লামা উপজেলায় বছর ব্যাপি সেচ সুবিধা পাকা ড্রেইন নির্মাণ কাজ ৮০ শতাংশ অগ্রগতি হওয়ার এলাকার এক ফসলি জমি তিন ফসলি জমিতে রুপান্তরিত হতে যাচ্ছে তাই খুশিতে আতœহারা স্থানীয় কৃষক ও কৃষি পরিবার। স্থায়ী পাকা ড্রেইন নির্মাণ সেচ প্রকল্প কাজ দ্রুত অগ্রগতি হওয়ায় উপজেলার দূর্গম এলাকা ও পৌরসভার এলকাতে ও ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে এমনটাই জানিয়েছেন কৃষক পরিবার। পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১৭ হাজার ৯ শত মিটার সেচ ড্রেইন নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। মোট ১৩ টি সেচ ড্রেইন নির্মাণ ও পাম্প মেশিন স্থাপন প্রকল্পে সর্বমোট ব্যায় হচ্ছে ১১২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সেচের জন্য ভূ -পরিস্থ নালা ব্যবহারের কারনে প্রচুর পানি অপচয় হয়। উপরন্তু কৃষি জমি নষ্ট হয়। পানির অপচয় রোধ ও কৃষি জমি সাশ্রয়ের লক্ষে ২০১৯ – ২০২০ অর্থ সাল হতে সেচের জন্য স্থায়ী ভাবে পাকা ড্রেইন সেচ নির্মাণের কার্যক্রম গ্রহন করেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। স্থানীয় কৃষক মোঃ বেলাল উদ্দীন জানান সেচ ড্রেইন স্থাপনের কারনে ৫০ শতাংশ সেচের পানি সাশ্রয় সহ ১৩ হাজার বিঘা জমি কৃষি খাতের আওতায় আসবে। এবং তাতে প্রতি বছর অতিরিক্ত ২৩ হাজার মেঃটন খাদ্য শস্য উৎপাদন করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন। এলাকাবাসি জানিয়েছেন বোরোধান উৎপাদনে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়, স্থায়ী ভাবে সেচ ড্রেইন নির্মাণ কাজের অগ্রগতি হওয়ায় আমরা আনন্দিত। কৃষকের উৎপাদিত ফসল বনায়ন ও কৃষিপণ্য বাজারজাত করনের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামীন সড়ক নির্মাণ সহ খাল পারাপারের লক্ষে পোপা খালের উপর পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ২০১৯ সালে ব্রিজের কাজ শুরু করে পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। চলতি বৎসর ২০২২ সালের মধ্যে ব্রীজটি সড়কের সঙ্গে চলাচলের উপযোগী করতে এপ্রোচের কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। গত ১৮ জানুয়ারী ২০২২ লামা উপজেলায় সেচ ড্রেইন নির্মাণ কাজ পরিদর্শনে আসেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস – চেয়ারম্যান নূরুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন কৃষি এ দেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বর্তমানে দেশে জিডিপির প্রায় এক – পঞ্চামাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। তাই কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কৃষি খাতে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।এ সময় তিনি জানান ড্রেইন নির্মান কাজ টেকসই ও গুনগত মান সঠিক পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। লামা পৌরসভার ৫ও৬নং ওয়ার্ডের সাবেক বিলছড়ি শাহজাহানের বাড়ি হতে আনিচ মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ১কোটি ১০লাখ টাকা ব্যয়ে ১হাজার ৫শত মিটার সেচ ড্রেইন ও পাম্প মেশিন স্থাপন, লামা পৌরসভার ৫ও৬নং ওয়ার্ডের কলিঙ্গাবিল মাষ্টার খলিফার বাড়ি হতে লামা মুখ পর্যন্ত ৫০লাখ টাকা ব্যয়ে ১হাজার মিটার সেচ ড্রেইন নির্মান ও পাম্প স্থাপন, ১হাজার ৫শত মিটার সেচ ড্রেইন ও পাম্প স্থাপন সহ ১১ টি প্রকল্পের কাজ প্রায় ৬০শতাংশ থেকে ৮০শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ত্রিদীপ চাকমা। এ বিষয়ে পার্ত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইয়াছির আরাফাত বলেন, বর্ষা মৌসুম ব্যতিত বাকি সময় গুলোতে শুধু পানির অভাবে প্রচুর জমি পতিত থাকে। এসব জমি চাষের আওতায় আনার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সেচ ড্রেন নির্মাণ কাজে গুরুত্বারোপ করে এ সব সেচ ড্রেন নির্মান করছে। এসব সেচ ড্রেন নির্মাণের ফলে কৃষি সেক্টরে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হবে। পাল্টে যাবে পার্বত্য কৃষি চিত্র। সূচিত হবে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে এসব সেচ ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে। উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলীদের সার্বিক মনিটরিং এ সব কাজ চলছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, সেচ ড্রেন নির্মাণের ফলে পাহাড় অনাবাদি বিস্তৃত জমিগুলোতে বছরে তিন ফসলি ধান উৎপন্ন করা সম্ভব হবে। উন্নয়ন বোর্ডের সাইট পরিদর্শক কৃষান দাশ জানান, তাদের নিবিড় তদারকির মাধ্যমে সেচ ড্রেইন নিমান কাজ চলছে। সরজমিনে লামা পৌরসভার সভার কলিঙ্গাবিল এলাকার মোঃ হেলালসহ কয়েকজনের সাথে আলাপকালে তারাও কাজের গুণগতমানে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।