মিরসরাইয়ে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবাধে চিংড়ি পোনা আহরণ করছে একটি চক্র। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত ফেনী নদীর মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকা, মিরসরাইয়ের সাহেরখালী, ডোমখালী, ইছাখালী, বানচন্দ খাল, ছোট ফেনী নদীর কাজীর হাট স্লুইচ গেট, সন্দ্বীপ চ্যানেল, ফেনী নদীর মুহুরী রেগুলেটরের দু’পাশেসহ বেশ কিছু স্থানে এক শ্রেণির অসাধু মৎসজীবী অবৈধভাবে চিংড়ি পোনা আহরণ করে থাকে। প্রজনন মৌসুম থাকায় এ সময়টাতে নদীতে মাছ ধরার প্রতি রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। বিশাল উপকূলীয় এলাকায় প্রতিদিনই লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করা হচ্ছে। এসব পোনা আহরণ করে বিক্রি করা হয় স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে। এতে ধ্বংস হচ্ছে নদী ও সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণী ও পোনা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিষিদ্ধ মশারি ও ঠেলা জাল দিয়ে লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করে তারা। চিংড়ি পোনা আহরণ করতে গিয়ে কোরাল, কাঁকড়া, বাইলা, মলা, ডেলা, চেউয়া, তফসে, বাটা, চাপিলা, কুচিয়া, টেংরা, পোয়া, লইট্টা, ভেটকি, ইলিশ, কাচকিসহ আরও অনেক প্রজাতির পোনা ধ্বংস করছে তারা। ব্যাপারীরা পোনাগুলো খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকে। চিংড়ি পোনা আহরণে স্থানীয় একটি চক্র দেশের খুলনা, যশোর, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা থেকে শ্রমিক এনে তাদের দাদন দিয়ে পোনা আহরণে বাধ্য করে। মুুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় খুলনা থেকে চিংড়ি পোনা আহরণ করতে আসা রনি জানান, তিনি প্রত্যেক বছর মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় চিংড়ি পোনা আহরণ করতে আসেন।প্রতি দিন ৩০০-৪০০ পোনা আহরণ করতে পারে একজন শ্রমিক। প্রতিটি পোনা ৮০ পয়সা থেকে ১ টাকা দামে বিক্রি করেন তারা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রায় চার শতাধিক ব্যক্তি প্রতিদিন চিংড়ি পোনা আহরণ করে বলে জানান তিনি। মিরসরাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ জানান, ইতোমধ্যে আমরা অভিযান চালিয়ে অবৈধ মশারি জাল জব্দ করে আগুন লাগিয়ে দিই। তারপরও থেমে নেই তারা। শীঘ্রই অবৈধ চিংড়ি পোনা আহরণকারীদের বিরুদ্ধে আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে। মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, চিংড়ি পোনা সংগ্রহকারীরা অসচেতন বিধায় একটি রেণুর জন্য অনেক গুলো অন্য মাছের রেণু পোনা ধ্বংস করতেছে। অভিযান পরিচালনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।