জমি তৈরি করে চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিনাজপুরের হিলির বোরো চাষিরা। এই উপজেলায় এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে এবং আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষকেরা তাদের কাঙ্খিত ফসল ঘরে তুলতে পারবে বলে আশাবাদী উপজেলা কৃষি দপ্তর। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে হিলির বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠা-া বাতাসকে উপেক্ষা করে মাঠে কাজ করছেন কৃষকেরা। বিঘাপ্রতি ২০ কেজি ডেপ, ১২ কেজি পটাস, ৫ কেজি জিপসাম এবং ৫ থেকে ৭ ভ্যান গোবর সার মিশিয়ে জমিতে পানি দিয়ে কাদা তৈরি করছেন বোরো চাষিরা। আবার বীজতলা থেকে চারা তুলে সেই তৈরি জমিতে তা রোপন করছেন কৃষকেরা। উপজেলায় প্রায় ৭০% জমিতে চারা রোপন হয়েছে, হয় তো সপ্তাহখানেকের মধ্য পুরো মাঠে বোরো ধানের চারা লাগানো শেষ হবে। ইরি বোরো ধান রোপনের শুরু থেকে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত সময় লাগে ৯০ দিন। কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বোরো চাষিদের খরচ হয় প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। গেলো বোরো মৌসুমে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় আবার দাম ভাল পাবার আশায় আছেন ইরি চাষিরা। হিলির মহাড়াপাড়ার কৃষক গোলাম মোস্তাফিজার রহমান মিলন বলেন, এবার আমি প্রায় ১৭ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করছি। বেশিঅর্ধেক জমিতে চারা রোপন হয়ে গেছে, আর অল্প বাঁকি আছে, তা কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। গতবারও ফলন সহ দাম ভাল পেয়েছি। আশা করছি এবারও বোরো ধানের ফলন সহ দামটাও মনোপুত পাবো। হিলির জালালপুরের কৃষক আকরাম হোসেন বলেন, হারা ছোট-খাটো কৃষক মানুষ, হামার বেশি আবাদি জমি নাই, মিচ্চে এ্যানা (অল্প) জায়গা আছে, ওটায় আবাদ করি। মানুষোক নিয়ে কাম করে নেউনা, নিজেই সব করি। বছরে ইরি আর আমন ধান লাগাউ, তাতে আল্লাহ দিলে ভালই আবাদ হয়, ভালই চলু। এবারও লাগাছি হারা, দেখু কি হয়? হাকিমপুর (হিলি) উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ১০৫ হেক্টর জমি। ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পুরন হয়েছে, এখনও অনেক কৃষকরা ধান চাষে ব্যস্ত আছে, আশা করছি ৮ হাজারের বেশি হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হবে। আমরা এই উপজেলায় সরকারি ভাবে ৩ হাজার বোরো চাষিদের বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করেছি। হাইব্রিট জাতের ধানের বীজ ২ কেজি করে ২১০০ কৃষককে দিয়েছি। আর ৮৩০ জন কৃষককে উপসি জাতের ধান বীজ ৫ কেজি ও ১০ কেজি ডেপ, ১০ কেজি এমওপি সার দিয়েছি। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সুপরামর্শ সহ সেবা দিয়ে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া ভাল থাকলে কৃষকেরা ভাল ফলন পাবে।