শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ন

গণকমিশন ইসলাম বিদ্বেষী চেহারা উন্মোচিত করেছে: হেফাজত

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১২ মে, ২০২২

জঙ্গিদের অর্থায়ন ও দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে কাজ করছেÍ এমন অভিযোগ এনে ১১৬ জন ধর্মীয় বক্তার একটি তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দিয়েছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত গণকমিশন। মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে গণকমিশনের এই তালিকার বিষয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘আমরা আজ নির্মূল কমিটির সমন্বয়ে গঠিত তথাকথিত গণকমিশনের করা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এই সংগঠনটি বরাবরের মতোই নিজেদের ইসলাম বিদ্বেষী চেহারা জাতির সামনে উন্মোচিত করেছে। তাদের এই শ্বেতপত্র যে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং মিথ্যা তথ্যে ভরপুর, এটি সমগ্র দেশবাসীর সামনে দিবালোকের ন্যায় পরিষ্কার।’
হেফাজত আমির বলেন, ‘শাহবাগী এই সংগঠন প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই নানাভাবে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার পাঁয়তারা চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ তারা দেশবরেণ্য ওলামা-মাশায়েখ এবং ইসলামি আলোচকদের এ তালিকা প্রকাশ করে চরম ধৃষ্টতা প্রদর্শন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। দেশবরেণ্য ইসলামি আলোচকদের নামে অমূলক এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ করে তথাকথিত গণকমিশনের দায়িত্বশীলরা নিজেদের গ্রহণযোগ্যতাই হারিয়েছে। বাস্তবতা বিবর্জিত এসব কথাবার্তা বলে নিজেদেরকে জাতির সামনে চরম উপহাসের পাত্রে পরিণত করেছে।’
উদ্বেগ প্রকাশ করে হেফাজত আমির বলেন, ‘এসব বানোয়াট বক্তব্যের কারণে দেশে চরম অশান্তি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অতএব, যারা এসব উসকানিমূলক কর্মকা- করছে, সরকার যেন তাদের শক্ত হাতে প্রতিহত করে। ওয়াজ মাহফিল শান্তি-সমৃদ্ধি ও আদর্শ সমাজ গঠন ও সমাজ সংস্কারের উত্তম মাধ্যম। এর মাধ্যমে মানুষকে ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণের পথ নির্দেশ করা হয়। সমাজের সব অনাচার, অন্যায় এবং ভুল থেকে মানুষকে বিরত রাখা হয়। ইসলামি আলোচকরা ধর্মের বিশুদ্ধ বার্তা মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বহুমুখী ত্যাগ করে থাকেন।’ আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, ‘আজ দেশ ও জাতির জন্য পরম কল্যাণকর এ কাজটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার লক্ষ্যে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে তথাকথিত গণকমিশন। দুদকে এই মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে তারা দেশ-জাতি, সমাজ এবং ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তারা আলেম উলামাদেরকে সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর চক্রান্ত করছে। সরকার যদি এখনই শক্ত হাতে তথাকথিত এই সংগঠনকে দমন না করে তাহলে ইসলাম প্রিয় আপামর তৌহিদী জনতা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।’
‘বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বানানোর পাঁয়তারা’: ‘আলেমদের বিরুদ্ধে কথিত ‘গণকমিশন’ ও শ্বেতপত্র’ বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কা বানানোর পাঁয়তারা’ – ছবি : সংগৃহীত মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস তদন্তে কথিত ‘গণকমিশন’ কর্তৃক এক হাজার মাদরাসা ও পরশপাথরতুল্য আলেমদের বিরুদ্ধে ২২ শ’ পৃষ্ঠার শ্বেতপত্র প্রস্তুতে কোন কোন দেশবিরোধী অশুভ গোষ্ঠীর অর্থায়ন হয়েছে, দুদকের মাধ্যমে দেশবাসী তা জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পরিষদ সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবির।
গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কথিত গণকমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ নিজের মায়ের সম্পদ কুক্ষিগত করা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রসিকিউটর থাকাকালীন অবৈধ অর্থের লোভে আসামির সাথে বোরকা পরে সাক্ষাৎ করার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাকে অপসারণ করা হয়েছে।
২০১২ সালে বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে নিন্দা ও সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বাংলাদেশ সংসদ সর্বসম্মত একটি প্রস্তাব পাস করে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ তাকে স্যাডিস্ট বলে অভিহিত করেছেন। এ চেয়ারপারসন ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে কথিত গণকমিশন যে শ্বেতপত্র প্রস্তুত করেছে তা দেশবিরোধী দেশী ও বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের অর্থায়ন ছাড়া সম্ভব হতে পারে না।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে নিজের গর্ভধারিণী মা সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি-ধামকি, সম্পদ কুক্ষিগত করা ও রাত-বিরাতে অপরিচিত লোকদের বাসায় গমনকারীদের বিষয়ে অভিযোগ উত্থাপন করেন। সেই তুরিন আফরোজ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হতে প্রভুদের খুশি করতে এই কাজ করেছেন বলে দেশবাসী মনে করে।
বিবৃতিতে শহিদুল ইসলাম কবির বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যেই বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি এই দেশকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মাদক ও জঙ্গী মুক্ত করতে পরশপাথর তুল্য আলেম সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। কথিত শ্বেতপত্রে যে শতাধিক আলেমের বিরুদ্ধে জঙ্গি অর্থায়ন ও ওয়াজের মাধ্যমে তারা ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করছেন বলা হয়েছে তা ইসলাম বিদ্বেষী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। কথিত কমিশনের শ্বেতপত্রে দেয়া আলেম-ওলামাদের অধিকাংশ পরশপাথর তুল্য। তাদের সংস্পর্শে এসে লাখো অপরাধপ্রবণ মানুষ সৎ মানুষে পরিণত হয়েছে। এদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কারের সুপারিশ না করে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে কথিত কমিশন ও তাদের শ্বেতপত্র দেশবাসী ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দুর্নীতিবাজরা আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হয়ে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনৈতিকে হুমকির সম্মুখীন করেছে। তাদের বিরুদ্ধে এই কমিশন তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ না করে দেশের পরশপাথর তুল্য আলেম-ওলামা ও সহস্রাধিক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা বাংলাদেশকে শ্রীলঙ্কার পরিণতির দিকে ঠেলে দেয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com