বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো একটি ব্লাকহোল বা কৃষ্ণ গহ্বরের ফোটন রিং আবিষ্কার করেছেন। এ নিয়ে সায়েন্স এলার্টে ব্রায়ান কোবারলিন লিখেছেন, এর আগে ২০১৯ সালে একটি ব্লাকহোলের সরাসরি প্রথম ছবি পৃথিবীবাসীকে দিয়েছিল ইভেন্ট হরাইজন টেলিস্কোপ (ইএইচটি)। এটি শক্তিশালী একটি ছবি হলেও, এর মধ্যে বিস্তারিত তথ্য ছিল না। এটাকে দেখতে একটি আবছা কমলা ডোনাটের মতো দেখায়। আরও পরিষ্কার করে বলা যায়, ওই আবিষ্কার আমাদেরকে ডাটা দিয়েছিল, উদ্দেশ্য ছবি ছিল না। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, আমরা এ পর্যন্ত যা দেখতে পেয়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি ডাটা দেয়া হয়েছে। ইএইচটি যে ছবি পাঠিয়েছে তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুর মধ্যে একটি বিষয় হলো, ব্লাক হোল নিজে আভা দেয় না। সরাসরি কোনো আলো বিকিরণ করে না ব্লাক হোল। আমরা এখন পর্যন্ত বিশালাকার ব্লাকহোলের যেসব বিস্তারিত ছবি পেয়েছি, তাতে দেখা গেছে এর আভা এর প্লাজমার বিকিরণ বা তার চারপাশে অত্যধিক গ্যাসের টোরাসের জন্য তাকে উজ্জ্বল দেখায় না। পক্ষান্তরে এসব ছবিতে দেখা যায় রেডিও লাইট, যা ব্লাক দ্বারা ফোকাস করা হয়েছিল। এম ৮৭ ব্লাকহোল তার চারপাশে যে গ্যাসের আলো দ্বারা প্লাবিত।
এর মধ্যে আছে রেডিও লাইট। যখন বিশেষ কোনো আলোর একটি বিম বা গুচ্ছ ব্লাকহোলের খুব কাছ দিয়ে যায়, স্পেসটাইমের বিপর্যয়ের কারণে এর দিক কিছুটা পরিবর্তন হয়। আমরা নক্ষত্র এবং ছায়াপথ থেকে অসংখ্যবার এভাবে আলোকে বি”্যুত হতে দেখেছি। কিন্তু ব্লাকহোলসের কাছে আলো তার গতির দিক উল্লেখযোগ পরিমাণে পরিবর্তন করে। কখনো কখনো তা সমকোণে বেঁকে গিয়ে লুপ তৈরি করে। আবার কোনো আলো গতির দিক পরিবর্তন করতে করতে যেখান থেকে উৎপত্তি সেখানেই ফিরে যায়। ব্লাকহোলের যত কাছের হয় এই আলোর চলার পথ, তত বেশি হয় তার গতির পরিবর্তন আরও আরও বেশি হয়। ব্লাকহোলের কাছ দিয়ে আলো সব দিক দিয়ে অতিক্রম করে। কিন্তু আমাদের দৃষ্টিতে আমরা শুধু ওই আলো দেখতে পাই, যা আমাদের দিকে ছুটে আসে। যে আলোর বিম ব্লাকহোলের চারপাশে লুপ তৈরি করে এবং আমাদের দিকে ছুটে আসে, তা আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়া উচিত। ব্লাকহোল বাস্তবেই একটি শক্তিশালী লেন্স হিসেবে কাজ করতে পারে। আলো তার একেবারে কাছ দিয়ে অতিক্রম করতে পারে, সরাসরি আমাদের দিকে ফোকাস করতে পারে। ফলে আমরা যেটা দেখি তা হলো আলোর হালকা একটি বৃত্ত, যাকে ফোটন রিং বলা যেতে পারে।