সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ন

মানিকগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতার গল্প

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ জুলাই, ২০২২

জয়িতা অণ্বেষনে বাংলাদেশ শীর্ষক কার্যক্রম ২০২১ এ মানিকগঞ্জ জেলা পর্যায়ে পাঁচ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ পাঁচ জয়িতা হলেন- অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী নাদিয়া আক্তার, পিতা মৃত মাজহের মিয়া, মাতাঃ সাজেদা বেগম, শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ এস, এস, সি, গ্রামঃ শিবরামপুর, টেপড়া, শিবালয়, মানিকগঞ্জ। তিনি নানান প্রতিকুলতা পেরিয়ে শ্রেষ্ঠ হয়েছেন। ছয় ভাইবোনের সংসারে বাবার মাখন ব্যবসা ছিল কিন্তু মেশিন ছিলনা। হঠাৎ ব্যবসায় বিরাট ক্ষতি হয়। নতুন করে ব্যবসা করার মত আর্থিক সংগতি ছিলনা।মায়ের গহনা বিক্রি করে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করলেও পুনরায় লোকসান হয়। অর্থের অভাবে বাড়ীওয়ালা ভাড়া বাবদ জিনিসপত্র রেখে বাসা থেকে বের করে দেন। ফিরে আসা গ্রামে বড় ভাই শারীরিক ভাবে ছিল পঙ্গু। পড়াশোনার আগ্রহের জন্য অন্যের বাড়ী থেকে বই এনে পড়াশোনা শুরু। প্রাইভেট পড়িয়ে পড়াশোনার খরচ চালাতো কলেজে পড়ার সময় মা ব্রেষ্ঠ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। বিয়ে হয় কিন্তু স্বামীর আয় খুবই কম। শ্বাশুড়ী মারা যায় ঘরে আসে সৎ শ্বাশুড়ী। সৎ শ্বাশুড়ীর অত্যাচারে শ্বশুরবাড়ী ছেড়ে ভাড়া বাসায় চলে আসতে হয় হঠাৎ বিনা চিকিৎসায় বাবা মারা যান বাবার বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু আমাকে পথ দেখায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর হতে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ আমাকে পথ দেখায়। বর্তমানে ৩ মাসের প্রশিক্ষণ ও স্বামীর ১৩০০/- টাকায় কাপড় কিনে ব্যবসা শুরু প্রশিক্ষণ হিসেবে ভাতা হিসেবে ৬০০০/- টাকা উপজেলা মহিলা বিষয়ক র্মকর্তার সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া প্রশিক্ষণ ভাতা দিয়ে সেলাই মেশিন ক্রয় একটি থ্রি পিস দিয়ে আয় শুরু। এখন ৫টি সেলাই মেশিন ২ জন থেকে১০০ জন কর্মী দোকানের নাম কন্যা মেলা, অন-লাইনে কন্যা মেলা ফেইজবুক পেইজ বর্তমানে প্রাইকারী ও খুচরা বিক্রেতা বর্তমানে প্রতিষ্ঠানে মাসিক আয় ৩০০০০-৩৫০০০/- টাকা বর্তমানে আমি একজন স্বাবলম্বী নারী।
শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সফল নারী জয়িতা প্রণীপা রাজবংশী, পিতাঃ অসীম কুমার রাজবংশী, মাতাঃ প্রতিমা রাজবংশী, শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ স্নাতকোত্তর, ব্রজনগর,বালিয়াটি, সাটুরিয়া, মানিকগঞ্জ। জন্ম দরিদ্র হিন্দু পরিবারে। বাবা ছোট খাট ব্যবসায়ী, ৫ ভাইবোন আর্থিক অস্বচ্ছলতা ৫ ভাই বোনের সংসারে কষ্টে প্রতিপালিত লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করে লেখা পড়া চালাতে হয়। অল্প বয়সে বিয়ে করে সংসারি হয়। বর্তমানে ঢাকার মিরপুর বাংলা কলেজ হতে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং এ স্নাতকোত্তর প্রভাষক পদে চাকুরী করছেন।
