বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজে মনমাতানো ক্লাস পার্টি অনুষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

অহঙ্কার

মাওলানা এম এ হালিম গজনবী এফসিএ:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১

প্রবাদ আছে- অহঙ্কার পতনের মূল। চূড়ান্ত প্রমাণ- ফেরেশতাদের মুয়াল্লিম ইবলিসের পতন। পতন হলো ফেরেশতাদের মুয়াল্লিম পদমর্যাদা হতে ইবলিস শয়তানের, যা জঘন্যতম বা নিকৃষ্টতম পর্যায়। পতন হলো জান্নাত থেকে জাহান্নামে অর্থাৎ সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান থেকে সর্বনিকৃষ্ট স্থানে। অতুলনীয় পতন, চরম পরম পতন, উৎস একমাত্র অহঙ্কার। অহঙ্কারের সূচনা ‘ইবলিস শয়তান’। সে অহঙ্কারের বশবর্তী হয়ে আল্লাহর আদেশ অমান্য করল হজরত আদম আ:কে সেজদা না করে, যখন সব ফেরেশতা আদম আ:কে সেজদা করল। আল্লাহর বাণী- ‘যখন আমি ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সেজদা করো। তখন ইবলিস ব্যতীত সবাই সেজদা করল। সে অমান্য করল ও অহঙ্কার করল। সুতরাং সে কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত হলো’ (সূরা আল বাকারা, আয়াত-৩৪)। ইবলিস একমাত্র অহঙ্কারের কারণে আল্লাহ তায়ালার ক্রোধানলে নিপতিত হয়ে কাফির এবং শয়তানে পরিণত হলো। কুরআনে বর্ণিত আছে- ‘আল্লাহ প্রশ্ন করলেন, আমি যখন তোকে (ইবলিস) আদেশ করলাম তখন কিসে তোকে সেজদা করা থেকে বিরত রাখল? আল্লাহর প্রশ্নের জবাবে ইবলিস জানাল, আমি তার চেয়ে উত্তম। তুমি আমাকে আগুন দিয়ে সৃষ্টি করেছ, আর তাকে সৃষ্টি করেছ মাটি দিয়ে’ (সূরা আল আরাফ, আয়াত-১২)। ঔদ্ধত্য কাকে বলে! ইবলিসের এই অহঙ্কারের কারণে সে হারাল চিরশান্তির স্থান জান্নাত ও নিক্ষিপ্ত হবে চিরকঠোর শাস্তির স্থান জাহান্নামে। হায়রে অহঙ্কার! তুমি আমাদের মহাশত্রু, তোমারই কারণে আমাদের মহাশত্রু শয়তানের অস্তিত্ব। মনে প্রাণে ধিক্কার দিচ্ছি তোমাকে হে অহঙ্কার।
‘আল্লাহ পছন্দ করেন না দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে’ (সূরা নাহল, আয়াত-২৩)। আল্লাহ যাকে পছন্দ করেন না তার স্থান জাহান্নামে হওয়ার কথা। আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন। কাফেরদেরকে জাহান্নামের দারোয়ানরা বলবেন, ‘প্রবেশ করো জাহান্নামে চিরকালের জন্য (তোমরা ছিলে অহঙ্কারী), অহঙ্কারীদের স্থান অত্যন্ত নিকৃষ্ট এবং কঠোর শাস্তিদায়ক’ (সূরা জুমার, আয়াত-৭২)।
আল্লাহ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, ‘ভূপৃষ্ঠে অহঙ্কারী হয়ে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই (পায়ের ভরে) ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং (উচ্চতায়) কখনোই পর্বত সমান হতে পারবে না’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত-৩৭)। আল্লাহ ধিক্কার ও ঘৃণার স্বরে বলেছেন, ‘হে অহঙ্কারী গোলাম! তুই তো আমার জমিনে দম্ভভরে চলাফেরা করে ফাটল ধরাতে পারবি না, তবে কেন এ অহঙ্কার। তোর উৎস এক ফোঁটা নাপাক পানি। দু’দিন পর মাটিতে মিশে যাবি এবং তথা থেকে তোকে পুনরুত্থান করা হবে।’ এ সব বাণী কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে।
