সব জানতেন। তবু তিন বছর ধরে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। ২০১৮ সালে টিম পেন যে এক নারীকে অশ্লীল ছবি ও ম্যাসেজ পাঠিয়েছিলেন, ওই কীর্তি ফাঁস হওয়ার পরে ২০২১ সালের ১০ নভেম্বরও তার পাশেই দাঁড়াচ্ছেন স্ত্রী বনি। তিন বছর আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া যখনই পেনের বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তখনই বনি সব জানতে পেরে ছিলেন। শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলের অধিনায়কের পদ থেকে পেন সরে যাওয়ার আগে পর্যন্ত কিছুই জনসমক্ষে আসেনি। সব কিছু গোপন রাখার ক্ষেত্রে বনির ভূমিকাই বোধ হয় সবথেকে বেশি ছিল। এই তিন বছরে তিনি বিশেষ করে টুইটার, ফেসবুকে তাদের পাঁচ বছরের ‘সুখী’ বৈবাহিক জীবনের ছবিই সযতেœ, সচেতনে তুলে ধরেছিলেন। গত ২ নভেম্বর তিনি পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘সবচেয়ে নিখুঁত জন্মদিন।’ নিয়মিত তাদের রাত্রিযাপনের ছবি পোস্ট করতেন বনি। গত জুলাইতে এরকমই একটি ছবি পোস্ট করেন। সাথে লেখেন, ‘আমার হট ডেট। আর কেউ কি বাইরে না বেরিয়ে আমাদের মতো ঘরে এরকম রাত কাটাতে পারবে? নাকি আমরা একটু বেশিই বুড়িয়ে গিয়েছি?’
গত এপ্রিলে পেন-বনি হাত ধরাধারি করে ক্রিকেট তাসমানিয়ার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। কোভিডের জন্য যখন তাদের আলাদা থাকতে হয়েছিল, তখন কতটা ভেঙে পড়েছিলেন, সে কথাও নেটমাধ্যমে জানিয়েছিলেন বনি, লিখেছিলেন, ‘ওকে বিদায় জানাতে গিয়ে আমি শেষ হয়ে গিয়েছি। আশা করছি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে।’ গত ডিসেম্বরে পেনের ৩৬তম জন্মদিনেও মন ছুঁয়ে যাওয়া পোস্ট করেছিলেন বনি। লিখেছিলেন, ‘আমরা তোমাকে খুব ভালোবাসি। তোমার জন্য আমরা সত্যিই গর্বিত।’
২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে হোবার্টের ক্রাউন প্লাজায় একসাথে কাটানোই হোক, বা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হোক, বা নতুন বছর থেকে বড়দিন হোক, নেটমাধ্যমে ছবি দিতে ভুল করেননি বনি। ফ্রান্স-স্পেন থেকে শুরু করে বালি-কোপটাউনে একসাথে বেড়াতে যাওয়ার ছবি ফলাও করে নেটদুনিয়ায় জাহির করেছেন। যৌন কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা ঘটিয়েও পেন যে তিন বছর ধরে হাসতে হাসতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব করেছেন, তার পিছনে বনির ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি।
হয়তো পেনের পাশে একটু বেশিই থাকতে চেয়েছিলেন। হয়ত ভিতরের যন্ত্রণা বাইরে আনতে চাননি। হয়ত বা জ্বলে-পুড়ে যাওয়া মনে একটু সুখের প্রলেপ দিতে চেয়েছিলেন। কেন পেনকে আগলে রেখেছিলেন এ ভাবে? শুধুই তারা স্বামী-স্ত্রী বলে? শুধুই ছেলে চার্লি ও মেয়ে মিলার কথা ভেবে? জবাব আছে শুধু বনির কাছেই। সূত্র : আনন্দবাজার