ক্রমেই এক দেশ থেকে আরেক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে মাঙ্কি পক্স। এ রোগটি নিয়ে ক্রমেই দেশে দেশে উদ্বেগ বাড়ছে। শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ায়ও সন্দেহভাজন এক রোগী চিহ্নিত করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি মাঙ্কি পক্স রোগে আক্রান্ত। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ মিলেছে। ইউরোপের ফ্রান্স, ইতালি ও সুইডেনে মাঙ্কি পক্স আক্রান্ত ব্যক্তির সন্ধান পাওয়া গেছে। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথওয়েলসে ৪০ বছরের এক ব্যক্তির দেহে এ রোগের লক্ষণ শনাক্ত হয়। ধারণা করা হচ্ছে তিনি মাঙ্কি পক্স রোগে আক্রান্ত। ওই ব্যক্তি স¤প্রতি ইউরোপ সফর করেছিলেন। আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটি ঘরে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে কানাডা নিজ দেশে দুই ব্যক্তির দেহে মাঙ্কি পক্স শনাক্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, সেখানে আরও ১৭ জন সন্দেহভাজনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে। এরা মনট্রিয়েল ও কুইবেক শহরের বাসিন্দা।
আনন্দবাজার অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৭ মে মাঙ্কি পক্সে আক্রান্ত রোগীর হদিস মেলে লন্ডনে। ওই ব্যক্তি স¤প্রতি নাইজেরিয়া থেকে ফিরেছিলেন। তাই বিশেষজ্ঞদের ধারণা ছিল, আফ্রিকাতেই কোনোভাবে এ ভাইরাসের সংস্পর্শে আসেন তিনি। কিন্তু তারপর কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগ, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। কী এই মাঙ্কি পক্স? বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি এক বিশেষ ধরনের বসন্ত রোগ। জলবসন্ত বা গুটিবসন্তের প্রতিকার থাকলেও বিরল এ রোগটি নিরাময়ে এখনও পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসাপদ্ধতি জানা নেই চিকিৎসকদের।
এ রোগের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথার মতো লক্ষণ। দেখা দিতে পারে কাঁপুনি ও ক্লান্তিও। সঙ্গে ছোট ছোট ক্ষতচিহ্ন দেখা দিতে থাকে শরীরে। হাম, বসন্ত, স্কার্ভি এবং সিফিলিসের কিছু কিছু লক্ষণের সঙ্গে এ রোগের উপসর্গগুলোর কিছুটা মিল পাওয়া যায়। তাই অনেকেই এ রোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলো চিনতে ভুল করেন। এতদিন চিকিৎসকদের ধারণা ছিল ‘ড্রপলেট’-এর মাধ্যমেই ছড়ায় এ রোগ। তাই বিশেষজ্ঞরা ভেবেছিলেন, শ্বাসনালি, ক্ষত স্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমে এ ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। কিন্তু নতুন আক্রান্তদের পরীক্ষা করে চিকিৎসকদের আশঙ্কা, যৌন মিলনের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে মাঙ্কি ভাইরাস। সেই মর্মে হুঁশিয়ারিও দেয়া হচ্ছে।