নিরাপত্তার শংকায় বৈঠক শেষ না করেই প্রস্থান
নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গিয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গতকাল বুধবার সকাল ৯টার কিছু পরে রাজধানীর শাহীনবাগে তিনি সুমনের বাসায় যান। প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি সেখানে অবস্থান করেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের বাংলাদেশ ডেস্কের অফিসার লিকা জনসন।
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র জানান, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় বৈঠক শেষ না করে সেখান থেকে চলে যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। বিষয়টি তাঁরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানিয়েছেন। সাজেদুলের বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত আসছেন এমন খবরে সেখানে যান ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা–কর্মীরা এবং ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে কিছু মানুষ জড়ো হন। তাঁরা বাসার সামনের রাস্তায় অবস্থান নেন। সাজেদুলের বাসা থেকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস গাড়িতে ওঠার সময় হট্টগোল হয়।
সাজেদুলের বোন সানজিদা ইসলাম গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের নিয়ে গঠিত সংগঠন ‘মায়ের ডাক’–এর সমন্বয়কারী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস আসবেন জেনে তেজগাঁও থানার ওসি অপূর্ব হাসানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দুই দিন (গতকাল ও আজ) আমাদের বাসায় আসেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমাদের বাসায় প্রবেশের ৪০ মিনিট আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও মায়ের কান্না সংগঠনের লোকজন রাস্তার ওপর অবস্থান নেন। বাসা থেকে বেরিয়ে যখন তিনি গাড়িতে উঠছিলেন, তখন তাঁরা কথা বলার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে হট্টগোলও হয়। পরে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থানা পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তিনি গাড়িতে উঠে চলে যান।’
রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে—জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ‘তিনি নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচয়ে তুলে নেওয়ার ঘটনাগুলোর তদন্ত হচ্ছে। তাই আমরা তাঁকে ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছি। আমরা এখন কী চাই, সেটাও তিনি জানতে চেয়েছেন।’ মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস কী বলেছেন জানতে চাইলে সানজিদা ইসলাম বলেন, নিখোঁজের ঘটনাগুলো কীভাবে তদন্ত করা যায়, সেটা নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। পাশাপাশি মানবাধিকার নিশ্চিত করতেও কাজ করছেন।
বিএনপির ঢাকা মহানগরের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির (বর্তমানে ঢাকা উত্তরের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সাজেদুল ইসলাম। ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে তিনি নিখোঁজ। ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা দাবি করে আসছেন, সাজেদুলকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে গেছে।