প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার সংসদে বলেছেন, ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার মূল পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করার জন্য তদন্ত চলছে। তিনি বলেন, অপরাধীদের শাস্তি দেয়া হবে। বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে অপরাধীদের চিহ্নিত এবং গ্রেফতার করেছি। এর পেছনে আর কে ছিল বা কে এই আক্রমণ চালানোর জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনো ঘাটতি নেই এবং ঘাটতি হবেও না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধীদের অবশ্যই শাস্তি দেয়া হবে। আমি অন্তত এটা বলতে পারি যে, আমরা এটি নিশ্চিত করব।’ তিনি সংসদ সদস্যদের অনুরোধ করেন যাতে কোনো সংসদ সদস্য এ জাতীয় অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা না করে। তিনি বলেন, ‘যারা অপরাধ করে এবং যারা অপরাধীদের রক্ষা করে তারাও সমান দোষী।’
কেবল চুরির উদ্দেশ্যেই নয়, হামলার পেছনে আরো কী কারণ থাকতে পারে তাও খতিয়ে দেখার জন্য সঠিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, দ্রুত হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় চিকিৎসা করার জন্য সরকার তার সব ব্যবস্থা করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি একজন অপরাধীকে অপরাধী হিসেবেই দেখি। তিনি কোন দলের সাথে বা তিনি কে তা আমি বিবেচনা করি না। তারা (অপরাধীরা) আমার দলের অন্তর্ভুক্ত হলেও আমি রেহাই দেব না।’
সকালে ঘুম ভাঙার পর জায়নামাজ খুঁজি : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সকালে উঠে আমি জায়নামাজ খুঁজি। আগে নামাজ পড়ি। নামাজ শেষে কোরআন তেলাওয়াত করি। তারপর এক কাপ চা নিজে বানাই। সকালের চা-টা আমি নিজে বানিয়ে খাই। চা বানাই, কফি বানাই যা বানাই নিজে বানিয়ে খাই। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোট বোন বাসায় থাকলে দু’জনের যে আগে ওঠে সে চা বানায়। মেয়ে পুতুল আছে। সেও আগে উঠলে সে বানায়।
আমরা নিজেরা করে খাই। তার আগে বিছানা থেকে ওঠার পর নিজের বিছানাটা নিজে গুছিয়ে রাখি। এরপর বই-টই যা পড়ার পড়ি। আর ইদানিং করোনা ভাইরাসের পরে সকালে একটু হাঁটতে বেরুই। তবে আরেকটা কাজ করি এখন। গণভবনে একটি লেক রয়েছে। হাঁটার পরে লেকের পারে যখন বসি, তখন ছিপ নিয়ে বসি। মাছ ধরি।
শেখ হাসিনা বলেন, আব্বার নির্দেশ ছিল একজন রিকশাওয়ালাকে আপনি বলে সম্বোধন করতে হবে। ড্রাইভারকে ড্রাইভার সাহেব বলতে হবে। কাজের যারা লোকজন তাদের কখনও চাকর-বাকর বলা যাবে না। হুকুম দেয়া যাবে না। তাদের কাছে কিছু চাইতে হলে সম্মান করে ভদ্রভাবে চাইতে হবে। যে কারণে আমি প্রধানমন্ত্রী হতে পারি, যতদূর পারি নিজে করে খাই। এখনও আমার বাড়িতে কাজের মেয়ে যারা আছে কারো কাছে যদি এক গ্লাস পানিও কখনও চাইতে হয় তাদের জিজ্ঞাসা করি আমাদের একটু এটা দিতে পারবে? এই শিক্ষাটা আমরা নিয়ে আসছি। এই শিক্ষা বাবা আমাদের দিয়ে গেছেন। এখনো মেনে চলি।
তিনি বলেন, আমরা সবাইকে সমান সমাদর করি। বরং যাদের কিছু নেই তাদের দিকে একটু বেশি নজর দিই।