রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করে এর কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের কোনো বিকল্প নেই। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার এক বাণীতে তিনি একথা বলেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠানটির সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, দেশব্যাপী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ পালন- অগ্নিনির্বাপণ, অগ্নিপ্রতিরোধ, উদ্ধারকাজ পরিচালনাসহ অন্যান্য সেবা কার্যক্রম সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিতকরণ এবং সচেতনতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
আবদুল হামিদ বলেন, অগ্নিকান্ড এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ যে কোন দুর্যোগে আহতদের উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা প্রদান, মুমূর্ষু রোগী পরিবহণ ও জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা সকল দুর্যোগে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সবসময় জনগণের পাশে দাঁড়ান। সম্প্রতি চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ অগ্নিকান্ড মোকাবিলার সময় প্রতিষ্ঠানটির ১৩জন ‘অগ্নিবীর’ নির্মম মৃত্যুর শিকার হন। বিভিন্ন সময়ে অগ্নিনির্বাপণ, দুর্যোগ মোকাবিলা ও উদ্ধারকাজ পরিচালনাকালে নিহত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বীর কর্মীদের প্রতি তিনি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি বলেন, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বজ্রপাত ও ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রবণতা বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বেশি। এছাড়া শিল্পায়ন ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে দেশে মানবসৃষ্ট দুর্ঘটনাও ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন দুর্যোগে উদ্ধারকাজ পরিচালনায় দেখা দিচ্ছে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে আধুনিক সরঞ্জামে সজ্জিত করা এবং এর কর্মীদের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদানের কোনো বিকল্প নেই। এর পাশাপাশি শহরাঞ্চলে অগ্নিনির্বাপণের ক্ষেত্রে জলাধার সংরক্ষণসহ পানির সরবরাহ নিশ্চিত করাও জরুরি। রাষ্ট্রপতি বলেন, এছাড়া জনগণকে অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রচলিত বিধি-বিধান মেনে চলতে হবে। তাহলেই বিভিন্ন মানবসৃষ্ট দুর্ঘটনার হার এবং জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
তিনি আশা করেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং জনগণের সাথে এ বিভাগের কর্মীদের সম্পৃক্ততা ও পারস্পরিক যোগাযোগ আরো বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। তিনি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২২ এর সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।