আওয়ামী লীগ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন চাপে পড়ে বিরোধী দলকে সভা সমাবেশ করার সুযোগ দিচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তারা নিজেদেরকে সভ্য দেখাচ্ছে। তারা দেখাচ্ছে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। গতকাল আমাদের সমাবেশে বাধা দেয়নি, আজও শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারছি- এটাও একটা প্রতারণা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যে কোনো ধরনের নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতায় আসার নতুন করে পায়তারা শুরু করেছে।
গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জ্বালানি তেলের মূল্য অসহনীয় বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের লাগামহীন দাম, বিদ্যুৎতের বিপর্যয়, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, রাজনৈতিক নেতাদের নির্বিচারে গুলি ও খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি’তে এক পেশাজীবি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মানুষ সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের কী অবস্থা- এখন নতুন করে বলার দরকার নেই, রাস্তায় বাসের যাত্রীদের জিজ্ঞেস করুন- কতো টাকা বাসভাড়া বাড়িয়েছে! রিক্সাচালক, কৃষক, শিক্ষক সবাই কষ্টে আছে…। সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছে মধ্যবিত্ত, যারা সইতে পারছে না। দেশে সুনামি সৃষ্টি হবে, সেই সুনামিতে এ সরকার বিদায় নেবে।
তিনি বলেন, জনগণ জেগে উঠেছে, সরকারের পতন অনিবার্য। রাজপথ দখল করে জনগণের সুনামিতে ভয়াবহ এই সরকারের পতন ঘটবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। স্থিতিশীল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেশের জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে।
তিনি বলেন, এ সরকার ডাকাতি করছে, চুরি করছে, এদেশের সাথে পাকিস্তানের কোনো পার্থক্য নেই- এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার ব্যাংকগুলো লুটপাট করছে, কুইক রেন্টাল ৭৮ হাজার কোটি টাকার বিদুৎ উৎপাদন না করেই ক্যাপাসিটি চার্জ দিচ্ছে, ৭ বছরে জ্বালানি তেলের দাম আমাদের পকেট থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি নিয়ে গেছে, বিশ্ব বাজারে এখন দাম কমলেও তারা দাম বাড়িয়েছে।
এতোদিন মেট্রোরেল, ট্যানেল, ব্রিজ ইত্যাদির উন্নয়নের গল্প বললেও এখন উল্টো আইএমএফসহ অনেকের কাছে উল্টো লোন চাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কত সুন্দর করে বলছে ইভিএম মেশিন চায় তারা ৩০০ আসনে, কারণ তারা জানে ইভিএম ছাড়া জেতার উপায় নেই, ইভিএমে ভোট দিবেন ধানের শীষে, পড়বে গিয়ে নৌকায়।
দেশের বিলিয়ন বিলিয়ন টাকা পাচার হয়েছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, এতো টাকা পাচার হলেও কোনো বিচার নেই, অথচ দেশনেত্রীর নামে টাকা আত্মসাতের মিথ্যা মামলা দিকে তাকে বন্দী করে রেখেছে, অথচ সেই টাকা ব্যাংকে রয়েছে, উল্টো সেই টাকা বেড়ে গেছে।
গত ১৫ বছরে সরকার ৬০০-এর অধিক নেতাকর্মী গুম করেছে, হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমকে গুম করেছে। তাই সরকারের পতনের জন্য পেশাজীবীদের অতীতের মতো রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এ সরকারেরকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ বাতিল করতে হবে, নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক তাজমেরী এস ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক আবদাল আহমেদ, বিএফইউজের সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।