মাত্র কয়েক মাসের প্রেম,বিয়ের জন্য প্রস্তুত দুজনেই, যেন লাইলী মজনুর প্রেম।যদিও পরিবারের উভয় পক্ষ রাজি নয়।এরই মধ্যে দুজনেই কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে করবেন বলে সিদ্ধান্ত হয় গত ১৭ সালে। ছেলে এরশাদ সরকারী গবাদী পশু খামারের অংশ ছাগলের খামারে মাস্টার রোলে চাকুরী করে। মেয়ে স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করত। উভয়জনের সিদ্ধান্ত পরিবার ছাড়াই দুজনে একে অপরের জীবন সঙ্গী হবে।সকল বিষয় প্রস্তুত, কিন্তু কোর্ট এবিট এবিট করবে বলে স্ট্যাম্পে বিয়ের কাবিননামা তৈরী করে গার্মেন্টসে গিয়ে জান্নাতের কাছ থেকে সাক্ষর নেই। এতেই চলতে থাকে গোপনে সংসার,বিষয়টি মানুষের কানাঘোষা শুরু হলেই মেয়ের ঘর থেকে পরিবারের সামনেই এরশাদ হাত ধরে বাড়ী টেনে তাদের বাড়ীতে নিয়ে আসে। এরশাদের পিতা মাতার সামনে স্থানীয় এক মুরুব্বী নিজেই (আকদ) বিয়ে পড়িয়েছে যদিও তিনি কোন ধর্মীয় জ্ঞান বা আলেম হাফেজ কিছুই নয়। তবে সেই কথিত হুজুর বিয়ে পড়ানোর কথা অস্বীকার করছে। তিনি বলেন, তার পরিবার রাত ১২টার দিকে আমাকে জোর করে নিয়ে গেছে একটু দোয়া করিয়ে দিতে।আমি দোয়া করেছি শুধু,কোন বিয়ে পড়াইনি। তবে বিয়ে নিয়ে কানাঘোষা চললে এরশাদ নিজের ঘর ছেড়ে তখন পৌরসভার চন্দ্রপুর নির্জন এলাকায় বসতঘর তৈরী করে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর সংসার করে আসছে। তাদের ঘরে ১কন্যা সন্তানও রযেছে। কিন্তু প্রেমের কারনে জান্নাত ঘর ছাড়লেও দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর বাপের বাড়ীতে আসতে পারেনি স্বামী এরশাদের বাঁধার কারনে। এমনকি গত দেড় বছর আগে জান্নাতের বাবা মারা গেলেও তার মুখ পর্যন্ত দেখতে দেয়নি প্রতারক এরশাদ এমনি অভিযোগ স্ত্রীর। গত দুই মাস আগেও বিষপানের চেষ্টা করেছে আত্মহত্যা করতে। ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শগ্রামের শাহাদাত হোসেনের পুত্র এরশাদ ভূঁইয়া(২৮) ও একই এলাকার মৃত আবুর মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস। এ বিষয়ে তার বিরোদ্ধে জান্নাতের মা বাদী হয়ে মামলা রুজু করেছে। এ বিষয়ে জান্নাত জানান, প্রেম করে ঘর ছেড়েছি ভালবাসার প্রিয় মানুষকে নিয়ে সুখের জীবন কাটাতে। কিন্তু এভাবে আমাকে ঠকাবে বিয়ের নামে প্রতারনা করবে কখনো কল্পনাও করিনি। আমার বিয়ের কাবিননামা করবে করবে বলে দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পার করেছে। একজন হুজুরের কাছে নিয়ে বিয়েও পড়াইনি। কৌশলে প্রতারনা করতে কথিত এক নামে মাত্র ব্যক্তিকে দিয়ে টাকার বিনিময়ে বিয়ে পড়িয়েছেন। গত এক বছর ধরে আমার কাবিননামার অধিকার বিয়ের স্বীকৃতি চাইলে আমার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে এরশাদ। আসে পাশে কোন বাড়ী ঘর ছিলনা যে দৌড়ে কারো বাড়ীতে আশ্রয় নেব। এভাবেই নির্যাতন সহ্য করে করে সাড়ে তিন বছর কাটিয়েছি। এরশাদের ডেইরী ফার্মে চাকুরী সরকারী করতে ২লক্ষ টাকার প্রয়োজন। সেই টাকা নাকি আমার পরিবার থেকে নিয়ে আসতাম। এগুলো বলে বলেও নির্যাতন করত। টাকা না দিলে ঘর থেকে বের করে দেবে।তার কোন বাল ছিঁড়তে পারবেনা বলেও হুমকি দেয়। আমি গরীব ঘরের মেয়ে, পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করেছি। যার কারনে সাড়ে তিন বছর পরিবারের সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছি।তাহলে আমি এত টাকা কি ভাবে দেব।সর্বশেষ কৌশলে পালিয়ে বাপের বাড়ীতে চলে এসেছি।আমি বিচার চাই,বিয়ের নামে কেন প্রতারনা করেছে,আমাকে কেন ঠকালো। আমি আইনের সহযোগিতা চাই। তবে অভিযুক্ত এরশাদের সাথে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও সম্ভব হয়নি। তবে গবাদী পশু খামারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারীরা জানান,এরশাদ ছাগলের ফার্মে দৈনিক হাজিরা ভিত্তিক চাকুরী করে।কিন্তু এখানে যারা ১৫/২০বছর পর্যন্ত সরকারী চাকুরী করে বয়স্ক মুরুব্বি তাদের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করে।পিতৃতুল্য ব্যক্তিদের গালিগালাজ পর্যন্ত করে। দৈনিক হাজিরার একজন অস্থায়ী কর্মচারী হয়ে এমন আচরন মানতে পারিনা।ছাগলের ফার্মের কর্মচারী হয়ে পুরো ডেইরী ফার্মের বেশিরভাগ কাজ ডা: নাবিল ফারাবি স্যার তার মাধ্যমে করে। যার কারনে সে কাউকে তোয়াক্কা করেনা।এবিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোন সুরাহা মেলেনি। এ বিষয়ে প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নাবিল ফারাবির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এরশাদ ভাল ছেলে।পারিবারিক ভাবে সবার সংসারে সমস্যা সৃষ্টি হয়।এটা নিয়ে বাড়াবাড়ির কি দরকার আছে। তিন বছর আগে কি ঘটেছে সেগুলো শুনার সময় আমার নেই।পারলে আপনারা তাদের সমাধান করে দেন। না হলে সে জেলে যাবে কিছুদিন পর জামিনে নিয়ে আসব।তার কারনে আমার ডেইরী ফার্মেও ক্ষতি হোক সেটা চাইনা। তাকে দিয়ে অনেক কাজ করাতে পারি। বিয়ের কাবিন ও নির্যাতন নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি মো.রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে জান্নাত নামের এক মেয়ের মা অভিযোগ করেছে, তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।