সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন

পরকালের চিন্তায় অনুপম গুণাবলির বিকাশ

মো. আবদুল মজিদ মোল্লা
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

পরকালের চিন্তা মানুষের পার্থিব জীবনকে সুশৃঙ্খল করে এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে। এ জন্য পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে আল্লাহ মানুষকে আল্লাহর স্মরণ, ধর্মীয় দায়িত্ব ও পরকালীন জীবনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং আল্লাহ মানুষের জন্য দৃষ্টান্তগুলো পেশ করেন, যেন তারা উপদেশ গ্রহণ করে। ’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ২৫) রাসুলুল্লাহ (সা.) পরকালীন জীবনকে প্রাধান্য দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করে বলেছেন, ‘তোমরা প্রাধান্য দাও চিরস্থায়ী জীবনকে ক্ষণস্থায়ী জীবনের ওপর। ’ (মুসনাদে আহমদ)
১. পরকালের চিন্তার অর্থ : পরকালের চিন্তার অর্থ হলো পরকালের ভালো ও মন্দ পরিণতি নিয়ে চিন্তা করা। যেমন সবাই জানে প্রত্যেক ভালো কাজের পরিণতি ভালো এবং প্রত্যেক মন্দ কাজের পরিণতি মন্দ। সুতরাং পরকালে ভালো ফলাফল পেতে হলে ভালো কাজ করতে হবে। একইভাবে উল্লিখিত হাদিসের প্রতি চিন্তা করলে দেখা যাবেÍপরকালীন জীবন স্থায়ী এবং পার্থিব জীবন ক্ষণস্থায়ী। সুতরাং বুদ্ধিমানের কাজ হবে অস্থায়ী জীবনের ওপর স্থায়ী জীবনকে প্রাধান্য দেওয়া।
২. পরকালীন চিন্তায় অনুপম গুণাবলির বিকাশ : পরকালীন জীবনের চিন্তা ও তাকে প্রাধান্য দেওয়ার কিছু সুফল হলো, এর দ্বারা আল্লাহভীতি, অল্পে তুষ্টি, নিষ্কলুষ বিশ্বাস, আল্লাহর দাসত্ব, দ্বিনের ওপর দৃঢ়তা, শালীনতা, মাখলুকের দাসত্ব থেকে মুক্তি, নির্ভীকতা, সদাচার ও আল্লাহর পরিচয় লাভের মতো গুণাবলি সৃষ্টি হয়। আর কোরআন-হাদিসের আলোকে এ গুণাবলির গুরুত্ব পরিসীম।
আল্লাহভীতি : পবিত্র কোরআনের বহু স্থানে আল্লাহভীতি অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কোরো। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০২)
৩. অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার : পরকালীন চিন্তা মানুষকে অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত রাখে। কেননা মুমিন জানে পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত জীবনেই তাকে পরকালের সম্বল জোগাড় করে নিতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মানুষের ইসলাম পালনের সৌন্দর্য হলো অনর্থক কাজ ও কথা পরিহার করা। ’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯৭৬)
৪. অল্পে তুষ্টি : অল্পে তুষ্টি মানুষকে অবৈধ উপার্জন ও পার্থিব জীবনের মোহ থেকে রক্ষা করে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সে ব্যক্তি সফল যে ইসলাম গ্রহণ করেছে, যাকে পর্যাপ্ত জীবিকা ও আল্লাহ অল্পে তুষ্টি দান করেছেন। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১০৫৪)
৫. পরকালে বিশ্বাস : পরকালের ওপর যার বিশ্বাস যত দৃঢ়, সে তত বেশি পাপমুক্ত। এ জন্য আল্লাহ মুমিনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন, ‘তারা আখিরাতের ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৪) ৬. দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা : যাদের সামনে পরকালের জীবন উপস্থিত থাকে, দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা তাদের জন্য সহজ হয়ে যায়। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই (তারাই প্রকৃত মুমিন) যারা বলে, আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ এবং তার ওপর অবিচল থাকে। ’ (সুরা হা-মিম-সাজদা, আয়াত : ৩০)
৭. ইবাদতের ধারাবাহিকতা : পরকালের চিন্তা মানুষকে আল্লাহর ইবাদত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেয় না। আর আল্লাহর নির্দেশ হলো, ‘তোমরা প্রতিপালকের ইবাদত কোরো তোমার কাছে সুনিশ্চিত বিষয় (মৃত্যু) আসা পর্যন্ত। ’ (সুরা হিজর, আয়াত : ৯৯) আল্লাহ সবাইকে পরকালীন জীবনের পাথেয় সংগ্রহের তাওফিক দান করুন। আমিন। লেখক : সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট, ঢাকা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com