ধানসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজি, কৃষিজাত ফসল উৎপাদন ও ফলন বাড়াতে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা ব্যাপক। অনেক সময় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার বা কীটনাশক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে, সঙ্গে বাড়তি দাম তো আছেই! এমন অবস্থায় কৃষকদের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন চাঁদপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা আঃ কাদের পাটওয়ারী। উপজেলার এ বাসিন্দা তার নিজ এলাকার পাটওয়ারী বাড়ীতে গত সাত মাস আগে মায়ের দোয়া নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন জৈব সার তৈরির এ কারখানা। গরুর গোবর ও কেঁচোর মলমূত্র, বিভিন্ন লতাপাতা খড় মিশিয়ে এ জৈব সার তৈরি করেছেন তিনি। মায়ের দোয়া ফার্মের এ সার স্থানীয় কৃষকদের দৈনন্দিন কষ্ট নিরসণে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী অন্যান্য উদ্যোক্তারাও। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঃ কাদের পাটওয়ারীর জৈব সার তৈরি ফার্মটি ধানুয়া পাটওয়ারী বাড়ীতে তার জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ফার্মটিতে তৈরি হয়েছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান, যেখানে কাজ করেন ৫ থেকে ৬ জন। সার তৈরির এমন উদ্যোগে আশার সঞ্চার হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে। উপজেলায় প্রথম কোন জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। তারা মনে করেন, প্রয়োজনের সময় সার নিয়ে যে সংকট দেখা যেত, সেটা আর থাকবে না। এখন কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। চাহিদা অনুসারে পরিধি বাড়ালে আরও অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। মায়ের দোয়া ফার্মস’র মালিক আঃ কাদির পাটওয়ারী এ প্রতিনিধিকে বলেন, জৈব সার ব্যবহার উপযোগী কিনা পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পুরোদমে সার উৎপাদন করা হবে। তিনি জানান, নিজেদের জমিতে এবং বাগানে ফার্মের উৎপাদিত সার প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। আঃ কাদের আরো বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় কৃষকরা সার নিয়ে প্রয়োগ করেছেন। আশানুরুপ ফলাফল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ফরিদগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে এসে সারের নমুনা দেখেছেন এবং সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। যে কোনো সময়ের মধ্যে তাদের কাছ থেকে ফলাফল পাব। সরকার সুদৃষ্টি দিলে প্রকল্পটি কৃষক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও জানান তিনি। ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্ত মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, কৃষক পর্যায়ে জৈবসারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মায়ের দোয়া ফার্মস থেকে সার নিয়ে অনেক কৃষক উপকৃত হতে পারে। তিনি বলেন বিভিন্ন কৃষি কাজের জন্য রাসায়নিক সার থেকে জৈব সারের উপকারিতা ও গুনাগুন ভালো এবং এ সার উৎপাদন করতে খরচ কম । সরকারি অনুমোদর পেলে সার নিয়ে প্রতিবছর যে সংকট দেখা দেয় তা এ জৈব সারের কারনে নিরসণ হবে বলে তিনি মনে করেন।