আল্লাহর অন্য একটি নিষেধাজ্ঞা, ‘তুমি অহঙ্কারবশত মানুষকে অবহেলা করো না এবং পৃথিবীতে গর্বভরে বিচরণ করো না। নিশ্চয় আল্লাহ কোনো দাম্ভিক ও অহঙ্কারীকে ভালোবাসেন না’ (সূরা লুকমান, আয়াত-১৮)। আল্লাহ সহ্য করতে পারেন না তাঁর সৃষ্ট সৃষ্টির সেরা মানবদের অবহেলা তথা অত্যাচার করা, যা অহঙ্কারীরা সর্বদা করে থাকে এবং তা আমরা দেখতে পাই।
ধন-সম্পদের অস্বাভাবিক আধিক্যের কারণে অহঙ্কারী কারুনকে তার সব স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদসহ মাটি গলাধঃকরণ করল। যার দৃষ্টান্ত বর্তমানে একটি লেক হিসেবে বিরাজমান। আল্লাহ বলেছেন, ‘নিশ্চয় কারুন ছিল মুসার স¤প্রদায়ভুক্ত, কিন্তু সে তাদের প্রতি ঔদ্ধত্যভাব প্রকাশ করেছিল। আমি তাকে দান করেছিলাম এমন ধনভাণ্ডার, যার চাবিগুলো বহন করা একদল শক্তিশালী লোকের পক্ষেও কষ্টসাধ্য ছিল। স্মরণ করো, যখন তার স¤প্রদায় তাকে বলেছিল, অহঙ্কার করো না, নিশ্চয় আল্লাহ অহঙ্কারীদের পছন্দ করেন না’ (সূরা কাসাস, আয়াত-৭৬)।
‘প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আকাশম-লীর প্রতিপালক, পৃথিবীর প্রতিপালক এবং জগতসমূহের প্রতিপালক। আকাশম-লী ও পৃথিবীতে তাঁরই বড়ত্ব (নিরঙ্কুশ অহঙ্কার) বিদ্যমান, তিনি মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাবান’ (সূরা জাসিয়া, আয়াত : ৩৬-৩৭)। আলোচ্য আয়াত দুটি থেকে চূড়ান্তভাবে প্রমাণিত হয়, অহঙ্কার একমাত্র আল্লাহর অধিকার, অন্য কারো নয়। আল্লাহর বাণী, ‘যারা আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে এবং সে সম্বন্ধে অহঙ্কার করে, তাদের জন্য আকাশের দ্বার উন্মুক্ত করা হবে না। তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সুচের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করে। আর এভাবে আমি অপরাধীদেরকে প্রতিফল দান করব’ (সূরা আরাফ, আয়াত-৪০)।
লক্ষ্যণীয়, সুচের ছিদ্রপথে উটের প্রবেশ যেমন অসম্ভব একইভাবে অহঙ্কারীর জান্নাতে প্রবেশও অসম্ভব। সুতরাং যেকোনো মূল্যে অহঙ্কারীকে অহঙ্কারমুক্ত হতেই হবে, যদি জান্নাতে প্রবেশের আকাক্সক্ষা তার থাকে। রাসূল সা: বলেছেন, ‘আলবাদিউ বিসসালাম বারিউম মিনাল কিবার’। অর্থ- ‘প্রথমে সালাম দেয়া, যা সালামদাতার অহঙ্কারকে বিচূর্ণ করে।’ অহঙ্কার বিচূর্ণ করার পদ্ধতি রাসূল সা: আমাদেরকে শিখিয়ে দিয়েছেন সুন্দরভাবে।
