শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৮ অপরাহ্ন

নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে অথচ সরকার নির্বিকার : গয়েশ্বর

খবরপত্র ডেস্ক
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে আর সরকার নির্বিকার রয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, প্রত্যেকটি জিনিসপত্রের দাম লাগামহীন। করোনার কারণে শিল্প কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। বেকারত্ব বাড়ছে। নতুন কোনো শিল্পকারখানা নেই। মানুষের আয়ের, কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই। দিনমজুররা কাজ পায় না। বাজারের জিনিসপত্রের দাম এমন অবস্থায়, একটি নীরব দুর্ভিক্ষ। সরকার নির্বিকার, তাদের কোনো দায় নেই। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদলের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ঘরের নিরাপত্তা নেই উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, ঘরে গেলেও খুন হবেন। গুম হবেন। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ চলতে পারে না। ১০ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই ১০ লাখ কোটি টাকা যদি দেশে বিনিয়োগ হত তাহলে অনেক শিল্প কারখানা হত। অনেক রফতানিযোগ্য পণ্য উৎপাদিত হত। কর্মসংস্থান হত। তাহলে আমাদের যুব সমাজকে ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরতে হত না। দেশে যদি কাজ থাকত তাহলে কোনো যুবক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে বিদেশে যেত না। সেই দিকে সরকারের কোনো নজর নেই। বিএনপির এই নেতা বলেন, ওপার থেকে সীমান্তে একের পর এক গুলি করে পাখির মতো মানুষ মারছে। বর্ডার গার্ড নিরব, তাহলে অস্ত্র কেনো? অস্ত্র দেশের মানুষকে মারার জন্য! জনগণের টাকায় অস্ত্র কেনে সরকার। সেই অস্ত্র ব্যবহার করে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করে তাদের বিরুদ্ধে। গণতন্ত্র যদি না থাকে তাহলে আইনের শাসন থাকে না, জবাবদিহিতা থাকে না। যখন গণতন্ত্র থাকে না তখন সব কিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, লাগামহীন হয়ে যায়। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে পড়ে টানাটানি।
গয়েশ্বর আরো বলেন, সরকার মনে করে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আক্রমণ নিয়ে বিশ্ববাসী ব্যস্ত। পুলিশ বাহিনী মনে করছে তাদের ওপর আর কোনো নিষেধাজ্ঞা আসবে না। আসবে কি আসবে না তা জানি না। আমি বলব সোজা পথে সোজাভাবে চলুন। ভালো হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। জনগণের টাকায় কেনা অস্ত্র দিয়ে, পোশাক পরে প্রফেশনাল গুন্ডা-মাস্তানের মতো যদি জনগণের মুখোমুখি দাঁড়ান তাহলে দেশে গৃহযুদ্ধ অনিবার্য। কারণ, কেউ হাত গুটিয়ে ঘরে বসে থাকবে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, সরকারি দলের লোকদের বলব, ভালো হয়ে যান। ভোটাধিকার ফেরত দিন। দেশে যদি এত উন্নয়ন করেন তাহলে জনগণের কাছে যেয়ে ভোট চাইতে ভয় পান কেন। কারণ, উন্নয়নের নামে জনগণের পকেট কেটেছেন। উন্নয়নের নামে জনগণকে ভোটাধিকার বঞ্চিত করেছেন। তাই জনগণের মন আজ বিক্ষুব্ধ, উত্তপ্ত। যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটবে। এই বিস্ফোরণ ঠেকিয়ে রাখার ক্ষমতা এই সরকারের নেই।
তিনি বলেন, সরকারি কর্মচারী-যাদের বেতন ভাতা জনগণের টাকায়-তাদেরকে বলব, জনগণের পক্ষে আসুন, জনগণের পক্ষে নামুন। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন না। দেশটাকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দেবেন না। কারণ, দেশটা আমার আপনার সবার। দেশটা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের। তিনি আরো বলেন, অবিচারের প্রথম শিকার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দ্বিতীয় শিকার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমারা অপেক্ষায় আছি, আমাদের অনেক জেল দিয়েছেন, সাজা দিয়েছেন। আমাদের হয়ত জেলে দেবেন, সাজা দেবেন, কারাগারে দেবেন। তারপরো আমার মনে হয় আপনাদের শেষ রক্ষা হবে না।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামসহ যুব দলের নেতারা। যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল ১০টার আগে থেকেই খ- খ- মিছিলে ব্যানার-ফেস্টুন হাতে নিয়ে নেতা-কর্মীরা প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে এ সময় প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com