বুধবার, ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
কিশোরগঞ্জে ভাসমান সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা চৌদ্দগ্রামে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জোরপূর্বক সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ কালিয়ায় কন্যা শিশু দিবস পালিত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের মানববন্ধন তারাকান্দায় ১০ গ্রেডে উন্নীতের দাবিতে শিক্ষকদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি কালীগঞ্জে বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রেখে শিক্ষকদের মানববন্ধন : মিশ্র প্রতিক্রিয়া ডিমলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মিলন সম্পাদক পাভেল কালের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী কাচারি ঘর মানিকগঞ্জে সাড়ে ৪লাখ ছাগলের বিনামূল্যে টিকাদান কর্মসূচী শুরু আন্দোলনে নিহত নয়নকে বীরের মর্যাদা দেয়া হবে-দুলু

ইভিএমের এক জায়গায় ত্রুটি আছে : সাবেক সিইসি নুরুল হুদা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৪ জুন, ২০২২

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) এক জায়গায় ত্রুটি আছে। গতকাল শনিবার (৪ জুন) সকালে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) আয়োজিত এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নুরুল হুদা বলেন, একটা জায়গায় ইভিএমে ত্রুটি আছে। ব্যালট ইউনিটকে টেকনোলজির আওতায় আনা যায়নি। এটা কমপ্লেক্সসিটির (জটিলতার) জন্য। এখানেও ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। হয়তো ভবিষ্যতে এটার ব্যবস্থা হতে পারে। তবে যদি পোলিং এজেন্ট, প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রশাসন সতর্ক থাকে, তাহলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব। এছাড়া সব কেন্দ্রে যদি সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা যায় তাহলে হয়তো এ সমস্যা এড়ানো যাবে। এরকম চ্যালেঞ্জ আসবে, সেটি সমাধান করতে হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের বাইরে রেখে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আশা করা যায় না। এজন্য বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে আনতে হবে এবং সেই দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিএনপির প্রতিও আমার অনুরোধ থাকবে, নির্বাচন বয়কট করে সমস্যার সমাধান হবে না। আপনারা ঠিক করুন কীভাবে নির্বাচনে যাবেন। আপনাদেরকে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
আমি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থাশীল, তারা যেভাবে শুরু করেছে, সব রাজনৈতিক দল ও মানুষের উচিত তাদেরকে সহযোগিতা করা। যদি তাদেরকে সহযোগিতা করা হয়, তাহলে তারা একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবে, বলেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে নুরুল হুদা বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন পরিচালনা করা ইসির (নির্বাচন কমিশন) জন্য কিছুটা চ্যালেঞ্জ। তবে সেটি কমিশন চাইলে অতিক্রম করা সম্ভব।
ইভিএমের ভুল ধরতে পারলে ১০ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে বর্তমান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনিছুর রহমানের বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক সময় মুখ ফসকে ভুল কথা বের হয়ে যায়। এটাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কোনো দরকার নেই। ইভিএমের বিষয়ে তার অনেক আস্থা রয়েছে, এজন্য হয়তো এ কথা বলে থাকতে পারেন। এটা নিয়ে বিতর্কের দরকার নেই। ভুল-ভ্রান্তি অনেকের হয়ে থাকে।
