বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৯ অপরাহ্ন

মুমিনের বিশেষ পাঁচটি গুণ

মুফতি আবুল কাসেম
  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০২২

আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে একজন কাফেরের চেয়ে একজন মুমিনের মর্যাদা অনেক বেশি। তাই তো তিনি পবিত্র কুরআনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, ‘একজন মুমিন কৃতদাস একজন (স্বাধীন) মুশরিকের চেয়ে উত্তম’ (সূরা বাকারা-২২১)। ঈমান-আমলের ওপর ভিত্তি করেই একজন মানুষ পরকালে কাক্সিক্ষত মর্যাদা লাভ করবে। যার ঈমান-আমল যত ভালো হবে, তার মর্যাদাও তত বুলন্দ হবে। মুমিনের যথাযথ গুণাবলি ও বৈশিষ্ট্য অর্জন না করে স্রেফ জন্মসূত্রে কিংবা কালিমা পড়ে ঈমান গ্রহণ করলেই প্রকৃত মুমিন হওয়া যায় না। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে প্রকৃত মুমিনের অনেক গুণাবলি উল্লেখ করেছেন। এখানে সূরা আনফালে বর্ণিত পাঁচটি গুণ উল্লেখ করা হলো-
‘প্রকৃত মুমিন তো তারাই, যাদের সামনে আল্লাহর নাম নেয়া হলে তাদের অন্তর কেঁপে ওঠে। আর যখন তাদের সামনে তাঁর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করা হয়, তখন তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা আপন প্রতিপালকের প্রতি ভরসা রাখে। যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে ও আমি তাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে। তারাই হলো প্রকৃত মুমিন! তাদের জন্য রয়েছে আপন প্রতিপালকের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক রুজি’ (সূরা আনফাল : ২-৪)।
১. আয়াত শ্রবণমাত্রই অন্তর কেঁপে ওঠা : অর্থাৎ তাদের অন্তর আল্লাহর মহত্ত্ব ও ভালোবাসায় ভরপুর, যার দাবি হলো তাঁর শ্রদ্ধা ও ভয়। আর রবকে ভয়কারী বান্দার জন্য রয়েছে জান্নাতের সুসংবাদ। ইরশাদ হয়েছে, ‘পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দ-ায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং প্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিজেকে নিভৃত রেখেছে তার ঠিকানা হবে জান্নাত’ (সূরা নাজিয়া : ৪০-৪১)।
২. ঈমানের উন্নতি : অর্থাৎ কুরআনের আয়াত শ্রবণমাত্রই তাদের ঈমান বৃদ্ধি পায়; কারণ তারা তা গভীর শ্রদ্ধা ও একাগ্রতার সাথে শ্রবণ করে। ফলে সেটি অন্তরে রেখাপাত করে।
৩. মহান রবের ওপর ভরসা ও পূর্ণ আস্থা অর্জন : অর্থাৎ যারা স্বীয় রব ব্যতীত কারো ওপর আস্থাশীল ও আশাবাদী নয়। তাকে পাওয়াই যাদের একমাত্র মুখ্য উদ্দেশ্য এবং যারা তাঁর কাছ থেকে সব কিছু প্রার্থনা করে মঞ্জুর করিয়ে নেয়।
৪. নামাজ কায়েম করা : ‘নামাজ কায়েম মানে ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতের প্রতি যতœ রেখে যথাসময়ে নামাজের পাবন্দী করা’ (তাফসিরুল জালালাইন-১৪৭)। ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। প্রিয়নবী সা: বলেন, ‘যে ব্যক্তি যথাযথভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবে এবং অবহেলা করে এর কোনোটি পরিত্যাগ করবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করেছেন। আর যে ব্যক্তি তা ঠিকমতো পালন করবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দেবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন’ (সুনানে আবু দাউদ-১৪২০)।
৫. আল্লাহর রাস্তায় দান করা : জাকাত-ফিতরা, নফল সদকা, পরিবার-পরিজনের জন্য ব্যয় প্রভৃতি সব কিছুই দানের অন্তর্ভুক্ত। তবে আল্লাহর নিকট তাঁর সৃষ্টিকুলের জন্য উপকারী ব্যয়ই সর্বাধিক পছন্দনীয়।
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া হামিদিয়া বটগ্রাম, সুয়াগাজী, সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com