নওগাঁর ধামইরহাটে জাহানপুর ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিকন্দখাস গ্রামে ভাঙ্গা ঘরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন একটি পরিবার। শনিবার (৬ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকার মৃত আজগর আলী মন্ডলের ছেলে মো. মোকলেছ আলী মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জনিত সমস্যার কারণে এখন শয্যাশায়ী। শত বছর বয়সী বৃদ্ধা মা আবেজন বেওয়া শারীরিকভাবে কর্মক্ষম হওয়াই অসুস্থ। মোখলেসের একমাত্র ভরসা তার স্ত্রী মোছা. তহুরা খাতুনের উপর। তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই কেবলমাত্র একটি জরাজীর্ণ মাটির বাড়ি। বাড়িটির একপাশে বর্ষার পানি পড়ে ভেঙে গেছে। স্ত্রী তহুরা খাতুন মানুষের বাসাবাড়িতে কাজকর্ম করেন। তার জমানো টাকায় কোনরকমে টিনের বেড়া দিয়ে একটি ঘরে অসুস্থ স্বামী ও বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। অন্যদিকে ঘরটির চতুর্দিকে ফাঁকা অংশ থাকায় প্রতিদিন সূর্যের আলোয় ঘুম ভাঙ্গে তাদের। চোখে জল টলমল অসুস্থ মোকলেস আলী বলেন, ‘মোর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে বা.! মুই আর বেশি দিন বাঁচমু না। মোক এটা ঘর করে দিলে অসুস্থ মা বউ বাচ্চাক নিয়ে রাত্রে এনা শান্তিতে ঘুমাতে পারলো হিনি।’ স্ত্রী তহুরা খাতুন ক্ষোভের সাথে বলে, আমার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামীর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। বাসা বাড়িতে কাজ করে যতটুকু টাকা পাই সংসারের খরচ তো দূরের কথা স্বামী-শাশুড়ির চিকিৎসা খরচে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। তিনি এও বলেন, ঘর নাই রাতে ঘুমাবার জায়গা টুকুও নেই। সকাল হলেই সূর্যের আলোয় ঘুম ভেঙ্গে যায়। একটা ঘরের জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান খালি আশ্বাস দেয়। এ সময় তিনি আবেগজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসাবে একটি বাড়ির আবেদন করেন। বৃদ্ধা মা আবেজন বিবি বলেন, ‘এই ঠান্ডাত মোর ছওলটা কেংকা করে থাকবে বা, মোক এটা ঘর করে দি।’ জাহানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওসমান আলী বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি বছর আমরা তিনটি করে ঘর পেয়ে থাকি। এবার নতুন করে ঘর বরাদ্দ পেলে ওই পরিবারকে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গণপতি রায় বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।