টানা খরায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই লেকে পানির স্তর দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। পানির স্তর কমে যাওয়ায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২টি ইউনিট বন্ধ রাখা হয়েছে। পানির স্তর আরো কমলে আরেকটি ইউনিটও বন্ধ রাখতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কর্তৃপক্ষ। আপাতত বৃষ্টির কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ারও কোনো সম্ভাবনা নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। রবিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, ৫টি ইউনিটের মধ্যে বর্তমানে কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২টি ইউনিট সচল রয়েছে। সচল ইউনিট ২টি হলো ২ নম্বর এবং ৩ নম্বর ইউনিট। ২ নম্বর ইউনিট থেকে বর্তমানে ৩৫ মেগাওয়াট এবং ৩ নম্বর ইউনিট থেকে ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের পুরোটাই সঞ্চালন করা হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী এ টি এম আবদুজ্জাহের কাপ্তাই লেকে পানি হ্রাস পাবার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “রুলকার্ভ (পানির পরিমাপ) অনুযায়ী কাপ্তাই লেকে এই মুহূর্তে (২৭ মার্চ) ৮৯ ফুট মীন সি লেভেল (এমএসএল) পানি থাকার কথা কিন্তু লেকে এখন পানি রয়েছে ৮৫ ফুট (এমএসএল)। লেকে পানি কম থাকায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সবগুলো ইউনিট একযোগে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অবশ্য কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটটি বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য বর্তমানে বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু আর সব ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম থাকা সত্ত্বেও পানির অভাবে চালু করা যাচ্ছে না।” কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সচরাচর ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে বৃষ্টি হয় না। প্রতি বছর খরায় এই সময় কাপ্তাই লেকে পানি কমে যায়। তখন কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ইউনিটের সংখ্যা কমিয়ে দেয়। অপর একটি সূত্র জানায়, কোনো কোনো সময় জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসেও ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে। সেরকম হঠাৎ করে বৃষ্টি নামলে কাপ্তাই লেকে পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। তখন বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি করা হবে। এখন বৃষ্টি আসার অপেক্ষায় আকাশের দিকে চেয়ে থাকা ছাড়া কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের আপাতত কিছু করার নেই বলে অভিমত তাদের।