অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক এবং ভোজ্য তেলের মধ্যে সুর্যমুখীর তেল অত্যন্ত উপকারী বিধায় এখানকার চাষীরা সুর্যমুখী চাষের দিকে ঝুকিয়ে পড়েছে। নরসিংদী কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুশে নরসিংদী জেলার ৬টি উপজেলায় ১০৫ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। তার মধ্যে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৫ হেক্টর, শিবপুরে ১৫ হেক্টর, পলাশে ২০ হেক্টর , বেলাবতে ২৫ হেক্টর, মনোহরদীতে ১০ হেক্টর এবং রায়পুরাতে ৩০ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। নরসিংদী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন জানিয়েছেন, কম খরচে অধিক ফসল উৎপাদনে ভোজ্য তেলের চাহিদা পুরণ করা সম্ভবন। এছাড়া নিরাপদ খাদ্য হিসেবে তেল জাতীয় ফসল সুর্যমুখী হাজিন ৩৩ চাষ অন্যতম। সল্প পরিমাণ সার প্রয়োগ, কিটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যে ফসল ঘরে তুলা যায় এবং স্থানীয় মিলে তেল আহরন করে সরিষা তেলের মত ব্যবহার করা যায়। দাম অনেক কম এবং উপকারও বেশী। সুর্যমুখী গাছগুলো ৬/৭ফুট লম্বা হয়ে ফুল ধরে। অপর দিকে সুর্যমুখীর গাছ ও বুশি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মো: মাজহারুল ইসলাম জানান, আর খাবোনা সয়াবিন, সুর্যমুখী আনবে নতুন দিন। এ বছর তিনি ৭ একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল সুর্যমুখীর চাষ করেছেন। সবগুলো গাছেই ফুল ধরেছে। ফলনও ভাল হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, সুর্যমুখী তেলের তুলনা নেই। এছাড়া সারা বছর নিজের হাতের তেল ও জ্বালানী পাবো। এতে করে অন্যান্য তেলের চেয়ে সুর্যমুখী তেলের একটা বড় অংশের আর্থিক সাশ্রয় হবে। শিবপুর উপজেলার কুন্দারপাড়া গ্রামের কৃষক মো: ফরিদ উদ্দিন জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছর তিনি নতুন করে ২ একর জমিতে সুর্যমুখীর আবাদ করেছেন। সকল গাছে ফুল ধরেছে। আশা করছি ফলন খুব ভাল হবে। সারা বছর নিজের হাতের তেল ও জ্বালানি পাবো। নরসিংদী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: সাইদুর রহমান জানান, দীর্ঘ দিন যাবৎ রান্নায় সয়াবিন তেল ব্যবহারে মানুষ অভ্যস্ত। তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ সেটা আমাদের অনেকেরই অজানা। সুর্যমুখী তেল সরিষার তেলের চেয়েও অনেক মানসম্মত।