বর্তমানে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লিভার মানবদেহে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ভুল জীবনযাপনের কারণে বর্তমানে ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বেড়েছে।
এক্ষেত্রে লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমে। যদিও একটি সুস্থ লিভারে অল্প পরিমাণে চর্বি থাকে। তবে যখন এই চর্বি লিভারের ওজনের ৫-১০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছায়, তখন এটি একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
এ বিষয়ে ভারতীয় পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রার জানান, অত্যধিক চর্বি স্বাস্থ্যের জন্য কখনোই ভালো নয়। অতিরিক্ত চর্বির কারণেই ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ে।
ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রায়শই কোনো লক্ষণ থাকে না, যতক্ষণ না রোগটি লিভারের সিরোসিসে পরিণত হয়। এমনকি এই রোগ পুরোপুরি সারানোর কোনো ওষুধও নেই।
একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এই পুষ্টিবিদ ব্যাখ্যা করেছেন, ফ্যাটি লিভার নিরাময়ের সেরা উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও শরীরচর্চা।
আপনি যদি নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) তে ভোগেন তাহলে অবশ্যই ৬টি খাবার পাতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা। এসব খাবার লিভারে জমে থাকা চর্বি কাটাতে সাহায্য করে।
রসুন: রান্নার স্বাদ বৃদ্ধিতে কমবেশি সবাই রসুন ব্যবহার করেন। এই প্রাকৃতিক ভেষজ পেটের চর্বি পোড়াতে, ওজন কমাতে এমনকি ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকিও কমায়।
আখরোট: বাদামের স্বাস্থ্যগুণ অনেক। বিশেষ করে আখরোটে থাকা ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আখরোটে থাকা পুষ্টি উপাদান শারীরিক প্রদাহ, ইনসুলিন প্রতিরোধ, অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এমনকি এনএএফএলডি’র প্রকোপ কমায়। আখরোটে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উপস্থিতি ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের জন্য বিশেষ উপকারী।
ফ্ল্যাক্সসিড বা তিসি বীজ: তিসি বীজেও থাকাকে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি হেপাটিক লিপিড কমাতে সাহায্য করে ও এনএএফএলডি রোগীদের লিভারের চর্বি উন্নত করে। পুষ্টিবিদের মতে, ওমেগা ৩ প্রকৃতিতে প্রদাহ বিরোধী, যা লিভারকে যে কোনো প্রদাহ থেকে রক্ষা করে।
ওটস: পুষ্টিবিদের মতে, ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন- ওটস, এনএএফএলডি-সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি কমায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ওটসে থাকে উচ্চ মাত্রার ফাইবার। যা ফ্যাটি লিভারের রোগীদের ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
গার্ডেন ক্রেস বীজ: তিসির বীজের মতো গার্ডেন ক্রেস বীজেও ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এমনকি এতে আরও থাকে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই ফ্যাট হেপাটিক লিপিড কমাতে সাহায্য করে ও এনএএফএলডি রোগীদের লিভারের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রার মতে, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ফ্যাটি লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সবচেয়ে উপকারী। এটি লিভারের চর্বি ও এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে বিস্ময়কর কাজ করে।সূত্র: এনডিটিভি