সফল জননী নারী জয়িতা ফিরোজা হক, পিতা আজমত আলী মাষ্টার, মাতাঃ মাজেদা বেগম, শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ৮ম শ্রেণী, স্বামীঃ মোঃ ফজলুল হক, সিংগাইর, মানিকগঞ্জ। স্বামীর আর্থিক অস্বচ্ছলতা, যৌথ পরিবারের সকলের দায়িত্ব পালন, সাংসারিক কাজে বেশী সময় ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে পরিবারের অন্যরা উদাসীন থাকলেও সংসারের সকল গৃহস্থলী কাজ করে নিজেই সন্তানদের লেখা পড়ার বিষয়টি তদারকি করেন। বর্তমানে বড় সন্তান মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, সরকারের উপ-সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়,
মেজো সন্তান মোহাম্মদ ফয়েজুর রহমান, সিনিয়র অফিসার, হেড অফিস, ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক লিঃ, ছোট সন্তানঃ ফেরদৌসী আক্তার, সিনিয়র শিক্ষক সাহরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছেন যে নারী জয়িতা বিনোদিনী সরকার, পিতা পূর্ণ চন্দ্র সরকার, মাতা ঝর্ণা রানী সরকার, শিক্ষাগত যোগ্যতা- এইচএসসি, উথলী, শিবালয়, মানিকগঞ্জ। হিন্দু হয়ে হিন্দু ভেবে বিবাহিত মুসলমান ছেলেকে পরিবারের সম্মতি ছাড়া বিয়ে করা। ১ম বিয়ের কথা গোপন রেখে পারিবারিক ভাবে হিন্দু ছেলেকে বিয়ে করা প্রতারিত করে পুনরায় ১ম স্বামীর কাছে যেতে বাধ্য হওয়া ১ম স্বামীর কাছে নির্যাতনের শিকার হওয়া। এই অবস্থায় পারিবারিক ও সামাজিক সহযোগিতা না পাওয়া শারীরিক অসুস্থতা কন্যা সন্তানটি অবহেলার শিকার। দীর্ঘদিন পরে বাবা মার সহানুভূতি পেলেও হঠাৎ বাবা মারা যান মা অসুস্থ হয়ে পড়ে। একমাত্র ভাই গাজীপুরে পরিবারের সমস্ত দায়িত্বভার নিজেকে সামলাতে হয়। বর্তমানে আশুলিয়ায় লেনী ফ্যাশানে চাকুরীরত অবস্থায় টেইনার হিসেবে অভিজ্ঞতা হয়। ১২হাজার লোককে ফায়ার ট্রেনিং করা মহিলা বিষয়ক দপ্তর হতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে প্রশিক্ষণ ভাতার অর্থ দিয়ে সেলাই মেশিন ক্রয় করে অর্থ উপার্জন করা। বর্তমানে তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। এছাড়া হাঁস-মুরগী পালন ও বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়ান। অসহায় মেয়েদের সেলাই প্রশিক্ষণ দেন। বর্তমানে প্রতি মাসে ২০০০০/- টাকা উপার্জন করেন।
সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে যে নারী জয়িতা সালেহা জাহান, পিতা- গিয়াস উদ্দিন, মাতা- হালিমা খাতুন,স্বামীঃ নাজিমুল ইসলাম,শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ নবম শ্রেণী, ধল্লা, সিংগাইর, মানিকগঞ্জ। কন্যা সন্তান হিসেবে জন্ম হওয়ায় পরিবারে অবহেলার শিকার
১০(দশ) ভাইবোনের পরিবার আর্থিক অস্বচ্ছলতা সহ নানা প্রতিকুলতা কাটিয়ে বর্তমানে নির্যাতিতা নারীদের সংগঠিত করে তাদের সাহায্য করা। বিদেশগামী নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। নির্যাতিতা নারীদের সমস্যার সমাধান করা দর্জির কাজ জানা মেয়েকে সেলাই মেশিন প্রদান। বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদয়ে সেবাগুলি সম্পর্কে অবহিত ও সেবা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা। নিজের অর্থের দ্বারা গরীব নারীকে বিয়ের ব্যবস্থা করা। সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের সংগে সেবামূলক কাজে সক্রিয় সবুজ পরিবেশ রজায় রাখার জন্য স্কুল কজেল রাস্তায় বৃক্ষ রোপণ করি। বৃক্ষ রেপাণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা। করোনা মহামারীর সময়ে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ এবং ত্রাণ বিতরণে অংশগ্রহণ করছেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com