বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
কিশোরগঞ্জে ভাসমান সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা চৌদ্দগ্রামে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ কালিয়ায় কন্যা শিশু দিবস পালিত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন তারাকান্দায় ১০ গ্রেডে উন্নীতের দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি কালীগঞ্জে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকদের মানববন্ধন : মিশ্র প্রতিক্রিয়া ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মিলন সম্পাদক পাভেল কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘর মানিকগঞ্জে সাড়ে ৪লাখ ছাগলের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচী শুরু আন্দোলনে নিহত নয়নকে বীরের মর্যাদা দেয়া হবে-দুলু

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সভায় ৬ দফা প্রস্তাব

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১ জুন, ২০২২

নেতৃবৃন্দের মুক্তি,নিরপেক্ষ নির্বাচন,দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,ওলামা
ইসলামী শিক্ষাবিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধ, মদের লাইসেন্স বাতিল দাবি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সভা সম্প্রতি সংগঠনের আমীর ডাঃ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ বিস্তারিত আলোচনার পর ৬টি প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রস্তাবগুলো তুলে ধরা হলো:
১. নেতৃবৃন্দের মুক্তি দাবি: কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল জনাব এটিএম আজহারুল ইসলামকে প্রায় ১১ বছর যাবৎ এবং সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক ম-লকে ৭ বছর যাবৎ কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। এছাড়া জামায়াতের নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য জনাব শাহজাহান চৌধুরীকে দীর্ঘ দিন যাবৎ রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।
গত ২৫ মে আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে স্থাপিত একটি বিশেষ আদালতে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে একটি রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় হাজির করা হয়। কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসার পথে শারীরিকভাবে তিনি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকবার তিনি বমি করেন। এমনকি জ্ঞান হারানোর মত ঘটনাও ঘটে। এভাবে হয়রানি করে প্রকারান্তরে তাঁকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। অপরদিকে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার উচ্চ আদালত থেকে সকল মামলায় জামিন পাওয়ার পর ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ কারাগার থেকে বের হবার পূর্ব মুহূর্তে তাঁকে আরো দুটো মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়। ঐ মামলায় তিনি আবারো উচ্চ আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হন। এরপরও সরকার তাঁকে মুক্তি না দিয়ে অন্যায়ভাবে আটক রেখেছে। আদালতের আদেশ অমান্য করে গোলাম পরওয়ারকে আটক রেখে একদিকে সরকার তাঁর প্রতি চরম জুলুম করেছে, অপরদিকে আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছে।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, দেশে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার বলতে কিছু নেই। সরকার দেশের আইন, সংবিধান কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না। আদলতের কোনো আদেশই সরকার মানছে না।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, এটিএম আজহারুল ইসলাম, অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক ম-ল, মাওলানা আনম শামসুল ইসলাম, অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও জনাব শাহজাহান চৌধুরীসহ গ্রেফতারকৃত জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সকল নেতা কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
২.দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহবান:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, বাংলাদেশ সাংবিধানিকভাবে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হওয়া সত্ত্বেও সরকার অত্যন্ত নগ্নভাবে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার পাশাপাশি দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দিয়েছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রতি জনগণের কোনো আস্থা নেই।
স্বাধীনতার পর ৫১ বছরে দেশে ১১টি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তন্মধ্যে ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে সম্পন্ন হওয়ায় জনগণ স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে ভোট দিতে পেরেছে। ২০০৬ সালে কেয়ারটেকার সরকারের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্বে দেশে লগি-বৈঠার তা-বের মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরী করে অনিয়মিত সেনা সমর্থিত কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ সরকার নিরাপদ প্রস্থানের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর একটি সাজানো নির্বাচন সম্পন্ন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটকে ক্ষমতায় বসায়।
