রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৩৮ অপরাহ্ন

রাজধানীতে হঠাৎ বেড়েছে খুন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৭ মার্চ, ২০২২

রাজধানীতে হঠাৎ বেড়েছে খুনোখুনি। বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারীরা। মুহূর্তেই কেড়ে নিচ্ছে তাজা প্রাণ। গতকাল রোববার ভোরে মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায় এক দন্ত চিকিৎসককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে ছিনতাইকারীরা। এছাড়া শনিবার সন্ধ্যায় সবুজবাগ থানা এলাকার বেগুনবাড়ি মাস্টারগলির একটি ভবনের ফ্ল্যাটে ঢুকে তানিয়া নামের এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। নিহত তানিয়ার তিন বছর বয়সী মেয়ে ও ১০ মাসের ছেলেকে রক্তমাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহজাহানপুরে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রাণ হারান মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু (৪৫) ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি (১৮)। ওই ঘটনায় টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হন। এসব ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
জানা গেছে, নোয়াখালী যাওয়ার জন্য আজ ভোরে শেওড়াপাড়ার বাসা থেকে বের হন ডা. বুলবুল হোসেন (৩৮)। তিনি তার সহকারীকেও ফোন করেছিলেন, তবে তার সহকারী তখনও পৌঁছাননি। বাসার সামনেই ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তিনি। ছিনতাইকারীরা এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তাকে। তার কাছে টাকা, একটি মোবাইল ছিল। উরুতে ছুরিকাঘাত করে পকেটের মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর পথচারীরা বুলবুলকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত বুলবুল হোসেন মগবাজারের ‘রংপুর ডেন্টাল’ নামের একটি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। গরীব রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়ার কারণে প্রশংসিত ছিলেন তিনি।
হৃদয়বিদারক আরেকটি ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর সবুজবাগ এলাকায়। শনিবার সন্ধ্যায় তিন বছর বয়সী মেয়ে তার মায়ের খুনের ঘটনা পাশের বাসায় গিয়ে বলে। এরপর প্রতিবেশীরা ৯৯৯-এ ফোন করেন। এ খবর পেয়ে সবুজবাগ থানা এলাকার বেগুনবাড়ি মাস্টার গলির চারতলা ভবনের দোতলার ফ্ল্যাটে গিয়ে তানিয়া নামের এক নারীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তানিয়ার পাশে তিন বছর বয়সী মেয়ে ও ১০ মাসের ছেলেকে পাওয়া যায় রক্তমাখা অবস্থায়। সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরাদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পর তিন বছর বয়সী মেয়ে বাসা থেকে বের হয়ে পাশের ফ্ল্যাটে দরজায় নক করে। সেখান থেকে লোকজন বের হয়ে পুলিশে খবর দেয়। আর দশ মাস বয়সী ছেলে সন্তানের অবস্থা দেখে তাকে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, আমরা ধারণা করছি, ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় বাধা দিলে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় তার তিন বছর বয়সী মেয়ে শিশুকে এবং ১০ মাস বয়সী সন্তানকে স্কচটেপ দিয়ে মুখ পেঁচিয়ে রাখা হয়। হত্যাকারী পালিয়ে যাওয়ার সময় রান্নাঘরের গ্যাসের চুলার গ্যাস অন করে যায়, যাতে করে ঘরে আগুন লেগে যায়। নিহতের মোবাইল ফোনটিও নিয়ে যায়।
এসি মেরামতের কথা বলে খুনিরা বাসায় ঢুকেছিলেন বলে ধারণা পুলিশের। তবে বাসা থেকে কী কী হারানো গিয়েছে এ বিষয়ে প্রাথমিকভাবে বিস্তারিত জানতে পারেনি তারা।
জানা গেছে, চার তলা ভবনের দোতলায় দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন এ গৃহবধূ। তার স্বামী মাইদুল ইসলাম ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেকনিশিয়ান হিসেবে চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। ঘটনাস্থলে বাড়ির মালিকের ছেলে মাহিম আহমেদ জানান, গত দেড় বছর ধরে এ দম্পতি এ বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তানিয়ার স্বামী মাইদুল প্রথমে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কাজ করতেন। পাঁচ মাস আগে ফরিদপুরে বদলি হন। তখন থেকে তিনি সেখানে থাকেন। এর আগে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে রাত ১০টার দিকে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু (৪৫) শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার থেকে বাজার করে মাইক্রোবাসে বাসায় ফিরছিলেন। গাড়িটি শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেটপরা এক সন্ত্রাসী তাকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। এতে টিপু (৪৫) ও রিকশা আরোহী সামিয়া আফরিন প্রীতি (১৮) মারা যান। প্রীতি পুরান ঢাকার একটি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com