পাঁচ বছর দায়িত্ব পালনের সময় এক অস্বস্তি নিয়ে ছিলেন বলে জানান সাবেক এই সিইসি। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় কোনো চাপ সৃষ্টি হয়নি। তবে জাতীয় নির্বাচনের সময় কোথাও কোথাও শতভাগ ভোট কাস্ট হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। এ সময় তিনি এই সমস্যার জন্য প্রার্থীদের আদালতের শরণাপন্ন হতে বলেন।
এছাড়াও সিনিয়র সাংবাদিক সরদার আবদুর রহমান ‘বিতর্কিত ‘ইভিএম’ পাত্তা পাচ্ছে না! ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে ইভিএমের বিভিন্ন ত্রুটি তুলে ধরেছেন,। প্রতিেিবদনটি তুলে ধরা হলা:“পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করার কৌশল হিসেবে ক্ষমতাসীন দল ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের উপর নির্ভর করতে চাচ্ছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই ‘ইভিএম’ কোথাও হালে পানি পাচ্ছে না বলেও মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ২৫/২৬টির বেশি দেশে ইভিএম ব্যবহৃত হয় না। তবে কিছু কিছু দেশে এর চরম অপব্যবহার ও অপকৌশল করে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার অভিযোগ আছে। সর্বসা¤প্রতিক খবরে জানা যায়, শনিবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সভায় দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৩০০টি আসনেই ইভিএম-এ ভোট নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন। তবে এর প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হাবিবুল আউয়াল বলেন, ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ইভিএম ব্যবহার নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী নির্বাচন ব্যালট পেপার নাকি ইভিএম ব্যবহার করে হবে, কতটি আসনে ইভিএমের ভিত্তিতে ভোট হবে সে বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইসি। এটি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সিইসি বলেন, “কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে, নির্বাচন কমিশনই সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে ইসি স্বাধীন।” মঙ্গলবার নির্বাচনী প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি এ কথা বলেন। এখন নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার সরকারের নির্বাহী বিভাগের নাকি নির্বাচন কমিশনের- সে বিতর্কও থেকে যাচ্ছে। তবে অতীতের নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে, এসব ক্ষেত্রে সরকারের দেয়া সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনার বাইরে যেতে সমর্থ হয়নি নির্বাচন কমিশন।
ভারতে নির্বাচনে জোরদার বিতর্ক : ভারতে গত ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লোকসভা নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক জোরদার হয়। তবে একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার কাছে এই বিতর্ক তেমন মাত্রা ছাড়াতে পারেনি। পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলায় শান্তিপূর্ণ ভোট হলেও প্রচুর অভিযোগ আসে ইভিএম নিয়ে। কোচবিহারে তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, অন্তত ৮০টি ইভিএমে গোলমাল দেখা দেয়। রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসারের (সিইও) দফতর সূত্রে জানানো হয়, এদিন মকপোল চলার সময় ৫১টি ভিভিপ্যাটে এবং ভোট চলাকালীন ৬৫টি ভিভিপ্যাটে ত্রুটি ধরা পড়ে। ব্যালটে ত্রুটি ধরা পড়ে ০.০২ শতাংশ ইউনিটে। ১৭ এপ্রিল নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটের শুরুতে বিভিন্ন রাজ্য থেকে ইভিএম বিভ্রাটের খবর পাওয়া যায়। ফলে অনেক জায়গাতেই ভোট দেরিতে শুরু হয়। ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিজেপি ছাড়া আর কোনো দলই ইভিএমের উপর আস্থা রাখতে পারছে না। অনেক দল আবার কিছু ঘটনায় বিভ্রান্তও।