৯ ডিসেম্বর অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) সংঘর্ষের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিককে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে বলা হলে তিনি বলেন, “আমরা উত্তেজনা কমানোর জন্য এবং সেই এলাকায় উত্তেজনা যাতে না বাড়ে তা নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানাই।”
তাওয়াংয়ে ভারত-চীন সংঘর্ষে যুক্তরাষ্ট্রর প্রতিক্রিয়া: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অরুণাচলে ভারতীয় এবং চীনা সৈন্যদের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের বিষয়ে মন্তব্য করেছে এবং বলেছে যে উত্তেজনা দ্রুত স্তিমিত হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য করে আনন্দিত। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জিন-পিয়ের বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আমরা ভারত ও চীনকে বিতর্কিত সীমানা নিয়ে আলোচনার জন্য বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক চ্যানেলগুলি ব্যবহার করতে উৎসাহিত করি”। গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে তার ভাষণে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছেন যে চীনা সৈন্যরা ৯ ডিসেম্বর অরুণাচলের তাওয়াং সেক্টরের ইয়াংতসে এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতীয় সেনারা তাদের দৃঢ় প্রতিক্রিয়া দ্বারা চীনা সেনাদের পিছু হটতে বাধ্য করেছে।তিনি আরও বলেন, ”সংঘর্ষে কোনো ভারতীয় সেনা নিহত বা গুরুতর আহত হয়নি। আমি হাউসকে আশ্বস্ত করছি যে আমাদের সেনাবাহিনী দেশের আঞ্চলিক অখ-তা রক্ষা করতে সক্ষম।আমাদের সেনাবাহিনী যে কোনো অপরাধ মোকাবিলায় প্রস্তুত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি হাউস আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতাকে সমর্থন করবে।”এদিকে, বেইজিংয়ে একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন যে উভয় পক্ষ কূটনৈতিক ও সামরিক চ্যানেলের মাধ্যমে সীমান্ত-সংক্রান্ত বিষয়ে মসৃণ যোগাযোগ বজায় রেখেছে।ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় ২০০ চীনা সৈন্য এলএসি লঙ্ঘন করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভারতীয় সৈন্যরা দৃঢ়ভাবে পিএলএ-র প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল।সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, “এই মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে উভয় পক্ষের কয়েকজন কর্মী সামান্য আহত হয়েছে।তবে উভয় পক্ষই তাৎক্ষণিকভাবে এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আজ ভারতীয় সৈন্যরা নিয়মিত পূর্ব-নির্ধারিত টহল বিন্যাস অনুসরণ করছে, কিন্তু চীনা সেনারা টহল এলাকা নিয়ে তর্ক শুরু করেছিল, যা ভারতীয় সৈন্যদের আপত্তির মুখে পড়ে”। ওই কর্মকর্তা আরও জানান যে চীনা সৈন্যরা তাদের ভারতীয় প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি আহত হয়েছে। ২০২০ সালের জুনে গালওয়ান উপত্যকায় ভয়াবহ মুখোমুখি সংঘর্ষের পর থেকে ৯ ডিসেম্বরের সংঘর্ষটি ভারতীয় এবং চীনা সেনাবাহিনীর মধ্যে দ্বিতীয় বড় সংঘর্ষ যা কয়েক দশকের মধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সামরিক সংঘর্ষকে চিহ্নিত করেছে।
সূত্র : firstpost.com