বরগুনার বামনা উপজেলার বিষখালী নদী তীরবর্তী চেঁচান গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ড এর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভরা পূর্নিমার প্রভাবে বিষখালী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতিনিয়ত জোয়ারে তলিয়ে যাচ্ছে আশপাশের অন্তত ১৫টি গ্রামের ফসলী জমি, মাছের ঘের ও রাস্তাঘাট। ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন নদী তীরবর্তী প্রান্তিক চাষীরা। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে চেঁচান গ্রামে গিয়ে দেখাগেছে, বিষখালী নদী তীরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিত বেড়িবাঁধ গত ১৫ দিন পূর্বে ভেঙ্গে গেছে। কয়েকদিন ধরে পূর্নিমার প্রভাবে সৃষ্ট জোয়াড়ে সেই ভাঙ্গন কবলিত স্থান দিয়ে প্রবল বেগে বিষখালীর পানি ঢুকছে লোকালয়ে। ফলে চেঁচান সহ কাটাখালী, বেবাজিয়াখালী, ঢুষখালী, চালিতাবুনিয়া ও সফিপুর এলাকার ফসলী জমি, মাছের ঘের ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, মাঠে এখনো তাদের মুগডাল, মসুরডালও ভুট্টা রয়েছে। প্রতিনিয়ত দুই বার এসব ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা। বামনা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, বিষখালী নদী তীরবর্তী ৬টি গ্রামে প্রায় ২০০ হেক্টর জমিতে এবছর মুগডালের আবাদ খুবই ভাল হয়েছে। এছাড়াও ১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা ও ৪০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার সবজির আবাদ করা হয়েছে। শুধু চেঁচান এলাকাই নয় বিষখালী নদীর জোয়াড়ে তলিয়ে যায় উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের চলাভাংগা, গুদিঘাটা, দক্ষিণ কাকচিড়া, রামনা এলাকার দক্ষিণ রামনা, খোলপটুয়া সহ অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত। চেঁচান গ্রামের বাসিন্দা মো. রুস্তুম আলী সরদার বলেন, ১৫দিন পূর্বে এখানের বাঁধটি ভেঙ্গে যায়। আমরা বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এসে পরিদর্শন করে গেছেন। তবে মেরামতের কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় আমরা এখন পানিতে তলিয়ে যাই। ওই এলাকার বাসিন্দা ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, বাঁধটি ভেঙ্গে গেলে আমরা পাউবো কে জানাই,কিন্তু তারা মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় জোয়ারের পানিতে ফসলী জমি, মাছের ঘের এমনকি বসত বাড়ি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে। বামনা সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধূরী কামরুজ্জামান সগির বলেন, চেঁচান গ্রামের বেড়িবাঁধটি দিয়ে বিষখালী নদীর জোয়াড়ে পানি ঢুকে এলাকার ফসলি জমি প্লাবিত হচ্ছে। বিষয়টি বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু বাঁধটি ঁসংস্কারের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। বরগুনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. খলিলুর রহমান বলেন, চেঁচান গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়টি আমি ইতিমধ্যে অবহিত হয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে দ্রুত বাঁধটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।