।
এ সময় কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি প্রকৃতি ও অঞ্চলনির্ভর। ধানের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুনসহ আরো বেশকিছু কৃষিপণ্য দেশে উৎপাদন হলেও সংরক্ষণের অভাবে কৃষক ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। দেশে কৃষিজমির পরিমাণ কমে যাওয়া, শিল্প-কারখানার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার মতো নেতিবাচক কারণ থাকলেও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য লবণাক্ততা সহিষ্ণু ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। ধানের উৎপাদন টেকসই করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
নিজের বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্যপণ্যসহ আরো বেশকিছু পণ্য রফতানি করে। মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন হলে রফতানি সম্ভাবনা আরো বাড়বে। সভায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানও বক্তব্য রাখেন। এছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান তাদের মতামত তুলে ধরেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com