২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য আওয়ামী লীগ আদালতের রায়ের দোহাই দিয়ে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থাটি বাতিল করার উদ্দেশ্যে সংবিধান সংশোধনীর জন্য একটি কমিটি গঠন করে। দেশের প্রায় সকল রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, বিশিষ্ট নাগরিকগণ এমনকি সংবিধান সংশোধনের জন্য গঠিত কমিটির প্রায় সকল সদস্য কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দেন। আদালতের যে রায়কে উছিলা করে কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা বাতিলের উদ্যোগ নেয়া হয় সে রায়েও পরপর দুটো নির্বাচন কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে করার বিষয়ে মত দয়া হয়। তা সত্ত্বেও এ ব্যবস্থাটি শুধু দলীয় স্বার্থে বাতিল করা হয়। এর মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার হরণ ও নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ২০১৪, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারসমূহের নির্বাচনের মাধ্যমে গোটা জাতির নিকট এটা স্পষ্ট যে, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই সম্ভব নয়।
রাষ্ট্রশক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার যে ব্যবস্থা আওয়ামী লীগ করেছে তার অনিবার্য পরিণতিতে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, রাজনৈতিক অধিকার, ভোটাধিকার ও বাকস্বাধীনতা বলতে কিছু নেই। সংবিধান স্বীকৃত মিছিল-মিটিং, সমাবেশের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন, গুম, অপহরণ জাতিকে গ্রাস করেছে। এর হাত থেকে জাতিকে উদ্ধার করতে হলে জনগণের নিকট দায়বদ্ধ এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আর দলনিরপেক্ষ সরকার ব্যতীত অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।
এমতাবস্থায় কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ দলনিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন সম্পন্নের লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধভাবে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
৩.আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার হওয়ার আহবান: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, দেশের আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে সরকার ও তাদের সহযোগীরা এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। দেশের আলেম সমাজ ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রচারের মাধ্যমে দেশের মানুষের চরিত্র গঠন ও অনৈতিক কর্মকা- থেকে যুব সমাজকে বিরত রাখার যে মোটিভেশনাল কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন তা দেশে নৈতিক পরিবেশ উন্নত করার ভূমিকা পালন করেছে। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, হত্যা, গুম, দেশব্যাপী বোমা হামলার প্রতিবাদে দেশের আলেমগণ ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা পালন করেছেন।
দেশের মাদ্রাসাসমূহ তরুণ ছাত্রসমাজকে নৈতিক চরিত্র গঠন, তাদেরকে আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি গবেষক, ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে গড়ে উঠার যে ভূমিকা পালন করছে তার বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত চলছে। দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে, অপবাদ আরোপ ও তাদেরকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। অনেক আলেমকে গ্রেফতার করে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। অতিসম্প্রতি দেশের আলেম-উলামাদের বিরুদ্ধে তথাকথিত ‘গণতদন্ত কমিশন’ এর নামে একটি অসাংবিধানিক ও আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূত কমিটির মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদন রচনা করে আলেমদের হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘গণতদন্ত কমিশন’ গঠনের কোনো অধিকার দেশের সংবিধান বা আইন কোনো ব্যক্তিকে দেয়নি। অবিলম্বে এ অবৈধ কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় এনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ আলেম-উলামা ও মাদ্রাসাসমূহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে ও অবিলম্বে আটক সকল আলেমের মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
৪.দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রেণের দাবি :কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বিধায় জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। ক্ষমতায় আসার আগে ১০ টাকা কেজি দরে চাল, বিনামূল্যে সার, কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা দেয়ার ও দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখার যে প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগ দিয়েছিল, তার ধারে-কাছেও নেই আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। চাল, ডাল, তেল, আটা, ময়দা, মাছ, গোশ্তসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি দ্রব্যের মূল্য কয়েক গুণ বেড়েছে। গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের মূল্য দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে। ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে কয়েক গুণ। মানুষের আয় বাড়েনি, বেড়েছে ব্যয়। ফলে জনদুর্ভোগ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে জনগণের সাথে রসিকতায় লিপ্ত হয়েছে। সরকারের কোনো কোনো মন্ত্রী বলছেন, ‘জনগণের আয় বেড়েছে। অতএব, ব্যয় বাড়তে অসুবিধা কোথায়?’ এসব বক্তব্য জনগণের সাথে উপহাসের শামিল।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ অবিলম্বে সকল জিনিসের দাম জনগণের সহনশীল পর্যায়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানাচ্ছে।
