সমাজের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রবিবার উন্নয়ন সংঘের উদ্যোগ জামালপুর রেলস্টেশনে কর্মরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্টেশন মাস্টারসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গুলজার হোসেন। জামালপুর রেলস্টেশনের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন স্টেশন মাস্টার আসাদুজ্জামান। এতে আলোচনায় অংশ নেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, সহকারী পরিচালক কর্মসূচি মুর্শেদ ইকবাল, রেলওয়ে শ্রমিক লীগ জামালপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক উজ্জল মাহমুদ, জামালপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সিরাজী, হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি মোঃ আরিফ প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা আরজু আহম্মেদ।সভায় জিআরপি সদস্য, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য, আনসার বাহিনীর সদস্য, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্টেশনে কর্মরত কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অংশ নেন। উল্লেখ দেশের অন্যতম বৃহৎ স্টিল কোম্পানী বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় জামালপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গত এক বছর যাবৎ উন্নয়ন সংঘ বহুমাত্রিক কার্যক্রম নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে। হিজড়াদের আচরণগত পরিবর্তন, ক্ষমতায়ন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। সবাইকে একসাথে নিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে পথচলার বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জামালপুরে উন্নয়ন সংঘ প্রাথমিকভাবে ২৮০জন হিজড়া সদস্যদের নিয়ে কাজ শুরু করছে। পর্যায়ক্রমে জামালপুরে সকল হিজড়া সদস্যদের এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও সহকারী পরিচালক কর্মসূচি বলেন আমরা সরকারের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হিজড়াদের সমাজে পুনর্বাসন ও মর্যাদা দেয়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। আমরা মানবিক, সামাজিক, নেতৃত্ব বিকাশ, আচরণগত পরিবর্তন করার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। ইতিমধ্যে শতাধীক হিজড়া সদস্যদের প্রতিজনকে বিনাসুদে ২৫হাজার টাকা ঋণ দেয়া হয়েছে। তারা আয়মূলক বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়ে লাভবান হচ্ছে। তারা নিয়মিত ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করছে। সভায় উপস্থিত জিআরপি থানার ওসি, স্টেশন মাস্টার ও অন্যান্যরা বলেন বিএসআরএম এবং উন্নয়ন সংঘ এমন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হাতে নিয়ে মহত্তের পরিচয় দিয়েছে। সবাই এ কাজে সর্বাত্মক সহায়তা করার আশ্বাস দেন।