শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৩ অপরাহ্ন

৫ সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বিধবার মানবেতর জীবন

বকশীগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

জামালপুরের বকশীগঞ্জে আগুনে পুড়ে বসত ঘরসহ ভস্মীভূত হয়েছে সবকিছু। পড়নের কাপড় ছাড়া পুড়ে গেছে সব। সব কিছু হারিয়ে দিশেহারা বিধবা নারী অসহায় নবিয়ে বেগম(৪৮)। ৫ সন্তানকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। গত শনিবার রাতে বকশীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন কামালপুর গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতেই সব কিছু শেষ হয়ে যায় তার। স্থানীয়রা জানান, গত শনিবার রাতে ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নের দক্ষিন কামালপুর এলাকার মৃত সাখাওয়াত হোসেনের বসত ঘরে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে সাখাওয়াত হোসেনের বসত ঘর,ঘরের ভিতর থাকা প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র ও রান্না ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সাখাওয়াতের ভাই আমিনুলেরও একটি ঘর পুড়ে যায়। বিদ্যুতের শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর সদস্যরা যখন আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে ততক্ষনে সবকিছু পুড়ে কয়লায় পরিনত হয়েছে। নবিয়ে বেগম জানান, তার স্বামী সাখাওয়াত হোসেন দীর্ঘদিন নানা রোগে ভুগছিলেন। সহায় সম্বল যতটুকু ছিলো তার সবটুকু দিয়ে স্বামীর চিকিৎসা করিয়েও বাচাঁতে পারেন নি। গত প্রায় ১০ মাস পূর্বে মারা যান তিনি। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যাক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন নবিয়ে বেগম। নবিয়ে বেগম নিজেও কিডনি রোগে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছে তার দুটি কিডনিই নষ্ট। উন্নত চিকিৎসা করতে হবে। টাকার অভাবে ভালো চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তিন মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। শনিবার রাতে চোখের সামনেই আগুনে সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ যেনো মরার উপর খড়াঁর ঘা। চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন। তার জমজ ১০ বছর বয়সী দুই শিশু কন্যা স্বর্না ও বন্যা কয়লার স্তুপে পুড়ে যাওয়া বই ও মাটির খেলনা খোজঁছেন আর কান্না করছেন। তীব্র শীতে ছেলে মেয়েদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাবন করছেন তিনি। নবিয়ে বেগমের মেয়ে স্বাধীনা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাবা নেই। মা নিজেও কিডনি রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত। এ অবস্থায় আগুনে পুড়ে আমাদের সব শেষ হয়ে গেছে। আমরা এখন কোথায় থাকবো কিভাবে চলবো। তাই বাচাঁর তাগিদে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতা চান তিনি। ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান লাকপতি বলেন, পরিবারটি একেবারে অসহায়। আগুনে পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে। এই মুহুর্তে থাকার জন্য তাদের বসত ঘরটি নির্মান জুরুরী। দুই একজন ব্যাক্তিগত ভাবে সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছেন। তবে প্রয়োজনের তোলনায় তা খুবই কম। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে যতটুকু পারি সহযোগীতার হাত বাড়িয়েছি। প্রয়োজনীয় খাবার ও ঘরের কাঠের ব্যবস্থা করেছি। সমাজের বিত্তবানরা সহযোগীতার হাত বাড়ালে দ্রুত ঘর নির্মান করে দেওয়া সম্ভব হবে। এছাড়া পরিষদের পক্ষ থেকে পরিবারটিকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনমুন জাহান লিজা বলেন, তাৎক্ষনিক উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা, ৬ বান্ডেল ঢেউটিন, শুকনো খাবার ও কম্বল দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com