সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৭ অপরাহ্ন

তিন শ্রেণীর সালাত আদায়কারী

হাফেজ জিয়াউর রহমান:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

তিন শ্রেণীর সালাত আদায়কারী সালাত আদায় করা সত্ত্বেও জাহান্নামে যাবে। এমন তিন শ্রেণী সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো- ১. যারা অলসতা করে সঠিক সময়ে সালাত আদায় করে না, তাদের সালাত কবুল হবে না। তাদের জন্য পরকালে শাস্তি রয়েছে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর দুর্ভোগ ওই সব মুসল্লির জন্য, যারা তাদের সালাত সম্পর্কে উদাসীন’ (সূরা মাউন, আয়াত : ৪-৫)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসিরবিদরা লিখেছেন, এরা হলো সেই সব লোক, যারা সালাত থেকে উদাসীন ও খেল-তামাশায় ব্যস্ত। উদাসীন লোকদের মধ্যে একদল এমন আছে, যারা রুকু-সিজদা, ওঠা-বসা যথাযথভাবে করে না। কিরাত, দোয়া ও তাসবিহ যথাযথভাবে পাঠ করে না। কোনো কিছুর অর্থ বোঝে না বা বোঝার চেষ্টাও করে না। আজান শোনার পরও যারা অলসতাবশে এবং সালাতে দাঁড়িয়ে অমনোযোগী থাকে।
২. যারা দায়সারাভাবে সালাত পড়ে এবং সালাতে বিধিবিধানগুলো যথাযথভাবে পালন করে না। আবু হুরায়রা রা: বলেন, ‘রাসূল সা: মসজিদে প্রবেশ করেন। তখন জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় শেষে রাসূলুল্লাহ সা:কে সালাম দিলো। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বলেন, তুমি যাও, পুনরায় সালাত আদায় করো। কেননা, তুমি সালাত আদায় করোনি। এভাবে লোকটি তিনবার সালাত আদায় করল। রাসূল সা: তাকে তিনবারই ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম করে বলছি, এর চেয়ে সুন্দরভাবে আমি সালাত আদায় করতে জানি না। অতএব আমাকে সালাত শিখিয়ে দিন! অতঃপর রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে তখন তাকবির দেবে। তারপর কুরআন থেকে যা পাঠ করা তোমার কাছে সহজ মনে হয়, তা পাঠ করবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। অতঃপর সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর ধীরস্থিরভাবে সিজদা করবে। অতঃপর মাথা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসবে। আর প্রত্যেক সালাত এভাবে আদায় করবে’ (বুখারি-৭৫৭)।
অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় চোর ওই ব্যক্তি যে তার সালাতে চুরি করে। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে কিভাবে সালাতে চুরি করে? তিনি বলেন, ‘সে সালাতে রুকু ও সিজদা পূর্ণ করে না’ (মুসনাদে আহামাদ-২২৬৯৫)।
পার্থিব জীবনে মানুষ মানুষের ধন-সম্পদ, টাকা-পয়সা চুরি করে, এটাকে সামান্য চুরি বলা যেতে পারে। কিন্তু যে ব্যক্তি নিজের মহামূল্যবান সম্পদ, জান্নাতে যাওয়ার পুঁজি, শ্রেষ্ঠতম ইবাদত চুরি করে সে-ই প্রকৃতপক্ষে বড় চোর।
৩. যারা লোক দেখানো সালাত আদায় করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে’ (সূরা মাউন, আয়াত-৬)।
মুনাফিকরা মানুষকে দেখানোর জন্য সালাত পড়ে। যেমন- মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহকে ধোঁকা দেয়, আর তিনিও তাদের ধোঁকায় ফেলেন। যখন ওরা সালাতে দাঁড়ায়, তখন অলসভাবে দাঁড়ায়- লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। আর তারা আল্লাহকে অল্পই স্মরণ করে’ (সূরা নিসা, আয়াত-১৪২)।
মহান আল্লাহ লোক দেখানো ইবাদতকারীকে তার আমলসহ প্রত্যাখ্যান করেন। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি অংশীবাদিতা (শিরক) থেকে সব অংশীদারের তুলনায় বেশি মুখাপেক্ষীহীন। যে ব্যক্তি কোনো আমল করে এবং তাতে অন্যকে আমার সাথে শরিক করে, আমি তাকে ও তার আমলকে বর্জন করি’ (মুসলিম-২৯৮৫)। মহান আল্লাহ আমাদের যথাযথভাবে সালাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমীন। লেখক: সৌদি আরব প্রবাসী।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com