৫.শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে সুকৌশলে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ লক্ষ্য করছে যে, সরকার অত্যন্ত সুকৌশলে শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ইসলামকে বাদ দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় বিশ্বাস, মূল্যবোধ, নৈতিক চেতনাকে অগ্রাহ্য করে দেশের পাঠ্যতালিকা থেকে ইসলামকে বাদ দেয়া হচ্ছে। দীর্ঘ অর্ধ শতাব্দি যাবৎ এদেশের মানুষ একটি আদর্শ শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম করে আসছে। অথচ বর্তমান সরকার দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাস ও মূল্যবোধের উপর আঘাত করে প্লে থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষার বিষয়সমূহ বাদ দিয়ে সেখানে নাচ-গানের বিষয় অন্তর্ভূক্ত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ইসলামী শিক্ষা, রীতি-নীতি, কৃষ্টি-কালচার থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করেছে। শিশু বয়সে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করে নতুন প্রজন্মকে ইসলামবিমুখ করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দশম ও দ্বাদশ শ্রেণি থেকে ‘ইসলামী শিক্ষা’ পরীক্ষার বিষয়সমূহের বাইরে রাখা হয়েছে। এমনকি নতুন করে ইসলামী শিক্ষা বিষয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। সরকারের এ সব পদক্ষেপ দ্রুতই দেশের ছাত্রসমাজকে ইসলামবিমুখ করবে এবং তাদেরকে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ ইসলামী শিক্ষার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করার ও দেশবাসীকে এ চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।
৬.মদের লাইসেন্স বাতিল করার দাবি:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, সরকার দেশের সংবিধান, ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ইসলামী বিধানকে অগ্রাহ্য করে দেশে মদের লাইসেন্স প্রদান করে দেশকে অরাজকতার দিকে ঠেলে দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
মাদকদ্রব্য মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। মাদকতা বাংলাদেশে ভয়াবহ রূপ লাভ করেছে। বাংলাদেশ মাদক সমস্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেসরকারি গবেষণা সংগঠনের মতে, সম্প্রতি দেশে মাদকাসক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮০ লাখ। কর্মহীন যুবকের প্রায় ৪০ শতাংশ মাদক সেবী, আর মাদক সেবীর মধ্যে ৪০ শতাংশ নারী। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৮ লাখ ৬৩ হাজার ২৩৯ পিছ ইয়াবা জব্দ করা হয়। বিভিন্ন সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিদিন ২ মিলিয়ন ইয়াবা বিক্রি হয় বাংলাদেশে। গত ১২ বছরে এর বিস্তার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে বিভিন্ন সংস্থা অন্তত ১৫ হাজার কোটি টাকার মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে। বর্তমানে সারাদেশে মাদক সেবনকারীরা প্রতিদিন গড়ে ২০ কোটি টাকার নেশা গ্রহণ করছে। বছরের হিসেবে এর পিছনে খরচ হয় আনুমানিক ৭ হাজার ৩ শত কোটি টাকা। এ ব্যবসায় জড়িত ২০০ গডফাদার ও বিক্রির নেটওয়ার্কে কাজ করে ১ লাখ ৬৫ হাজার জন। প্রতি বছরই বাড়ছে এ সংখ্যা।
মাদকদ্রব্য লেনদেনের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে। নেশা জাতীয় দ্রব্যের বিস্তারের এই সর্বনাশা চিত্র যেভাবে আর্থিক ও শারীরিক ক্ষতি করছে সেভাবে একটি প্রজন্মের চিন্তার জগতে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ মেয়াদে এর ফল ভয়াবহ হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মাধ্যমে ২১ বছরের উপর যে কোনো ব্যক্তিকে মদ্যপানের জন্য পারমিট প্রদান করার বিধান রেখে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। এ আইন অনুযায়ী কোনো এলাকায় ১০০ জন মদ পানকারী থাকলে ঐ এলাকায় মদ বিক্রির লাইসেন্স দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের নৈতিক মান, ঈমানী চেতনা ধ্বংস করে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরী করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত দেশ এবং জাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশের মানুষ আল্লাহকে ভয় করে। মদসহ সকল ধরনের নেশা জাতীয় দ্রব্য থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের স্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এ সরকার দেশের সংবিধান ও মানুষের ধর্মীয় বিধানকে লংঘন করে মদের লাইসেন্স প্রদান করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি ইসলামের বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেছে। জনগণ এ সিদ্ধান্ত মানে না। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। প্রেসবিজ্ঞপ্তি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com