মহান আল্লাহ তায়ালাও পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘নারীতেই সুখ, প্রাপ্তির জীবনে স্ত্রী পুরুষের পূর্ণতার পোশাক।’ শত ঝড়ঝাপটায়, শত বিপদে যার কোলে মাথা রেখে প্রশান্তির নিঃশ্বাস নেয়া যায়, সে তো নারী, প্রিয়তমা স্ত্রী। একজন চরিত্রবান স্ত্রী-ই পারে একজন পুরুষের জীবনকে রাঙিয়ে তুলতে, সুখ-শান্তিতে মাতিয়ে রাখতে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সমাজের অনেক দম্পতিই অশান্তির জীবনযাপন করছে। একটি পরিবারে সুখ-শান্তি তখনই বিরাজ করে; যখন কোনো পুরুষ তার স্ত্রীর কাজকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেয়। প্রশংসা করে। নিজ হাতে ঘরের কাজে স্ত্রীর সহযোগিতা করে।
প্রচ- শীতে কিংবা গরমে প্রতিদিন সকালে সবার আগেই বিছানা ত্যাগ করে কর্মব্যস্ত স্বামীর কাজে সহযোগিতা ও সন্তান-সন্ততির প্রস্তুতিতে লেগে যান স্ত্রী। আবার সারা দিনের কাজের ফলে ক্লান্ত-অবসন্ন শরীরে ঘুমাতেও যান সবার পরে। সাংসারিক এসব কাজে আমাদের সমাজের পুরুষদের সামান্যতম অংশ নেই। (যদিও তা কারো কারো ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম)।
পক্ষান্তরে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জীবনে রয়েছে স্ত্রীকে সহযোগিতায় এক অনুকরণীয় উত্তম আদর্শ। হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা রা:কে জিজ্ঞাসা করা হলো, রাসূলুল্লাহ সা: ঘরে কী কাজ করতেন? উত্তরে হজরত আয়েশা রা: বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা: ঘরের মানুষদের সেবায় নানা কাজে অংশ নিতেন।’ (বুখারি)
আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি বলেন, উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশা রা: বলেছেন, ‘রাসূলুল্লাহ সা: নিজ হাতে তাঁর কাপড় সেলাই করতেন; নিজের জুতো মেরামত করতেন এবং সাংসারিক যাবতীয় কাজে অংশগ্রহণ করতেন।’ (ফতহুল বারি)
স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতাই হলো বিশ্বনবী সা:-এর সুন্নাত। স্বামীরা সাধারণত ঘরের বাইরে অফিস-আদালত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিংবা বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যস্ত থাকেন। তাই স্ত্রীদের যাবতীয় কাজে কর্মব্যস্ত স্বামীর সামান্য ১০-২০ মিনিটের অংশগ্রহণেই সংসারে স্বর্গ এনে দিতে পারে। স্ত্রীর মন কৃতজ্ঞতাবোধে ভরে উঠতে পারে। বদলে যেতে পারে সংসারের রূপ। এমনটি করলে অশান্তির পরিবর্তে সুখ-স্বর্গে পরিণত হয় প্রতিটি সম্পর্ক। প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতার বন্ধন সুদৃঢ় হয়। পরস্পরের প্রতি আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্কেও সেতুবন্ধ তৈরি হয়।
এ জন্য সব স্বামীর উচিত, তাদের স্ত্রীদের কাজের মৌখিক স্বীকৃতি ও প্রশংসার পাশাপাশি সাংসারিক কাজে সামান্য সময়ের জন্য হলেও সহযোগিতা করা। তবেই পারিবারিক জীবনে অনিন্দ্য সুন্দর, শান্তিপূর্ণ সংসারের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে। লেখক : গণমাধ্যমকর্মী