নিত্যপণ্যের দাম কোনভাবেই নাগালের কাছে আসছেনা। নরসিংদীর মনোহরদীতেও হু-হু করে বাড়ছে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপণ্যের দাম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। পণ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি তাদের আয়। তাই পরিবার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে এসব মানুষের। আয়ের সঙ্গে খরচের ভারসাম্য রাখতে গিয়ে নিম্ন-মধ্যবিত্তদের প্রতিদিনই কাটছাঁট করতে হচ্ছে বাজার তালিকা। এভাবে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের মতে, ব্যয় এতই বেড়েছে যে জীবন চালানো দায় হয়ে পড়েছে। বাজার ব্যবস্থার ওপর সরকারের ‘নিয়ন্ত্রণ নেই’ উল্লেখ করে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়ছে বলেও ?অভিযোগ করেন তাঁরা। সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে জানা গেছে, খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা লিটার। গত বছর এই তেলের দাম ছিল ৯০ থেকে ১০৫ টাকা। খোলা পাম ওয়েলের দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা যা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। তবে বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায়। চিনির দাম ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ৩৩ থেকে ৩৫ টাকায়। প্যাকেট আটা ৪০-৪৫ টাকা। সরু চালের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। গত বছর মোটা চালের দাম ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কিন্তু এখন ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। বেড়েছে মসুর ডালের দামও। মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। গত বছর এ ডালের দাম ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। মোটা দানার ডালের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। তা ছাড়া পেঁয়াজের দাম ৫০ টাকা, রসুন ৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা,শষা ৮০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মুরগি ব্রয়লার ১৫০, লেয়ার ৩০০, কক ২৭০ ও দেশী ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর গরু ও খাসির মাংশ সেতু মধ্যবিত্তের স্বপ্ন। মো. হাবিবুর রহমান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘বাজারে আসলেই মাথা গরম হয়ে যায়। সবজি বলেন আর চাল ডাল তেল বলেন কোনোটার দামই কম না। দিনদিন নিত্যপণ্যের দাম যে হারে রাতারাতি বাড়ছে, তাতে আমার মত নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষদের বাজার করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
তাছাড়া সামনে আসছে রমজান মাস। তাই এখনি বাজার নিয়ন্ত্রণ না করলে অবস্থা আরও খারাপ হবে আমাদের।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা যা বেতন পাই তা দিয়ে মাসের ১৫ দিন সংসার চালানোই কঠিন। দাম বাড়েনি এমন কোন পণ্য নেই। সব পণ্যের দাম আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে না। যেমন, চাল, ডাল, তেল, আটা ও মাংস ইত্যাদি। এগুলোতে সরকারের মনিটরিং থাকে না বলেই দাম বাড়ে। এসব পণ্যে সরকারের জোর মনিটরিং দরকার। সঙ্গে অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রে সাপ্লাই চেনের ওপর লক্ষ্য রাখা উচিত।’খুচরা বিক্রেতা মো. রিটন মিয়া বলেন, ‘আমাদের পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনে আনতে হচ্ছে। সেই জন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানে খুচরা ব্যবসায়ীদের কিছু করার নেই।’ পাইকারি মালিক আসাদ বলেন, ‘পাইকারিতে আমাদের মাল বেশিতে কিনতে হয় বলেই বিক্রিও করতে হয় বেশি। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।’