কুড়িগ্রামের রৌমারীতে এক্সটেন্ডড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিসিপি-ফ্লাড) প্রকল্পের মাধ্যমে পাল্টে যাচ্ছে রৌমারী উপজেলার চরাঞ্চলের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র পরিবার গুলো। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) এর অর্থায়নে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র প্রকল্পটি বাস্ত্মবায়ন করছে। সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র (পিএমইউকে) পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) এর অর্থায়নে এক্সটেন্ডড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিসিপি-ফ্লাড) প্রকল্পটি নভেম্বর ২০২০ হতে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে (০৩নং বন্দবেড়, ০২নং শৌলমারী, ০৪ নং রৌমারী) এ বিভিন্ন ধরনের এডাপ্টেশন মূলক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গুলো হলো (১) বসতভিটা উঁচুকরন (২) বন্যামুক্ত নলকূপ স্থাপন (৩) বন্যামুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটারী ল্যাট্রিন স্থাপন (৪) মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন ও (৫) বন্যাপ্রবণ এলাকায় উচ্চ মূল্যের কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ। পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের রৌমারী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. হারুনর অর রশিদ জানান, আমরা সকলেই জানি যে, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কুড়িগ্রাম জেলাটি একটি বন্যা ঝুঁকিপূর্ণ জেলা। এ জেলার মধ্যে রৌমারী উপজেলাটি বন্যার সময় সব চেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যার সময় অত্র এলাকার জনগন অতি মানবেতর জীবন যাপন করে। রৌমারৗ উপজেলার হত-দরিদ্র জনগনের জীবনযাত্রার মানউন্নয়নের লক্ষে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের এক্সটেন্ডড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিসিপি-ফ্লাড)। সংস্থাটির মাধ্যমে বন্যায় কবলিত জনগোষ্ঠির বসতভিটাগুলো গত ১০ বছরের মাত্রাতিরিক্ত বন্যার (পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী) লেভেল থেকে ১.৫ ফিট থেকে ২ ফিট উচুঁ করে দেয়া হয়ে থাকে। যা বন্যাপ্রবণ এলাকাটির জন্য খুবই ফলপ্রসূ। তিনি আরও বলেন, এ পর্যন্ত তিনটি ইউনিয়নে ৭১১ টি বসতভিটা উঁচূকরণ, ২১০ টি বন্যামুক্ত সাস্থ্যসম্মত স্যানিটারি ল্যাট্রিন, ৪৫ টি বন্যামূক্ত নলকূপ স্থাপন, ৬৭০ টি ছাগলের মাঁচা ও ১৪১৬ জনকে কৃষি প্রযুক্তি, ২১৬৬ জনকে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষন প্রদান করেছে। এনজিওটির কার্যক্রম স্বনামধন্য হওয়ায় বারবার দাতা সংস্থা থেকে বহুমাত্রিক সুনাম অর্জন করেছে। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতিকারী উদ্ভট ও বিভ্রান্ত্মিমূলক গুজব ছড়িয়ে সংস্থাটির ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। যা প্রকল্পটির উন্নয়নমূলক কার্যক্রমগুলো সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের পরিপন্থী। বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর গ্রামের ছমিরন বেওয়া বলেন, আগে বন্যার সময় ১০ থেকে ১২ দিন নৌকা ও কলার ভেলায় থাকতে হতো। এখন পদক্ষেপ এনজিও বসতভিটা উচু করে দেওয়ায় আমাদের আর বন্যার সময় কষ্ট করতে হয় না।একই কথা বলেন রৌমারী সদর ইউনিয়নের শুতিরপাড় গ্রামের মুকলিমা খাতুন, ছমিনা খাতুন, শৌলমারী ইউনিয়নের টালুয়ারচর গ্রামের সাজেদা খাতুন, সাহেরা খাতুন, সূর্য খাতুন ও আশা মনি। বন্দবেড় ইউনিয়নের কুটিরচর গ্রামের মমিনা বেগম বলেন পদক্ষেপ থেকে ছাগলের মাচা দেওয়ায় সেখানে উন্নতজাতের ছাগল পালন করে আমি এখন স্বাবলম্বি হয়েছি। গত ঈদের সময় ২৭ হাজার টাকার ছাগল বিক্রি করেছি। এখনও আমার ঘরে ২৩ টি ছাগল আছে। আগামিতে ঈদে ৭০ হাজার টাকার ছাগল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। রৌমারী উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ইমান আলী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র (পিএমইউকে) পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) এর অর্থায়নে এক্সটেন্ডড কমিউনিটি ক্লাইমেট চেঞ্জ প্রজেক্ট-ফ্লাড (ইসিসিসিপি-ফ্লাড) প্রকল্পটি মাধ্যমে উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে যে উন্নয়ন হয়েছে তার গুনগত মান ভাল। প্রকল্পিটি ৬টি ইউনিয়নের সম্প্রসারন করা হলে এলাকার জনগণ আর ও উপকৃত হবে।