সুফিউর জেনেভা, আল্লামা অস্ট্রেলিয়ায়, ডেনমার্ক যাচ্ছেন শহীদুল করিম
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতা, দফায় দফায় সামারি (প্রস্তাবিত সার-সংক্ষেপ) পরিবর্তন, নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে বিরক্তি-ফাইল ফেরৎ হওয়াসহ নানা ঘটনা আর জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ ৩ টি মিশনে নতুন দূত নিয়োগ চূড়ান্ত করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন সাপেক্ষে রোববার রাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বহুল আলোচিত ওই নিয়োগের আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে। দায়িত্বশীল কুটনৈতিক সূত্র অবশ্য দাবি করেছে, একাধিক ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রাষ্ট্রদূত, হাই কমিশনার ও স্থায়ী প্রতিনিধি নিয়োগের অপশন থাকায় এমনটি হয়েছে। তাছাড়া এটা রুটিন বদলী হলেও গন্তব্য আকর্ষণীয় হওয়ায় ব্যাপক তদবির ছিল। সব কিছু বিবেচনা এবং সমন্বয় করেই মন্ত্রণালয়কে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি নিয়ে এগিয়ে যেতে হয়েছে। সেগুনবাগিচার ঘোষণা মতে, জেনেভাস্থ জাতিসংঘ মিশনে স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে চূড়ান্ত নিয়োগ পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় ‘এ’ গ্রেড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ৩ বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালনকারী কূটনীতিক সুফিউর রহমান। আর অস্ট্রেলিয়ায় পরবর্তী হাই কমিশনার হিসেবে পাঠানো হচ্ছে ডেনমার্কে বাংলাদেশের বর্তমান রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকীকে। চেইন বদলি হিসেবে ডেনমার্ক যাচ্ছেন রাষ্ট্রদূত হিসেবে ভুটানে এতোদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসা এ কে এম শহিদুল করিম। তিনি আল্লামা সিদ্দিকীর শূণ্যস্থান পূরণ করবেন। জেনেভাস্থ জাতিসংঘ অফিস এবং সুইজারল্যান্ড দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত বর্তমান স্থায়ী প্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমানকে হাই কমিশনার করে দিল্লিতে পাঠানোর কথা আগেই জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
জেনেভায় পরবর্তী স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সুফিউর ১৯৯৯-২০০২ সময়ে ওই মিশনে কাউন্সেলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাই কমিশনারের দায়িত্ব গ্রহণের আগে মিস্টার রহমান শ্রীলঙ্কায় হাই কমিশনার ও মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব সামলেছেন। ৩২ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি বহু ইনোভেটিভ আইডিয়া বাস্তবায়ন করেছেন। ঢাকায় মাল্টিলেটারাল ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স, সার্কসহ বিভিন্ন অনুবিভাগের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এক্সপার্ট খ্যাত সুফিউর রহমান দিল্লি ও ইসলামাবাদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত কাঠমা-ুস্থ সার্ক সচিবালয়ের পরিচালক ছিলেন নবম ব্যাচের পেশাদার ওই কূটনীতিক।
কোপেনহেগেন টু ক্যানবেরা: এদিকেঅস্ট্রেলিয়ায় পরবর্তী হাই কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়াবিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের দশম ব্যাচের কর্মকর্তা আল্লামা সিদ্দিকী ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ডেনমার্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কোপেনহেগেনে যাওয়ার আগে তুরস্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন তিনি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে মিস্টার সিদ্দিকী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও আফ্রিকা অনুবিভাগের মহাপরিচালকসহ নানা পদে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া টোকিও, কলকাতা, ইসলামাবাদ এবং লন্ডন মিশনে বিভিন্ন দায়িত্ব সামলেছেন।
ডেনমার্ক পাঠানো হচ্ছে শহীদুল করিমকে: ওদিকে ডেনমার্কে পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়া শহীদুল করিম বিসিএস অষ্টাদশ ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ভুটানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। রাষ্ট্রদূত হিসেবে এটি তার দ্বিতীয় পোস্টিং। থিম্পু যাওয়ার আগে ঢাকায় রাষ্ট্রাচার প্রধানের (চিফ অব প্রটোকল) গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন । তারও আগে সৌদি আরবের জেদ্দায় বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ছিলেন। হেড কোয়ার্টারে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও মিস্টার ইসলাম স্টকহোম, কায়রো ও লন্ডন মিশনে কাজ করেছেন।