ইতঃপূর্বে আপনাদের খেদমতে পেশ করেছিলাম আল্লাহর বাণী অবলম্বনে অহঙ্কারের বিষয়াদি। বর্তমানে পেশ করছি অহঙ্কার সম্পর্কে রাসূল সা:-এর বাণী অবলম্বনে। অহঙ্কার সম্পর্কে রাসূল সা: নি¤েœাক্ত ৮টি হাদিস বলেছেন- ১. আমি কি তোমাদের বেহেশতবাসী সম্বন্ধে অবহিত করব না? তারা এ দুর্বল লোক, যাদেরকে লোকেও দুর্বল মনে করে। কিন্তু খোদার কাছে তাদের এত সম্মান যে, তারা যদি আল্লাহর নামে শপথ করে, তাকে অবশ্যই আল্লাহ তায়ালা সত্যে পরিণত করেন। আমি কি তোমাদেরকে দোজখীদের বিষয়ে অবহিত করব না? তারা হলো অনর্থক কথা নিয়ে বিবাদকারী, বদ মেজাজি, অহঙ্কারী।
রাসূল সা:-এর বাণী শতভাগ সত্য, যেমনি শতভাগ সত্য আল্লাহর বাণী। তাই কুরআন তিলাওয়াত সমাপ্ত হওয়ার পর আমরা যে দোয়াটি পড়ি তার বাংলা অর্থ : ‘সত্য বলেছেন মহান আল্লাহ তায়ালা, সত্য বলেছেন তাঁর পবিত্র রাসূল সা: এবং আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি তাদের এ সত্য বলার উপর।’
উপরোক্ত হাদিসের সর্বশেষ শব্দ অহঙ্কারী, মানে অহঙ্কারী জাহান্নামবাসী। নিঃসন্দেহে ইহা ধ্রুব সত্য কথা। আসুন আমরা সচেতন হয়ে যাই আমরা যেন কস্মিনকালেও অহঙ্কারী না হয়ে বিনয়ী হতে পারি আল্লাহর রহমতে।
২. এমন কোনো ব্যক্তি দোজখে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে রাই পরিমাণ ঈমান থাকবে। অন্য দিকে এমন কোনো ব্যক্তি বেহেশতে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে রাই পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে।
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ! লক্ষ্য করুন উপরোক্ত হাদিসের দ্বিতীয়াংশ কত বড় সতর্কবাণী অহঙ্কারের ব্যাপারে রাসূল সা: আমাদের উদ্দেশ্যে দিয়েছেন যে, কণামাত্র অহঙ্কারের ধারক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এর পরও কি এটা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য নয়- পরিপূর্ণভাবে অহঙ্কারমুক্ত হয়ে যথাসম্ভব বিনয়ী হওয়া এবং যে গুণটি হবে মানব জাতির শান্তি ও আনন্দের কারণ এবং রক্ষা পাবে নিশ্চিত পতন থেকে অহঙ্কারমুক্ত হওয়ার কারণে।
৩. যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তখন এক ব্যক্তি আরজ করল- ইয়া রাসূলুল্লাহ! প্রত্যেক ব্যক্তিই তো এটা পছন্দ করে যে, তার কাপড়-পোশাক ভালো হোক এবং জুতা জোড়াটি সুন্দর হোক, এটাও কি অহঙ্কারের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন- আল্লাহ তায়ালা নিজেও সুন্দর, পছন্দও করেন সৌন্দর্যকে। তবে অহঙ্কার হলো দম্ভের সাথে হককে পরিত্যাগ করা এবং মানুষকে হেয় ও তুচ্ছ মনে করা।
উপরোক্ত ২ নং হাদিসে সর্বশেষ বিষয়বস্তুটি এ হাদিসের শুরুতেই রাসূল সা: ভিন্ন ভাষায় বলেছেন অর্থাৎ ‘যার অন্তরে বিন্দু পরিমাণ অহঙ্কার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ তার মানে বিষয়বস্তুটির দৃঢ়তা নিশ্চিত করা হলো। সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলো অহঙ্কার আমাদের মহাশত্রু এবং মহাক্ষতির কারণ। ফলে সুযোগ পেলেই আমরা অহঙ্কার থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করব যেমনি তাঁর আশ্রয় প্রার্থনা করি প্রধান শত্রু শয়তান থেকে।
