‘স্বাধীনতার ৫০ পরও আমাদেরকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অথচ সাম্য, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও গণতন্ত্রই ছিল আমাদের স্বাধীনতার অন্যতম চেতনা। তাই মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী জাতীয় বীরদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও মহান বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ করতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।’ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম এসব কথা বলেন। এসময় তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে শাহাদাতবরণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং শহীদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সমবেদনা জানান। শুক্রবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের বিমানবন্দর থানা আয়োজিত মহান বিজয় বিদস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
থানা আমীর এ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি সুজারুল হক সুজনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উত্তরা পূর্ব জোন পরিচালক জামাল উদ্দীন, থানা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ এনামুল হক শিপন, জামায়াত নেতা আব্দুর রহীম সাব্বির ও মাহবুবুল ইসলাম দিদার প্রমূখ। ড. রেজাউল করিম বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- এখন রাষ্ট্রাচারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণের জানমালের নিরাপত্তার পরিবর্তে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। মার্কিন যুক্তিরাষ্ট্র কর্তৃক সাবেক সেনাপ্রধানস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সেদিকেই অঙ্গলী নির্দেশ করে। যা আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের সম্মানহানী ঘটিয়েছে। তাই দেশের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হলে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। তিনি গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় একদফা আন্দোলনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক, সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত সমাজই স্বাধীনতার ইপ্সিত লক্ষ্য। কিন্তু মহল বিশেষের ক্ষমতালিপ্সা, অপরাজনীতি ও অহমিকার কারণে সে প্রত্যাশা আজো পূরণ হয়নি। সাম্যের পরিবর্তে বিভক্তি, গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র, আইনের শাসনের নামে জুলুম-নির্যাতন, সামাজিক ন্যায়বিচারের পরিবর্তে সীমাহীন বৈষম্যের ফলে দেশের মানুষ রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যা কোনো স্বাধীন, সার্বভৌম ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য হতে পারেনা। তাই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা ও মহান বিজয়কে অর্থবহ করতে হলে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ করেন।বিজ্ঞপ্তি।