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ইভিএম-সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিবিদরা এর প্রধান দু’টি গুরুতর সমস্যার কথা বলে আসছেন। এর প্রথমটি হলো, পছন্দের প্রতীকে ভোট দিলেও একটি নির্দিষ্ট প্রতীকে তা জমা হতে পারে। মেশিনটি চাইলে এমনভাবে প্রোগ্রাম করা সম্ভব যে, নির্দিষ্ট কিছু সংখ্যক ভোটের পর বাকি সব ভোট একটা প্রতীকেই জমা হবে। হয়তো ভোটার দেখবে যে সে তার পছন্দের প্রতীকে ভোট দিয়েছে, কিন্তু আসলে তা হবে না। দ্বিতীয় গুরুতর সমস্যা হলো, এতে ভোট পুনর্গণনার কোন সুযোগ নেই। ইভিএম মেশিনে ভোটার ভেরিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল বা ভিভিপিএটি নেই। একজন ভোটার ভোট দেবার পর তার কাছে একটা প্রিন্টেড স্লিপ আসতো, যাতে কোনো কারণে ভোট পুনর্গণনার প্রয়োজন হলে এটি কাজে আসতো। সেটি করা হয়নি। কারণ এই ব্যবস্থাটি রাখতে গেলে অন্য কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা সৃষ্টি হয়।
সেসময় ভারতের রাজনৈতিক দলগুলো ব্যালট বাক্সে ফিরে আসার দাবি তুলতে শুরু করে। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, ইউরোপের জার্মানিসহ বড় সব দেশ ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ফিরে এসেছে। আমেরিকার প্রযুক্তিবিদরা ইভিএমের ত্রুটিগুলো সুনির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করেছে। আমেরিকার গণতন্ত্রের স্বার্থে ব্যালটে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। উন্নত দেশগুলো যদি ইভিএম বাদ দিয়ে ব্যালটে ফেরে তবে ভারতকে কেন ইভিএম-এ থাকতেই হবে? তবুও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত অব্যাহত রাখা হয়। এরপরও ভারতের প্রধান রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ইভিএম নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছে। এই দলগুলো মনে করে, ইভিএম প্রযুক্তির ব্যবহার করে ভোট নয়ছয় করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। একজন রাজনৈতিক নেতা বলেন, ইতোপূর্বে উত্তর প্রদেশ ও মহারাষ্ট্রের উপনির্বাচনে ইভিএম’র ফলাফল থেকে তাদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। যারাই ভোট দিয়েছেন সেখানে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ঘরেই সব ভোট পড়ে। এতে জড়িত থাকায় ৬ জন নির্বাচন কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে কমিশন। এই যখন ঘটনা- তখন আগুনে ঘি ঢালেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দু’জন প্রযুক্তিবিদ। তারা দাবি করেন, ‘ইভিএম মেশিন হ্যাক করা সম্ভব।’ ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ নেই বললেই চল। তাদের কার্যকারিতা, সক্ষমতা ও সৎসাহস নিয়েও প্রশ্ন নেই। এমন একটি নির্বাচন কমিশনকেও ইভিএম নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন একজন পর্যবেক্ষক।ইভিএম নিয়ে বড় প্রশ্ন সুশীল সমাজেরও : বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে গত মার্চে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। ওই সংলাপে ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানালেও ১৩ জন অংশ নেন। সংলাপে অংশ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা হলো, নির্বাচন কমিশন আইন ও সংবিধানে দেয়া ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবে কি না, তা অনেকখানি নির্ভর করে নির্বাচনকালীন সরকার কী হবে তার ওপর। নির্বাচনের সময় এমন একটি সরকার থাকতে হবে, নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে যারা নিস্পৃহ (নিরপেক্ষ) হবে।’ এসময় তিনি বলেন, “নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার এই মুহূর্তে বিতর্কিত। এ বিষয়ে ঐকমত্য না হলে ইভিএম ব্যবহার না করাই ভালো হবে। এখনকার বাস্তবতায় ইভিএম ব্যবহার করা হলে আরো বেশি সংশয় তৈরি হবে।” নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন বলেন, ইভিএম সব সময় সব দেশে বিতর্কিত। নির্বাচনকালীন প্রশাসন নিরপেক্ষ রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ভোটের সময় মূল ভরসা হলো মাঠ প্রশাসন। সিপিডির সম্মানিত ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখনকার পরিবেশে যত সৎভাবেই কাজ করা হোক ইভিএমে ভোট হলে তার ফলাফল নিয়ে সংশয় তৈরি হবে। অন্যদিকে ইভিএম প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ইভিএমের প্রতি আস্থা নিয়ে কথা উঠেছে। ইভিএমে ভালো দিক রয়েছে, দ্রুত গণনা হয়ে যায়। কিন্তু পুনর্গণনার সমস্যা রয়েছে। কারচুপি হয়ে থাকলে সেটা পুনরায় গণনা করা যাবে কিনা, সেটা দেখতে হবে। কাগজের ব্যালটে ভোট পুনর্গণনা করা যায়। কারিগরি কমিটির মিটিং করে আমাদের ইভিএম সম্পর্কে এটা ধারণা নিতে হবে। কেউ কেউ বলেছেন, ইভিএম সঠিক হলে তা চালিয়ে যেতে হবে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, ইভিএম কাজে না লাগলে যতো টাকা দিয়ে কেনা হোক বর্জন করাই ভালো। এসব মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নারায়ণগঞ্জ সিটির অভিজ্ঞতা : এবছর ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে সংবাপত্রের কলামে অভিযোগ করেন বিরোধী প্রার্থী এড. তৈমূর আলম খন্দকার। এতে তিনি জানান, ভোটের দিন তাৎক্ষণিকভাবে মিডিয়াতে চারটি অভিযোগ করা হয়েছে। যথাÑ ১. আঙুলের ছাপ দিলেও অনেক ক্ষেত্রেই ইভিএম ওপেন হয়নি ২. অনেক বুথে দেখা গেছে মেশিন ত্রুটিপূর্ণ, যা সচল হচ্ছিল না, ৩. অনেক বুথে দেখা গেছে যে, মেশিনটি ধীরগতি হওয়ায় ভোটার টানতে পারে না। ফলে অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষার শেষ পর্যায়ে ভোটার কেন্দ্র থেকে চলে গেছে এবং ৪. ইভিএম মেশিনে হাতির বোতামে চাপলে নৌকায় ভোট চলে যাওয়ার অভিযোগও তখনই ভোটাররা জানিয়েছিল। ইভিএম মেশিনে কিভাবে রেজাল্ট পরিবর্তন করা যায় তা পরীক্ষাপূর্বক বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মিডিয়াতে প্রকাশ করছে। তিনি বিশেষজ্ঞদের বরাতে উল্লেখ করেন, “ইভিএম দ্বারা ভোটের সংখ্যা পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করা যায়। ‘সিল’ সিস্টেমে ভোট হলে ‘গণনার’ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে আবার গণনার একটি সুযোগ থাকে যাতে ভুলত্রুটি নিরীক্ষা করা যায়, যা ইভিএম মেশিনে ধরা পড়ে না। ফলে বাকপটু অসত্য কথা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সরকারের কাক্সিক্ষত প্রার্থীকে জয়লাভ করানোর অভিলাষ পূর্ণ করা সহজতর হয়।”
“নৌকার বাইরে ভোট ধরে ফেলা যায়”: খোদ একজন আওয়ামী লীগ নেতাই দাবি করেন যে, “ইভিএম এমন এক সিস্টেম, নৌকার বাইরে কেউ ভোট দিলে ধরে ফেলা যায়।” গত বছর ফেব্রুয়ারিতে লক্ষ¥ীপুরের রামগতি পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে এক সভায় লক্ষ¥ীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী ওরফে নয়ন বলেন, “ইভিএম এমন এক সিস্টেম, নৌকার বাইরে কেউ ভোট দিলে ধরি হালান যায়। চিটাগাং (চট্টগ্রাম) এক কেন্দ্রে ইভিএমে নৌকা পেয়েছে ২ হাজার ৩০০ ভোট। এক ভোট পান ধানের শীষ। পরের দিন এ ভোট কে দিছে, ওই ওয়ার্ডের নেতারা তারে ধরি হালান। কত নম্বর ভোট নৌকার বাইরে গেছে, তা ধরি হালা যায়।” নুর উদ্দিন আরও বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত, মেয়র পদে ভোট হবে উন্নয়নের জন্য। আর কাউন্সিলর পদে ভোট হবে নিরপেক্ষ। তারের মতো সোজা।’ এ সময় নুর উদ্দিন চৌধুরী আরো বলেন, “ইভিএম একটি মেশিন। একুলে কে কোথায় টিপ দেয়, বুঝা যায়। সুতরাং উল্টাপাল্টা টিপ দিয়ে রাজাকার ও খন্দকার মোশতাক হবেন না। যাঁরা এদিন উল্টাপাল্টা টিপ দিবেন, পরের দিন মেশিন চেক করলে সিসি ক্যামেরার মতো বের করা যাবে।”




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com