সরিষার মৌ-মৌ সুগন্ধে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। মিরসরাই উপজেলায় মাঠ ছেয়ে গেছে সরিষা ফুলে। মাঠজুড়ে শুধু হলুদ ফুল। মিরসরাইতে সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখেমুখে আনন্দের রেখা ফুটেছে। প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। আবাদী-অনাবাদী জমিতে কৃষকরা এখন সরিষা চাষ করছেন। অনুকূল আবহাওয়া আর রোগবালাই কম থাকায় ভালো হয়েছে সরিষার আবাদ। ভোজ্যতেলের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় লাভের আশায় এই উপজেলার প্রান্তিক কৃষক পর্যায়ে সরষে চাষে আগ্রহ বাড়ছে। ফলন ও দাম ভালো হওয়ায় সরষে চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। উপজেলার কৃষি বিভাগ সূত্র জানা যায়, উপজেলার ৬০ হেক্টর জমিতে এ বছর সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছর থেকে ১০ হেক্টর বেশি সরিষা আবাদ হয়েছে। ধান বা অন্য ফসলের তুলনায় লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। মিরসরাইয়ে উপজেলায় ১নং করেরহাট ১৫ হেক্টর, ২নং হিঙ্গুলী ১২ হেক্টর, ৮নং দুর্গাপুর ১২ হেক্টর জমিতে বেশি সরিষার চাষ হয়েছে। উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, খৈয়াছড়া, কাটাছড়া সহ প্রায় সব ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন হলুদ রঙের সরষে ফুলের ছড়াছড়ি। হলুদের সমারোহ আর মৌমাছির কলতানে সরষে ফুলের সুগন্ধিময়ে সরযেক্ষেত দেখে যে কারও মন মুগ্ধতায় মেতে উঠবে। কয়েকজন চাষি জানান, অন্য যেকোনো আবাদের চেয়ে সরষে চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটিই কম লাগে। তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে সরষের ফলন পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকূলে আছে, তাই সরদের চাষ বেশি হয়েছে। করেরহাট ইউনিয়নের কাটাগাং চরের কৃষক জয়নুল আবেদীন জানান, সরষে চাষে রোপণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাড়তি তেমন কোনো খরচ নেই। শুধু জমিতে সার প্রয়োগ করতে হয়। এতে বাড়তি কোনো সেচ দিতে হয় না, যার ফলে সরষে চাষে আমরা কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছি। অপর অনেক কৃষকও সরষে চাষের দিকে ঝুঁকছেন। হিঙ্গুলী ইউনিয়নের কৃষক জাহিদুল আজিজ ও সাগর দাশ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কিছুদিন পরে দানা সরষে ঘরে তুলতে পারব। সাধারণত প্রতি বছর আমন ও ইরি এই দুই ফসলই আমরা কৃষকরা আবাদ করতাম। বাকি বেশির ভাগ সময় জমি পড়ে থাকত। এবারে সেই পতিত জমিতে আমরা সরষের আবাদ করছি। এতে করে এক মৌসুমে কমপক্ষে তিনবার ফসল আবাদ করা সম্ভব। এ বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী কাজী নুরুল আলম বলেন, ‘মিরসরাই উপজেলায় এই বছর ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ১০ হেক্টর বেশি। কৃষকের মাঝে ভালো মানের বীজ ও সার সরবরাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার সরিষার ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।