যশোর শিক্ষাবোর্ডে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেশসেরা হয়েছে। সারাদেশের মধ্যে সর্বাধিক পাস করেছে এই শিক্ষাবোর্ডে। এারের পরীক্ষায় পাসের হার ৯৮.১১। যা যশোর শিক্ষাবোর্ডের ইতিহাসে এইচএসসিতে সর্বোচ্চ। ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এক লাখ ২৮ হাজার একশ’ ৬৩ জন। এদের মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ২৫ হাজার সাতশ’ ৪১ জন। অকৃতকার্য হয়েছে মাত্র দু’ হাজার চারশ’ ২২ জন। এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতেও রেকর্ড গড়েছে। ২০ হাজার আটশ’ ৭৮ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। তবে, ফলাফলে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। যশোর শিক্ষাবোর্ডে ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৮ হাজার নয়শ’ ৭০ জন পরীক্ষা দেয়। এরমধ্যে ছেলে ১০ হাজার পাঁচশ’ ৮১ ও মেয়ে আট তিনশ’ ৮৯ জন। পাস করেছে ১৮ হাজার ২১ জন। এরমধ্যে ছেলে নয় হাজার নয়শ’ ৯০ ও মেয়ে আট হাজার ৩১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ হাজার তিনশ’ ৮৮ জন। এদের মধ্যে ছেলে পাঁচ হাজার তিনশ’ ৭৬ ও মেয়ে পাঁচ হাজার ১২ জন রয়েছে। মানবিক বিভাগ থেকে ৯১ হাজার নয়শ’ ৮৫ জন পরীক্ষা দেয়। এরমধ্যে ছেলে ৪৫ হাজার ২২ ও মেয়ে ছিল ৪৬ হাজার নয়শ’ ৬৩ জন। পাস করেছে ৯১ হাজার দুশ’ ৩০ জন। এদের মধ্যে ছেলে ৪৪ হাজার পাঁচশ’ ৩৭ ও মেয়ে ৪৬ হাজার ছয়শ’ ৯৩ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে আট হাজার পাঁচশ’ ৭৬ জন। এরমধ্যে ছেলে দু’ হাজার পাঁচশ’ ৫২ ও মেয়ে ছয় হাজার ২৪ জন। এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে পরীক্ষা দেয় ১৭ হাজার দুশ’ আটজন। এরমধ্যে ছেলে ১০ হাজার একশ’ তিন ও মেয়ে সাত হাজার একশ’ পাঁচজন। এদের মধ্যে পাস করেছে ১৬ হাজার চারশ’ ৯০ জন। তারমধ্যে ছেলে নয় হাজার পাঁচশ’ ৭৯ ও মেয়ে ছয় হাজার নয়শ’ ১১ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক হাজার নয়শ’ ১৪ জন। এরমধ্যে ছেলে সাতশ’ ৭৯ ও মেয়ে এক হাজার একশ’ ৩৫ জন রয়েছে। পাসের হার এবং জিপিএ-৫ পাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। যশোর শিক্ষাবোর্ডে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে একশ’ ১৬ টি কলেজে। একজনও পাস করেনি এমন কলেজ এবার একটিও নেই। জেলা ওয়ারি পাসের হাসে বোর্ডের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে সাতক্ষীরা। দ্বিতীয় স্থানে খুলনা। তৃতীয় হয়েছে যশোর। এছাড়া, চতুর্থ ঝিনাইদহ, পঞ্চম নড়াইল, ষষ্ঠ মাগুরা, সপ্তম চুয়াডাঙ্গা, অষ্টম কুষ্টিয়া, নবম বাগেরহাট ও দশম হয়েছে মেহেরপুর। কেন এতো পাসের হার এই প্রশ্নের জবাবে যশোর শিক্ষাবোর্ডে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানিয়েছেন, করোনার কারণে মাত্র তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ কারণে পরীক্ষার্থীদের অন্যান্য বিষয়ের চিন্তা মাথায় ছিল না। ফলে, তাদের জন্য সহজ হয়েছে। পাশাপাশি অ্যাসাইনমেন্ট বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। জেএসসিতে ২৫ ও এসএসসিতে ৭৫ ধরে অন্যান্য বিষয়ের ফল নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন মানসম্পন্ন ছিল। এ কারণে পরীক্ষার্থীরা যথাযথভাবে উত্তর দিতে পেরেছে। এ কারণে পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র জানিয়েছেন, অন্যান্য বছর বিকল্প প্রশ্ন কম থাকতো। সেই জায়গায় ২০২১ সালের পরীক্ষায় বিকল্প প্রশ্নের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। এটিও পাসের হার বৃদ্ধির একটি কারণ। বেলা ১২ টায় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ফলাফলের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেন যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিদর্শক কেএম রব্বানী, বিদ্যালয় পরিদর্শক ডক্টর বিশ্বাস শাহিন আহমদ, উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (উচ্চ মাধ্যমিক) সমীর কুমার কুন্ডু, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন।