সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, যে ত্রিশক্তিতে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি-স্থিতি ও লয়ের চক্রে আবর্তিত হচ্ছে, সেই শক্তি কুমারীতে বীজ আকারে আছে। এই বিশ্বাসেই সনাতন ধর্মের মানুষ কুমারীকে দেবী দুর্গা হিসেবে আরাধনা করেন অষ্টমীতে। বলা হয়, মানববন্দনা, নারীর সম্মান ও মর্যাদার প্রতিষ্ঠা এবং ঈশ্বরের আরাধনাই কুমারী পূজার শিক্ষা। সোমবার ভোর থেকে ঢাকার গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠেও কুমারী পূজার আয়োজন শুরু হয়। আয়োজন হয় সারা দেশের অন্যান্য রামকৃষ্ণ মঠেও। গত দুই বছরে কোভিড মহামারির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়নি। সোমবার সকালে বৃষ্টির কারণে ভিড় কিছুটা কম থাকলেও কুমারী দুর্গা বন্দনায় ভক্ত দর্শনার্থীর ভিড় বাড়তে থাকে।
গোপীবাগে রামকৃষ্ণ মিশন মঠে এবার কুমারী পূজা পরিচালনা করেন ব্রহ্মচারী দুর্গাচৈতন্য, তন্ত্রধারী হিসেবে ছিলেন স্বামী স্তবনানন্দ। বেলা ১১টায় শুরু হয় পূজার আয়োজন। এ মিশনে এবার কুমারী দেবীর আসনে ছিল ছয় বছর বয়সী দেবদৃতা চক্রবর্তী, তার শাস্ত্রীয় নাম হয়েছে ‘উমা’।
প্রিয়াংকা চক্রবর্তী ও প্রণয় চক্রবর্তীর মেয়ে দেবদৃতা পড়ছে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের প্রথম শ্রেণিতে। পূজার আগে কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন লাল শাড়ি, গহনা, পায়ে আলতা, ফুলের মালা এবং অলঙ্কারে সাজানো হয় দেবীরূপে। পদ্মফুল হাতে দেবী পূজার আসনে বসার পর মন্ত্রোচ্চারণ আর স্তুতিতে তার বন্দনা করেন পূজারিরা। সোমবার সকালে কুমারী পূজা শুরুর আগে মহাঅষ্টমীর বিহিত পূজা হয়, বিকাল পৌনে ৫টায় হয় সন্ধিপূজা। মঙ্গলবার মহানবমীর সকালেও বিহিত পূজা হবে। বুধবার সকালে দর্পণ বিসর্জনের পর প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।