৪. আল্লাহ তায়ালা বলেন, অহঙ্কার আমার চাদর এবং শ্রেষ্ঠত্ব আমার ইযার। সুতরাং যে ব্যক্তি এর কোনো একটি নিয়ে আমার সাথে টানাটানি করবে, আমি তাকে দোজখে ঢুকাব। অপর এক বর্ণনায় আছে, আমি তাকে দোজখে নিক্ষেপ করব।
এ হাদিসটি বিশেষভাবে লক্ষণীয় ও মনে রাখার মতো। অহঙ্কার একমাত্র ও শুধুমাত্র আল্লাহরই চাদর। এই চাদর ব্যবহার করার দুঃসাহস যেন কোনো মানুষ না করে। যদি করে সে হবে নির্বোধ, হতভাগা এবং মহাক্ষতিগ্রস্ত। প্রত্যেক মুমিন মুসলিমের পবিত্র দায়িত্ব অহঙ্কারমুক্ত থাকা।
৫. কিয়ামতের দিন অহঙ্কারীদেরকে পিপিলিকার মতো জড়ো করা হবে। অবশ্য আকৃতি ও অবয়ব হবে মানুষের। অপমান তাদের চার দিক থেকে বেষ্টন করে নিবে। ‘বাওলাস’ নামক জাহান্নামের কারাগারের দিকে তাদের হাঁকিয়ে নেয়া হবে। আগুনের অগ্নিশিখা তাদের ওপর ছড়িয়ে যাবে। আর তাদেরকে পান করানো হবে জাহান্নামীদের দেহ নিংড়ানো ‘ত্বীনাতুল খাবাল’ নামক কদর্য পুঁজ-রক্ত। লক্ষণীয়, এ হাদিসে অহঙ্কারীদের জাহান্নামের নাম ‘বাওলাস’ উল্লেখ করে দিয়েছেন রাসূল সা:। ৬. সে বান্দাই সবচেয়ে মন্দ, যে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করে এবং সীমালঙ্ঘন করে আর নিজের শুরু ও শেষকে ভুলে থাকে। লক্ষণীয়, ঘৃণ্যতম ধিক্কার সবচেয়ে মন্দ বান্দার (দাস)। বলা বাহুল্য সবচেয়ে মন্দ বান্দার স্থান হলো জাহান্নাম। ৭. যে ব্যক্তি অহঙ্কারবশে তার পরিধেয় বস্ত্র (পায়ের গিরার নিচে) ঝুলিয়ে রাখে, আল্লাহ তার দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না। আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হওয়া মানে জাহান্নামবাস। লক্ষণীয়, অহঙ্কারের পরিণাম জাহান্নামবাস, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত।
৮. এক ব্যক্তি তার দু’চাদর পরে গর্বভরে পায়চারি করছিল। নিজেকে নিজে ভালো মনে করছিল। এমন সময় হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটিতে ধসিয়ে দিলেন। কিয়ামত পর্যন্ত সে ভূগর্ভে তলিয়ে যেতে থাকবে।
কী ভয়ঙ্কর দুঃসংবাদ ও কঠিনতম শাস্তি! হে আল্লাহ! আপনি রহমান, রাহিম, হাফিজ, নাসির- দয়া করে আমাদেরকে আশ্রয় দিন অহঙ্কারী শয়তান এবং মহাশত্রু অহঙ্কার থেকে। হে আল্লাহ! দয়া করে আমাদেরকে আশ্রয় দিন অহঙ্কারী হওয়া থেকে। আমীন। লেখক: সাবেক সভাপতি, ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ ও চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা অংশীদার, আজিজ হালিম খায়ের চৌধুরী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com