বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪২ অপরাহ্ন

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন: অপর্যাপ্ত ঘুম নারীদের গুরুতর স্বাস্থ্যহানির কারণ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২২

শরীর সুস্থ রাখতে পর্যাপ্ত ঘুমের বিকল্প নেই। ঘুমের পরিমাণ ও গুণমান উভয়েরই সমান তাৎপর্য আছে। ঘুম একজনের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অপরিহার্য। আর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে ও নিয়মিত অপর্যাপ্ত ঘুমের কারণে নারী-পুরুষ উভয়ই স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনিদ্রা কার্ডিওভাসকুলার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, ডায়াবেটিস মেলিটাস, কম অনাক্রম্যতা, ক্যানসার, বিষণ্নতা ও উদ্বেগজনিত ব্যাধিসহ নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো প্রমাণ করেছে যে, ঘুমের ব্যাঘাত ডিম্বস্ফোটন না হওয়া, অনিয়মিত মাসিকসহ নারীদের উর্বরতা কমে যাওয়া এমনকি বন্ধ্যাত্বের সঙ্গে জড়িত। গবেকষকদের মতে, বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার জন্য দৈনিক পর্যাপ্ত ঘুম অপরিহার্য। কারণ ঘুম ও প্রজনন ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। মেলাটোনিন, অন্ধকারের প্রতিক্রিয়ায় মস্তিষ্কের দ্বারা নিঃসৃত একটি মূল হরমোন ঘুম প্ররোচিত করে ও এটি শরীরের সার্কাডিয়ান ছন্দ বজায় রাখে। একইভাবে মস্তিষ্ক প্রজনন হরমোনগুলোকে একটি ছন্দময় প্যাটার্নে সংশ্লেষিত করে যা দিনে নয় বরং রাতে। তাই ঘুম বা সার্কাডিয়ান ছন্দে কোনো ব্যাঘাত ঘটলে এই হরমোনগুলোর স্বাভাবিক উৎপাদন ও কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে।
এমনকি একটানা কয়েক রাত পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হরমোন উৎপাদন ও চাপ সহনশীলতা ব্যাহত করতে পারে। উর্বরতার উপর অনিদ্রার কী কী প্রভাব পড়ে জেনে নিন-
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: ঘুমের অভাবে মেজাজ ও উৎপাদনশীলতা বেশি প্রভাবিত হয়। ফলে নির্দিষ্ট প্রজনন হরমোনের উৎপাদন কমে যায়। হরমোন ডিম্বস্ফোটনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের শরীর সক্রিয়ভাবে তখনই কাজ করে যখন আমরা ঘুমিয়ে থাকি।
প্রতি রাতে আমাদের এন্ডোক্রাইন সিস্টেম (যা আমাদের হরমোনগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে), ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন, লুটিনাইজিং হরমোন (এলএইচ) ও ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ) সহ গর্ভধারণের সঙ্গে জড়িত কিছু মূল হরমোন তৈরি করে। অনিদ্রা এসব হরমোনের উৎপাদন ও কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। ফলে প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণের প্রচেষ্টা কঠিন হয়ে পড়ে। হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কামশক্তি হ্রাস, মেজাজের চরম পরিবর্তন ও ক্লান্তির কারণও হতে পারে।
ডিমের গুণমান কমায়: রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ও অধিক গ্যাজেটের ব্যবহারের ফলে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। ইলেক্টনিক্স ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো মেলাটোনিনকে দমন করে (এটি ঘুমকে প্ররোচিত করে ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাবের মাধ্যমে ডিম্বস্ফোটনের সময় ডিমগুলোকে রক্ষা করে)। অপর্যাপ্ত মেলাটোনিন উৎপাদনের ফলে ডিমের মান খারাপ হয় ও উর্বরতা নষ্ট হয়।
সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটুকু ঘুম প্রয়োজন? গবেষকদের মতে, দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টা একটানা গভীর ঘুম নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য জরুরি। তবে ৯ ঘণ্টার বেশি নয়। অতিরিক্ত ঘুমও প্রজনন ক্ষমতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সাম্প্রতিক ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন সমীক্ষা অনুসারে, আইভিএফ’এর মাধ্যমে সন্তান ধারণে চেষ্টা করা নারীরা প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমালে গর্ভধারণে ২৫ শতাংশ বেশি সফল হন। যারা ৭ ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা ১৫ শতাংশ কমে। তাই প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম সফল ইমপ্লান্টেশন ও একটি নিরাপদ গর্ভাবস্থা বজায় রাখতে সাহায্য করে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com