সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্যসূচক কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পারিমাণ। পাশাপাশি উভয় বাজারেই লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে। এর মাধ্যমে চলতি সপ্তাহে লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
এদিন শুরুতেই শেয়ারবাজারে লেনদেনে ধীরগতি দেখা যায়। গত কয়েকদিন যেখানে প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইতে ৩০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়, সেখানে আজ প্রথম আধাঘণ্টার লেনদেন হয় ২০০ কোটি টাকার কিছু বেশি।
অবশ্য লেনদেনের শুরুর দিকে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের ২০ মিনিটের মাথায় সূচকটি বাড়ে ২৬ পয়েন্ট। তবে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা গড়ানোর আগেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ৩৩ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ে। এতে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয় সূচক। এক পর্যায়ে দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
অবশ্য সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। শেষ ঘণ্টার লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। ফলে সূচক ঋণাত্মক থেকেই দিনের লেনদেন শেষ হয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৭টির। আর ১৭৩টির দাম অপরবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৫১০ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪২০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩০০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৮১০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫১০ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৫ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ১১৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৬৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ইস্টার্ন হাউজিং, ইউনিক হোটেল, শাহজিবাজার পাওয়ার, কপারটেক, শাইনপুকুর সিরামিক এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৬টির এবং ৯২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।